জমকালো আয়োজনে চলছে তারকা বহুল ‘ভারত-বাংলাদেশ ফিল্ম অ্যাওয়ার্ডস’ অনুষ্ঠান



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা
‘ভারত-বাংলাদেশ ফিল্ম অ্যাওয়ার্ডস’ অনুষ্ঠান , ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

‘ভারত-বাংলাদেশ ফিল্ম অ্যাওয়ার্ডস’ অনুষ্ঠান , ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নির্ধারিত সময়ের বেশ কিছু সময় পর বাংলাদেশ ও ভারতের জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মাধ্যমে বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারের নবরাত্রী মিলনায়তনে শুরু হয় টিএম ফিল্মস নিবেদিত ‘ভারত-বাংলাদেশ ফিল্ম অ্যাওয়ার্ডস (বিবিএফএ)’র প্রথম আসর। এরপর দেখানো হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্র।

এর মাঝে নবরাত্রী মিলনায়তন ভর্তি হয়ে গেছে দুই বাংলার তারকায়। সন্ধ্যা হতেই মিলনায়তনে একে একে হাজির হতে থাকেন দুই বাংলার কিংবদন্তি সব অভিনেতা-অভিনেত্রীরা।

অনুষ্ঠানের শুরুতে টিএম ফিল্মসের চেয়ারপার্সন ফারজানা মুন্নী বলেন, ‘দুই বাংলার সেরা শিল্পীদের সম্মান জানাতে পেরে আমরা খুবই আনন্দিত। দুই বাংলায় চলচ্চিত্রে এখন সংকট চলছে, ঠিক এই সময়ে চলচ্চিত্রের পথে পা বাড়িয়েছে আমাদের টিএম ফিল্মস। নতুন সম্ভাবনা জাগিয়ে তোলার প্রয়াসে আমরা প্রযোজনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। স্বপ্ন দেখছি দেশের চলচ্চিত্রকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পৌঁছে দেওয়ার।’

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা একই ভাষায় কথা বলি। আমরা একই পাখির কলতান শুনি। কিন্তু রাজনৈতিক সীমারেখা আমাদেরকে বিভক্ত করেছে। আমাদের ভাষা, সংস্কৃতি জলবায়ু ও কিন্তু একই। কিন্তু আমাদের মধ্যে এ ধরনের সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান নিশ্চয় আমাদের সাংস্কৃতিক সম্পর্ক দৃঢ় করবে। এ কারণেই আজকের আয়োজন। এ ধরনের আয়োজন সংস্কৃতি চর্চা চলচ্চিত্র নির্মাণের চর্চার দিক থেকে আমাদের সংস্কৃতিকে আরও বেগবান করবে। চলচ্চিত্র জীবনের কথা বলে, মানুষকে কাঁদায়, হাসায়, চলচ্চিত্র চিন্তার দুয়ার খুলে দেয়। আমার বিশ্বাস এ আয়োজনের মধ্য দিয়ে আমাদের সম্পর্ক আরেক নতুন এক মাত্রা উন্মোচন করবে।’

কলকাতার জনপ্রিয় নির্মাতা গৌতম ঘোষ বলেন, ‘সিনেমার যে সময় সেটা আশ্চর্য ম্যাজিক। যেটা এক হাজার বছরের গল্প দু বছরে বলা যায়। পাঁচ মিনিটের গল্প দুই ঘণ্টায় বলা যায়। সিনেমায় আমরা সময়কে সংকুচিত করতে পারি। আবার প্রসারিত করতে পারি। এক আশ্চর্যজনক মাধ্যমে আমরা কাজ করি। সিনেমা কি সত্যি দুই বাংলার মানুষের মধ্যে প্রীতি ও মিলন বয়ে আনতে পেরেছে কি? এটা নিয়ে একটা লেখা আরও আগেই লিখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সময়ের কারণে হয়ে উঠেনি। সিনেমা আমাদের একত্রিত করে দিবে, মানুষের মধ্যে আর কোন বিভেদ থাকবে না। সিনেমা যে কাজটা করতে পারে সেটা হলো আমাদের স্মৃতিমালাকে একত্রিত করতে পারে। আর সেই প্রত্যাশাই রইলো।’

