জরিমানা গুণতে হবে ডিএনসিসিকে



সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা
ডিএনসিসির লোগো, ছবি: সংগৃহীত

ডিএনসিসির লোগো, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বার বার চিঠি পেয়েও সদুত্তর না দেওয়ায় এবার বড় ধরনের জরিমানার শিকার হতে যাচ্ছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)।

পরিবেশ ছাড়পত্র না নিয়ে ডিএনসিসি আমিনবাজার পৌর বর্জ্য ডাম্পিং স্টেশন করেছে। ওই এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী ও অন্যান্যরা। পরিদর্শন শেষে তাদের সুপারিশ ছিল, ওই এলাকায় অপরিকল্পিতভাবে পৌর বর্জ্য ডাম্পিং করা হচ্ছে। ফলে ভূ-পৃষ্ঠের এবং ভূ-গর্ভস্থ পানি দূষণ, নদী ও জলাশয় দূষণ, কৃষি জমি বিনষ্ট এবং পরিবেশ ও প্রতিবেশ ব্যবস্থার ক্ষতি হচ্ছে। পরিবেশের ওপর বর্জ্য ডাম্পিংয়ের ক্ষতিকর প্রভাব যাতে না পড়ে, সেজন্য ডিএনসিসি কী কী কার্যকরী পদক্ষেপ নিয়েছে, তা চিঠি দিয়ে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে জানাতে বলা হয়েছিল। ওই চিঠি দেওয়া হয়েছিল চলতি বছরের ২৪ মে। এরপর ২৬ জুন আরেকটি চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু ডিএনসিসির পক্ষ থেকে সঠিক জবাব না দেওয়ায় ক্ষুদ্ধ হয়েছেন কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী।

শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

বৈঠকে কমিটির সভাপতি পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক এ কে এম রফিক আহাম্মদকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘আর কত দিন সময় দেবেন? একটা সরকারি প্রতিষ্ঠান যদি এমন হয়, তাহলে সাধারণ মানুষ কি করবে? আপনি যত দ্রুত সম্ভব নোটিশ জারি করে সর্বোচ্চ জরিমানা করেন। মানুষ যেন বুঝতে পারে, পরিবেশ ছাড়পত্র ব্যবহার না করলে শাস্তি হয়।’

এ সময় পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক সিটি কর্পোরেশনের পক্ষে সাফাই গেয়ে বলেন, ‘সিটির এত বর্জ্য তারা কোথায় ফেলবে? কিছুটা সময় দেওয়া হোক। এর জবাবে সাবের হোসেন বলেন, ‘আপনার আইনে কী বলে? এ ধরনের অপরাধ করলে কী করতে পারবেন?’

জবাবে মহাপরিচালক বলেন, ‘জরিমানা করা যেতে পারে, উচ্ছেদও করা যেতে পারে।’

পরে সর্বোচ্চ জরিমানা করার পরামর্শ দিয়ে আগামী বৈঠকে এর অগ্রগতি দেখতে চান কমিটির সভাপতি।

কমিটি আমিন বাজারের ডাম্পিং স্টেশনের সমস্যা নিরসনে জরুরি ভিত্তিতে কার্যকর ব্যবস্থা হিসেবে বন্ধ করার নোটিশ দেওয়াসহ সর্বোচ্চ জরিমানা আরোপের সুপারিশ করে।

এছাড়া গাড়ি আমদানি করার ক্ষেত্রে পরিবেশ দূষণের ওপর নির্ভর করে ট্যাক্স নির্ধারণ করার জন্য আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসের মধ্যে একটা প্রস্তাবনা তৈরি করে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর জন্য মন্ত্রণালয়কে উদ্যোগ নেওয়ার সুপারিশ করা হয়।

এদিকে টেকসই জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক প্রকল্পের (কেইস) খাত ভিত্তিক ব্যয়ের চিত্র অসম্পূর্ণ এবং ভুল হওয়ায় পরবর্তী বৈঠকে সঠিক তথ্য উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, উপমন্ত্রী হাবিবুর নাহার, মো. মোজাম্মেল হোসেন, দীপংকর তালুকদার, নাজিম উদ্দিন আহমেদ, জাফর আলম, মো. রেজাউল করিম বাবলু এবং খোদেজা নাসরিন আক্তার হোসেন অংশ নেন।