পশ্চিমবঙ্গের পর্যটক মন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, ‘এ আয়োজনের মধ্য দিয়ে দুই বাংলার দারুণ এক সম্পর্ক ফুটে উঠেছে। আমাদের দুই বাংলার ইতিহাস ও সম্প্রীতি এ আয়োজনের মধ্য আরও দৃঢ হবে। এই ঢাকা শহরে ১৯৬৫ সালে প্রথম চলচ্চিত্র উৎসবের আয়োজন হয়েছিল। যেখানে সত্যজিৎ রায় উপস্থিত ছিলেন। এই শহরেই আবার তেমন একটি অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়েছে। এটা বেশ আনন্দের। দুই বাংলার সংস্কৃতিতে একটা সময় অস্থিরতা ছিল। কিন্তু সেটা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দূর হয়ে গিয়েছে। সামনের দিনগুলোতে তা আরও দৃঢ হবে। সিনেমা তো শিল্পী, একে চর্চা করতে হয়। এছাড়া তো একে আর সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কেন পথ নেই। আগে কিন্তু একটা সময় ছিল, ভালো কাজ হলে দুই বাংলাতেই টের পাওয়া যেত। কিন্তু এখন অর সেটা হয় না। এক ধরনের ভালো কাজের ঘাটতি দেখা দিয়েছে।’

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্যে রাখেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান, এটিএন বাংলার চেয়ারম্যান ড.মাহফুজুর রহমান, ফিল্ম ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ার সভাপতি ফিরদাউসুল হাসান ও বিবিএফএ এর সমন্বয়ক তপন রায়।

এরপর মঞ্চে আসেন ওপার বাংলার জনপ্রিয় উপস্থাপক মীর আফসার আলি ও বাংলাদেশের শাহরিয়ার নাজিম জয়। একে একে মঞ্চে ডাকা হয় দুই বাংলার তারকাদের। বাংলাদেশি তারকাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অভিনেতা ওমর সানী, সিয়াম আহমেদ, নিরব হোসেন, তাসকিন আহমেদ, মামনুন ইমন, অভিনেত্রী মৌসুমী, জয়া আহসান, বিদ্যা সিনহা মিম, নুসরাত ফারিয়া, পরীমনি ও পূজা চেরিসহ অনেকে। ভারতীয় তারকাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, জিৎ, আবির চ্যাটার্জি, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা ঘোষ, তনুশ্রী, পাওলি দাম, নির্মাতা গৌতম ঘোষ, সৃজিত মুখার্জি প্রমুখ।

এর কিছুক্ষণ পর মাইক্রোফোনে ভেসে এলো আজীবন সম্মাননার ঘোষণা। চলচ্চিত্রে বিশেষ অবদান রাখায় বাংলাদেশের কিংবদন্তি অভিনেত্রী আনোয়ারা বেগম ও ভারতের কিংবদন্তি অভিনেতা রঞ্জিত মল্লিকে আজীবন সম্মাননা প্রদান করা হয়।

এদিকে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত দুই বাংলার শিল্পীদের আয়োজনে নাচ ও গানের মাধ্যমে জমকালো আয়োজনে চলছে তারকাবহুল ‘ভারত-বাংলাদেশ ফিল্ম অ্যাওয়ার্ডস’ অনুষ্ঠান।

‘ভারত-বাংলাদেশ ফিল্ম অ্যাওয়ার্ডস (বিবিএফএ)’ যৌথভাবে আয়োজন করছে ফিল্ম ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া ও বসুন্ধরা গ্রুপ। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপন করছে টি. এম. ফিল্মস। মিডিয়া পার্টনার হিসেবে থাকছে ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেড। অন্যদিকে ব্রডকাস্ট পার্টনার হিসেবে আছেন ভারতের জি-বাংলা এবং বাংলাদেশের এটিএন বাংলা ও গানবাংলা। ইভেন্ট পার্টনার হিসেবে আছে ওয়ান মোর জিরো।

   

সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে জেগে ওঠার শপথে শুরু হলো গণসঙ্গীত উৎসব



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো
সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে জেগে ওঠার শপথে শুরু হলো গণসঙ্গীত উৎসব

সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে জেগে ওঠার শপথে শুরু হলো গণসঙ্গীত উৎসব

  • Font increase
  • Font Decrease

 

‘সাম্প্রদায়িকতা ও শ্রেণি-বৈষম্যের বিরুদ্ধে জেগে ওঠো বাংলাদেশ’-স্লোগানে শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সকালে চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গনে শুরু হলো তিন দিনব্যাপী চতুর্থ জাতীয় গণসঙ্গীত উৎসব। সকাল ১০টায় চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমির অনিরুদ্ধ মুক্ত মঞ্চে জাতীয় সঙ্গীত ও উৎসব সঙ্গীত ‘আমারই দেশ সব মানুষের’ গানের মধ্যে দিয়ে উৎসবের শুরু হয়। প্রমা অবন্তীর পরিচালনায় ওডিসি অ্যান্ড ট্যাগোর ডান্স মুভমেন্টের শিল্পীরা উদ্বোধনী নৃত্য পরিবেশন করেন।

উৎসব উদ্বোধক সমাজবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. অনুপম সেন বলেন, আমাদের অনেক উন্নয়ন হয়েছে কিন্তু সম্পদ অল্প কয়েকজনের হাতে কুক্ষিগত হচ্ছে। এটা সঠিক নয়। দুর্নীতি হচ্ছে। এরকম হলে আমাদের পরিণতি দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোর মত হবে। তারা স্বাধীন হয়েছে কিন্তু উপরে উঠতে পারেনি এখনো। তাই মানুষকে জাগাতে হবে। গণসংগীত বিশ্বের শক্তিশালী শিল্পমাধ্যম। গণসংগীত মানুষকে জাগায়। অগ্নিবীণার গান মানুষকে জাগিয়েছিল। আমাদের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় বিশ্বের কয়েকটি দেশে যখন চক্রান্ত হচ্ছিল তখন বাংলাদেশ কনসার্টের আয়োজন করা হয়েছিল। এভাবে আবার জাগতে হবে। গণসঙ্গীত অতীতের মত আমাদের পথ দেখাবে।

উদ্বোধনী পর্বে বক্তব্য রাখেন উৎসব উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি, লেখক ও গবেষক গোলাম কুদ্দুছ বলেন, ‘যখন সমাজ ভালো থাকে না, দেশ আক্রান্ত হয় অপশক্তির দ্বারা তখন বুক টান টান করে দাঁড়ানোর শক্তি যোগায় যে সংস্কৃতি তার অন্যতম প্রধান উপকরণ গণশক্তি। এই বাংলাদেশে সকল আন্দোলনে গণশক্তি শক্তি যুগিয়েছে। সকলের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সাহসী ভূমিকা নেয়। একসময় গণসঙ্গীত শক্তিশালী ধারায় থাকলেও মাঝে কিছুটা বিরতি ছিল। সে প্রেক্ষিতে ২০০৭ সালে আবার পুনর্জাগরণ। সকল দল ও শিল্পীদের আবার যুক্ত করতে জাতীয় গণসঙ্গীত উৎসবের আয়োজন শুরু।’


চট্টগ্রামের পর সকল বিভাগীয় শহরে উৎসবের আয়োজন করতে চান জানিয়ে গোলাম কুদ্দুছ আরও বলেন, ‘পঁচাত্তরের পর আমাদের সংবিধান থেকে একে একে সকল মূলনীতিকে বাদ দিয়ে দেশকে একাত্তর পূর্ব পরিস্থিতিতে নেয়ার চেষ্টা করেছে। আমরা আবার ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি। এ পথে যেতে হবে বহুদূর। এখনো নববর্ষ উদযাপনে বাধা আসে। সকল ধর্মের মানুষের অধিকার নিশ্চিত করতে পারিনি। হয়ত কেউ না খেয়ে মরেনি কিন্তু ঘুষ দুর্নীতি লুটপাট অনেক বেড়েছে। এটা স্বীকার করতেই হবে। সরকারকে আরো কঠোর হস্তে এসব দমন করতে হবে। জনবিরোধী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে প্রয়োজন সাংস্কৃতিক জাগরণ। অশুভ শক্তিকে বাংলাদেশ থেকে বিনাশ করতে হবে। এতে অন্যতম প্রাণশক্তি হবে গণসঙ্গীত। পূর্ব পুরুষের রক্তের ঋণ শোধ করতে ত্যাগ স্বীকারের কোনো বিকল্প নেই।’

সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আবৃত্তিশিল্পী আহকাম উল্লাহ বলেন, ‘ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এদেশে গণসঙ্গীতের যাত্রা শুরু। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে গণসঙ্গীত সংগ্রামের প্রেরণা হয়েছে। গণসঙ্গীতের মাধ্যমে আমরা জোট বাঁধছি, তৈরি হচ্ছি। মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ আমরা ফিরিয়ে আনবই।

সংস্কৃতিজন ও উৎসব উদযাপন পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. একিউএম সিরাজুল ইসলাম বলেন, চট্টগ্রাম অঞ্চলে হরি প্রসন্ন পাল, ফনি বড়ুয়া, রমেশ শীলসহ সারাদেশে বহু সঙ্গীতজ্ঞ গণসঙ্গীতে অবদান রেখেছেন। গণসঙ্গীতের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশের চেতনা সাধারণ মানুষের মাঝে ধ্বনিত হয়েছিল। আশা করি গণসঙ্গীতের এ অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে।

স্বাগত বক্তব্যে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ও উৎসবের প্রধান সমন্বয়কারী মানজার চৌধুরী সুইট বলেন, ‘চট্টগ্রামের সকলের সহযোগিতায় এ আয়োজন করতে পেরে আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সাংস্কৃতিক আন্দোলনই আমরা চালিয়ে যাচ্ছি। অসাম্প্রদায়িক একটি বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামই ছিল মুক্তিযুদ্ধ। সম্প্রদায়গত ঐক্যের বাণী সবার অন্তরে গাঁথা থাকুক।’

শুভেচ্ছা বক্তব্যে উৎসবের যুগ্ম সমন্বয়কারী শিল্পী শ্রেয়সী রায় বলেন, ‘গণসঙ্গীত আমাদের প্রাণের কথা বলে, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের কথা বলে। ঢাকার বাইরে চট্টগ্রামে প্রথমবার চট্টগ্রামে আয়োজন করায় আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।’

চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসার মোসলেম উদ্দিন শিকদার বলেন, ‘এ উৎসবের মধ্যে সারাদেশের সাংস্কৃতিক কর্মীদের মেলবন্ধন হবে। উৎসবের মধ্যে গণসঙ্গীতের নব জাগরণ সৃষ্টি হবে এই প্রত্যাশা করি।’

সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি শিল্পী কাজী মিজানুর রহমান বলেন, আজ গণসঙ্গীত শিল্পীদের মনে পড়ছে। আর মনে পড়ছে গণসঙ্গীত পরিষদের প্রতিষ্ঠাতাদের। সকলের প্রচেষ্টায় আজ এ আয়োজন। সবাই মিলে সারাদেশে আমরা গণসঙ্গীতকে ছড়িয়ে দিতে চাই।

শুক্রবার উৎসবের সকালের অধিবেশনে লালন সাঁইজীর গান পরিবেশন করে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী চট্টগ্রাম, কাজী নজরুল ইসলামের সাম্যের গান পরিবেশন করবে নজরুল সঙ্গীত শিল্পী সংস্থা চট্টগ্রাম। এরপর একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন ঢাকার শিল্পী আবিদা রহমান সেতু।