এছাড়া পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুল্লাহ আল মোহসীন চৌধুরী, পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক, বিএফআইডিসির চেয়ারম্যানসহ মন্ত্রণালয় ও জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

   

রাত পোহালেই টাঙ্গাইলের দুই উপজেলায় নির্বাচন: কে হাসবে শেষ হাসি



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, টাঙ্গাইল
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী) এই দুই উপজেলা নিয়ে সংসদীয় আসন গঠিত। এ আসনের এমপি ড. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক কৃষিমন্ত্রী। এই দুই উপজেলায় ড. আব্দুর রাজ্জাক চেয়ারম্যান পদে দুই জন প্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছেন। তবে আওয়ামী লীগেরই অন্য নেতারা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়েছেন ড. আব্দুর রাজ্জাক এমপির প্রার্থীরা। কে হাসবে শেষ হাসি এ নিয়ে চলছে ভোটারদের মাঝে হিসাব নিকাশ।

বুধবার (৮ মে) টাঙ্গাইলের এই দুই উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে। ইতোমধ্যে কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে গেছে নির্বাচনী সরঞ্জাম।

আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য দলের কেউ এই নির্বাচনে প্রার্থী হননি। মধুপুরে আওয়ামী লীগের তিন নেতা এবং ধনবাড়ীতে আওয়ামী লীগের পাঁচ নেতা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

মধুপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা জানান, গত ১০ বছর ধরে এই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছরোয়ার আলম খান আবু। গত দুই মেয়াদেই স্থানীয় এমপি ড. আব্দুর রাজ্জাকের সমর্থন ছিল তাঁর দিকে। কিন্তু দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আবু টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী) আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন চাইবেন বলে ঘোষণা দেন। এ নিয়ে স্থানীয় এমপি ড. আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব সৃষ্টি হয়। মধুপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ ভাগ হয়ে যায়। একাধিকবার সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। যদিও দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় আবু সংসদ নির্বাচনে আর প্রার্থী হননি। তবে তিনি এবারও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিসহ দলের বড় একটি অংশের সমর্থন আছে আবুর দিকে।

ভোটার আরিয়ান আহমেদ কাকন বলেন, আমরা যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দিয়ে বিজয় করবো। যে উন্নয়ন করবে আমাদের পাশে থাকবে তাকেই আমরা ভোট দিব। আমরা সুষ্ঠ সুন্দর নির্বাচন চাই।

অন্যদিকে চেয়ারম্যান পদে স্থানীয় এমপি ড. আব্দুর রাজ্জাকের সমর্থন নিয়ে প্রার্থী হয়েছেন মধুপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও শোলাকুড়ী ইউনিয়ন পরিষদের পদত্যাগকারী চেয়ারম্যান ইয়াকুব আলী। এ ছাড়াও আব্দুর রাজ্জাকের অংশের অপর নেতা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মীর ফরহাদুল আলম চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। এই তিন প্রার্থীর দিকে ভাগ হয়ে গেছেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।

মধুপুরের সাবেক এমপি ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী ২৩ বছর পর গত শনিবার মধুপুরে যান। তিনি ছরোয়ার আলম খানের পক্ষে গণসংযোগে অংশ নেন।

এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান প্রার্থী ছরোয়ার আলম খান আবু জানান, দলের অধিকাংশ নেতা-কর্মী আমার পক্ষে আছে। মধুপুরে জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন হলে আমি বিপুল ভোটে বিজয়ী হবো।

ড. আব্দুর রাজ্জাক সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী ইয়াকুব আলী জানান, ছরোয়ার আলম খান আবু দীর্ঘদিন উপজেলা চেয়ারম্যান থেকেও জনগণের আশা আকাঙ্খা পূরণ করতে পারে নাই। মধুপুরের মানুষ পরিবর্তন চায়। নতুন চেয়ারম্যান চাই। তাই আমার পক্ষে দলীয় নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন। আমি শতভাগ আশাবাদী বিপুল ভোটে এ উপজেলার মানুষ আমাকে বিজয়ী করবে।

একটি পৌরসভা ও ১১টি ইউনিয়ন নিয়ে মধুপুর উপজেলা গঠিত। এ উপজেলায় মোট ভোটার ২ লাখ ৫৫ হাজার ২১৮ জন। এ উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান চারজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

ধনবাড়ী উপজেলা-

ধনবাড়ীতে নির্বাচনী মাঠে পাঁচ প্রার্থী। ধনবাড়ী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে এমপি ড. আব্দুর রাজ্জাক সমর্থন করেছেন ধনবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হারুনার রশিদ হীরাকে। হীরা ড. আব্দুর রাজ্জাকের খালাতো ভাই। ২০১৯ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে হীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান হলেও এবার আরও চারজন প্রার্থীর বিরুদ্ধে তাঁকে লড়াই করতে হচ্ছে।

তাঁরা হলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মঞ্জুরুল ইসলাম তপন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াদুদ তালুকদার সবুজ, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মেহেদী হাসান রনি এবং সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা আজিজুল ইসলাম।

আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা জানান, হারুনার রশিদ হীরা আব্দুর রাজ্জাকের খালাতো ভাই। অপর প্রার্থী মঞ্জুরুল ইসলাম তপন আব্দুর রাজ্জাকের মামাতো ভাই। এই উপজেলার নেতা-কর্মীরাও বিভিন্ন প্রার্থীর পক্ষে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন।

ড. আব্দুর রাজ্জাক সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী হারুনার রশীদ হীরা বলেন, আমার পক্ষে দলীয় নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করছেন। মানুষ উন্নয়ন চাই। আমি চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় এ উপজেলায় অনেক উন্নয়ন করেছি। আবারও জনগণ আমাকে বিপুল ভোটে জয়লাভ করাবে।

নিজেকে সাবেক কৃষিমন্ত্রী ও বর্তমান এমপি ড. আব্দুর রাজ্জাকের সাথে আমার রক্তের কোন সম্পর্ক নেই। সে আমার মামাতো ভাই না বলে দাবি করেছেন অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী খন্দকার মঞ্জুরুল ইসলাম তপন। তিনি বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ বর্তমানে ভালই আছে। সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন হলে আমি বিপুল ভোটে বিজয়ী হবো।

একটি পৌরসভা ও সাতটি ইউনিয়ন নিয়ে ধনবাড়ী উপজেলা গঠিত। এ উপজেলায় মোট ভোটার ১ লাখ ৬২ হাজার ৫৫৮ জন। এ উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এ ব্যাপারে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মতিয়ূর রহমান জানান, অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন করতে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। কেউ কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা করার চেষ্টা করলে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ইতো মধ্যে বিভিন্ন কেন্দ্রে কেন্দ্র নির্বাচনের সরঞ্জাম পৌঁছে গেছে।

;

উপজেলা পরিষদ নির্বাচন: সিলেটে কেন্দ্রে ভোটার আনাই চ্যালেঞ্জ প্রার্থীদের



মশাহিদ আলী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, সিলেট
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

 

রাত পোহালেই সিলেটে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে চারটি উপজেলায় ভোটগ্রহণ শুরু হবে। বুধবার (৮ মে) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ। এ চার উপজেলায় তিনটি পদে মোট ৫৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। শেষ মুহূর্তে এসে এখন আলোচানার টেবিলে চলছে ভোটের হিসেব-নিকাশ। ভোটের দিন যে প্রার্থী যত বেশি ভোটার কেন্দ্রে নিয়ে আসবেন সেই প্রার্থী পড়বেন বিজয়ের মালা। ভোটারদের কেন্দ্র আনাটাই হচ্ছে সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জিং। তাই বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছেন প্রার্থীরা। বিশেষ করে অঞ্চল ভিত্তিক ভোটার আনার চেষ্টা করবেন তারা।

নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি নিয়েছে প্রশাসন। এছাড়া ভোটের দিন চারটি উপজেলায় আবহাওয়া স্বাভাবিক থাকবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানা যায়, প্রথম ধাপে সিলেট জেলার সদর, দক্ষিণ সুরমা, গোলাপগঞ্জ ও বিশ্বনাথ উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। চার উপজেলায় ৮ লাখ ১৪ হাজার ৫২ ভোটার রয়েছেন। তিনটি পদে মোট ৫৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সিলেট সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৬ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৮জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। দক্ষিণ সুরমা উপজেলায় চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন করে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩জন লড়ছেন।

গোলাপগঞ্জ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৩জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২জন প্রতিদ্বন্দ্বী রয়েছেন। আর বিশ্বনাথ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ১০ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬ জন এবং ৩জন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ভোটের লড়াইয়ে আছেন।

এদিকে, ভোটের দিন কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিত নিয়ে রয়েছে নানা আলোচনা। সিলেটের চারটি উপজেলার মধ্যে মাত্র শুধু বিশ্বনাথে অংশগ্রহণ করেছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। বাকি সবগুলো উপজেলায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীই প্রার্থী। তাই ভোটার উপস্থিত নিয়ে রয়েছে তাদের মধ্যে একটা চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জকে সামনে রেখে ভোটারদের দোয়ারে দোয়ারে ঘুরেছেন প্রার্থীরা। নিজ অঞ্চলের ভোটের বিষয়টি প্রাধন্য দিয়েছেন তারা।

প্রার্থীরা বলছেন, বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ও জাতীয় নির্বাচনে ভোটার উপস্থিত ছিল তুলনামূলক কম।তাই তারা এবার ভোটারদের কেন্দ্রমুখী বিভিন্ন কৌশলে প্রচারণা করেছেন। বিশেষ করে তরুণ ভোটারদের কাজ করেছেন। এছাড়াও ভোট কেন্দ্রে নারী নিয়ে আসতে ছুটে ঘিয়েছেন ঘরে ঘরে।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, ভোটে আড়াই হাজারের বেশি পুলিশ সদস্য, সাড়ে তিন হাজারের বেশি আনসার সদস্য ও ৪জন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট ও ৩৬ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত থাকবেন। এর বাইরে বিজিবি ও এপিবিএন সদস্যরাও মাঠে থাকবে। চারটি উপজেলায় ৩০২টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে। এরমধ্যে ১৭৪টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ ধরে নিরাপত্তা পরিকল্পনা করেছে সিলেট জেলা ও সিলেট মহানগর পুলিশ( এসএমপি)। এসএমপির আওতাধীন সদরে ৬২ টি কেন্দ্রের মধ্যে ৪৫টি ঝুঁকিপূর্ণ ও দক্ষিণ ‍সুরমার ৬৩টি কেন্দ্রের ৩৯টি ঝুঁকিপূর্ণ নির্ধারণ করা হয়েছে। আর জেলার দুই উপজেলায় ৯০টি ঝুঁকিপূর্ণ ধরা হয়েছে। তন্মধ্যে গোলাপগঞ্জে ১০৩টি কেন্দ্রের ৬৩টি ও বিশ্বনাথে ৭৪টি কেন্দ্রের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ ২৭টি নির্ধারণ করা হয়েছে।

ভোটার উপস্থিত নিয়ে বিশ্বনাথ উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী ও সদ্য বহিষ্কৃত যুক্তরাজ্য বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক সেবুল মিয়া বলেন, বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ও জাতীয় নির্বাচনে মানুষের ভোটের প্রতি আগ্রহ ছিলো না।তাই ভোটের দিন ভোটার উপস্থিত ছিল কম। কিন্তু যেহেতু এখন স্থানীয় সরকার নির্বাচন তাই প্রত্যেকে তার নিজ এলাকাসহ অঞ্চল ভিত্তিক ভোটে জোর দিয়েছেন বেশি। আমি আমার জায়গা থেকে চেষ্টা করেছি প্রতিটি এলাকায় যোগাযোগ করার। এখন দেখি বাকিটা ভোটার উপর ভিত্তি করছে।

চেয়ারম্যান প্রার্থী ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদরুল ইসলাম বলেন, অন্যান্য নির্বাচন থেকে এবারের নির্বাচনে ভোটারদের উপস্থিত বেশি হবে বলে আমার ধারণা। কেননা আমাদের কর্মী-সমর্থকরা নির্বাচনী এলাকার প্রতিটি পাড়া-মহল্লা গিয়ে ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে এসে ভোটপ্রদানের আহ্বান জানিয়েছে। এছাড়া আমি আমার নির্বাচনী এলাকায় তরুণ ভোটারদের বেশি গুরুত্ব দিয়েছি।কারণ তরুণরাই যাচাই-বাচাই করে ভোট দিয়ে তাদের পছন্দের প্রার্থীদের বিজয়ী করবে। আমি আশা করি আমাকে উপজেলাবাসী ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন।

ভোটের দিন বিকেল পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন সিলেট আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক দীলিপ বৈষ্ণব। তিনি বলেন, যে চারটি উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে সেগুলোতে দিনের বেলায় বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। তবে সন্ধ্যার পর বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

এব্যাপারে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, নির্বাচন ঘিরে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ কোনো বিশৃঙখলা তৈরি করার চেষ্টা করলে সঙ্গে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে সিলেটের সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও চার উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আমাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। ভোটারদের উপস্থিতি প্রার্থীদের উপর নির্ভর করছে। তারা জনগণের সঙ্গে কতটা সম্পৃক্ত হতে পেরেছেন এবং প্রচার প্রচারণা করেছেন তা ভোটারদের উপস্থিতি বলে দেবে।

;

ফেনীতে কালবৈশাখী ঝড়ে আড়াই কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ফেনী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ফেনীতে কালবৈশাখী ঝড়ে জেলার ৬ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে কৃষিখাত, ঘরবাড়ি, গাছপালাসহ আনুমানিক ২ কোটি ৫০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে ফেনী জেলাপ্রশাসন।

সোমবার (৬ মে) দুপুরে ফেনীর আকাশে বয়ে যাওয়া কালবৈশাখী ঝড়ে গাছপালা পড়ে বন্ধ থাকে মহাসড়কের যান চলাচল। ভেঙে যায় বহু এলাকার ঘরবাড়ি, রাস্তায় পড়ে যায় বৈদ্যুতিক খুঁটি এবং অতিবৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ার ফলে নুইয়ে পড়ে ফসলী জমির ধান। ঝড়ের প্রভাবে জেলার ৬ উপজেলায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারন করেছে জেলাপ্রশাসন।

মঙ্গলবার (৭ মে) জেলাপ্রশাসনের ত্রাণ ও দূর্যোগ মন্ত্রনালয়ের অধীন ছয়টি উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় হতে প্রাপ্ত তথ্যনুযায়ী জেলাজুড়ে আনুমানিক ৫৫৭ টি ঘরবাড়ি কম-বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ২ কোটি ২৮ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। তবে ঝড়ে কোন নিহত বা উল্লেখযোগ্য ভাবে আহতের তথ্য নেই বলে জানান তারা।

একই সূত্র জানায়, ঝড়ের প্রভাবে জেলায় প্রায় ১ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যার আনুমানিক মূল্য ৪ লাখ টাকা। পাশাপাশি আনুমানিক ১৫০০ হেক্টর জমি এবং ২৫ কিলোমিটার রাস্তার গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যার আনুমানিক মূল্য ৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা।

এদিকে কালবৈশাখী ঝড়ের কারণে ফসলের ক্ষতির চিন্তায় আছেন জেলার কৃষকরা।

পরশুরাম উপজেলার কৃষক রবিউল হক বলেন, মাঠের বোরো ধান ঘরে তোলার ঠিক আগমুহূর্তে এমন বৃষ্টি চিন্তায় ফেলেছে। ভালো ফলন হলেও ফসল বাড়ি আনতে পারব কিনা জানি না। বৃষ্টিতে এখনই জমিতে পানি জমে গেছে। বাতাস হলে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক একরাম উদ্দিন বলেন, চলতি মৌসুমে ফেনীতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বোরো ধানের আবাদ বেশি হয়েছে। ইতোমধ্যে ধান কাটা শুরু হয়ে গেছে। মাঠে প্রায় ৮০ শতাংশের বেশি ধান পেকে গেছে। বৈরী আবহাওয়ার হাত থেকে ফসল রক্ষায় জমির ধান ৮৫ শতাংশ পাকার সঙ্গে সঙ্গেই কেটে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বাতাস ও বৃষ্টি স্থায়ী না হলে আশা করি কৃষকের খুব বেশি ক্ষতি হবে না।

ফেনী জেলাপ্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার বলেন, ঝড়ে কোনো নিহত বা উল্লেখযোগ্যভাবে আহতের খবর পাওয়া যায়নি।

;

বিমানের পরিত্যক্ত ব্যাগে মিলল প্রায় ৩ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে পরিত্যক্ত একটি ব্যাগ থেকে ২ কোটি ৮৭ লাখ টাকার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা উদ্ধার করা হয়েছে। এরমধ্যে সৌদি রিয়াল ও ইউএস ডলার ছিল। তবে এ ঘটনায় কাউকে আটক করা যায়নি।

মঙ্গলবার (৭ মে) সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে ঢাকার শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চট্টগ্রামে আসা বাংলাদেশ বিমানের বিজি-১৪৭ ফ্লাইট থেকে এসব বৈদেশিক মুদ্রা উদ্ধার করা হয়। ওই ফ্লাইটটি শাহ আমানত বিমানবন্দর থেকে ৭টার কিছু সময় পর দুবাইয়ের উদ্দেশে রওনা হয়েছে।

বিষয়টি বার্তা২৪.কমকে নিশ্চিত করেছেন শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন তাসলিম আহমেদ।

তিনি বলেন, সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে ঢাকা থেকে আসা বিজি-১৪৭ ফ্লাইটে পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া একটি ব্যাগ থেকে বেশকিছু বৈদেশিক মুদ্রা উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে রিয়াল ও ইউএস ডলার রয়েছে। যা আনুমানিক ২ কোটি ৮৭ লক্ষ টাকার সমমূল্যের। মূলত ওই ফ্লাইটটি চট্টগ্রাম হয়ে দুবাই যাওয়ার জন্য ঢাকা থেকে এসেছিল। পরে ফ্লাইটটি দুবাইয়ের উদ্দেশে শাহ আমানত বিমানবন্দর ত্যাগ করে।

কাস্টম হাউসের সহকারী কমিশনার মো. আকরাম হোসেন জানান, ব্যাগটি স্ক্যানিং করে ১ হাজার ৮৭৫ পিস ৫০০ সৌদি রিয়াল (বাংলাদেশি ২ কোটি ৭৬ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ টাকা) এবং ১০০ পিস ১০০ মার্কিন ডলার (১১ লাখ টাকা) পাওয়া যায়। এ অভিযানে বিমান বাংলাদেশ সিকিউরিটি ও এপিবিএন কাস্টমসকে সহযোগিতা করে। বৈদেশিক মুদ্রাগুলো রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়ার জন্য ডিএম মূল্যে আটক করা হয়েছে।

এর আগে, গত ২৬ এপ্রিল সন্ধ্যা ৬টার দিকে একই বিমানবন্দর টার্মিনালের আন্তর্জাতিক এ্যান্টি হাইজ্যাকিং গেইটে তল্লাশি করে আরব আমিরাতের ৯০ হাজার দিরহামসহ শারজাহগামী এক যাত্রীকে আটক করেছে এনএসআই ও শুল্ক গোয়েন্দা। উদ্ধার মুদ্রা ২৩ হাজার ৬৮৪ মার্কিন ডলারের সমমূল্য এবং বাংলাদেশি ২৭ লাখ টাকা।

;