শুক্রবার বিকেলে দলীয় সঙ্গীতে সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী গান পরিবেশন করে খুলনার বাংলাদেশ গণশিল্পী সংস্থা, আব্দুল লতিফের গান পরিবেশন করবে দিনাজপুরের দল ভৈরবী, দ্বিজেন্দ্রলাল রায়-রজনীকান্ত সেন ও অতুলপ্রসাদের দেশের গান পরিবেশন করবে রাজশাহীর দল জয়বাংলা, বর্ণবাদ বিরোধী গান পরিবেশন করবে বরগুনার দল মাটিয়াল, সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী গান পরিবেশন করবে নোয়াখালীর দল বিশ্বভূবন, ফকির আলমগীরের গান পরিবেশন করবে ঢাকার দল ঋষিজ শিল্পী গোষ্ঠী, ভূপেন হাজারিকার গান পরিবেশন করবে ঢাকার দল উঠোন, শ্রেণি-সংগ্রাম ও সমসাময়িক বিষয়ের গান পরিবেশন করবে চট্টগ্রামের দল সৃজামি সাংস্কৃতিক অঙ্গন এবং অজিত রায়ের গান পরিবেশন করবে চট্টগ্রামের অভ্যুদয় সংগীত অঙ্গন।

শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটায় একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন রংপুরের শিল্পী রূপু মজুমদার, ঠাকুরগাঁও এর জ্যোতিষ চন্দ্র বর্মন, ঢাকার ফকির সিরাজ, কাজী মিজানুর রহমান, আরি রহমান ও প্রলয় সাহা এবং চট্টগ্রামের ফারহানা রহমান কান্তা। দলীয় নৃত্য পরিবেশন করবে চট্টগ্রামের ওরিয়েন্টাল স্কুল অব ডান্স। শনিবার ও রোববারও দিনব্যাপী এভাবে নানা কর্মসূচির আয়োজন থাকছে।

;

`পিংক’খ্যাত অনিরুদ্ধর নতুন ছবিতেও জয়া



বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
জয়া আহসান /  ছবি : ফেসবুক

জয়া আহসান / ছবি : ফেসবুক

  • Font increase
  • Font Decrease

বলিউডের আলোচিত ছবি ‘পিংক’ এর নির্মাতা অনিরুদ্ধ রায় চৌধুরীর ‘কড়ক সিং’ দিয়ে গেল বছর বলিউডে পা রাখেন বাংলার জনপ্রিয় চিত্রতারকা জয়া আহসান। এই নির্মাতার পরের ছবিতেও দেখা যাবে জয়াকে। তবে ছবিটি নির্মিত হবে বাংলা ভাষায়।

অনিরুদ্ধ রায় কলকাতার নির্মাতা। বলিউডে বেশকিছু ছবি নির্মাণ করে নিজের অবস্থান পোক্ত করেছেন। বাংলা ভাষাতেও তার বেশকিছু আলোচিত ছবি রয়েছে। সর্বশেষ এই নির্মাতা বাংলা ভাষায় নির্মাণ করেছিলেন ‘বুনোহাঁস’।

জয়া আহসান /  ছবি : ফেসবুক

সেই ছবির প্রায় দশ বছর পর নতুন বাংলা ছবি নির্মাণের ঘোষণা দিলেন। ছবির নাম ‘ডিয়ার মা’। যেখানে মূখ্য ভূমিকায় দেখা যাবে জয়া আহসানকে। সেই সাথে ছবিতে রয়েছেন পশ্চিম বাংলার বেশ কজন গুণী মুখ। এরমধ্যে রয়েছেন চন্দন রায় সান্যাল, ধৃতিমান এবং শাশ্বত।

বলিউডে সফল নির্মাতার হঠাৎ টালিউডে ফেরার ইচ্ছে নিয়ে পশ্চিমবাংলার শীর্ষ দৈনিক আনন্দ বাজারকে অনিরুদ্ধ বলেন, “কিছু কিছু গল্প থাকে, যেগুলো নিজের ভাষায় বলতে ইচ্ছে করে। ‘ডিয়ার মা’ তেমনই একটা কাহিনি। হিন্দিতে ছবি করলেও, বাংলা সব সময়েই মনের কাছাকাছি ছিল। আমি আগামী দিনেও হিন্দি, বাংলা দুই ভাষাতেই কাজ করব।”

জয়া আহসান /  ছবি : ফেসবুক

সিনেমাটির বিষয়বস্তু নিয়ে নির্মাতা বলেন, “রক্তের সম্পর্কের চেয়েও ভালোবাসার সম্পর্ক বেশি জোরালো হয়। মেয়েকে বড় করার মধ্য দিয়ে মায়ের জীবনের একটা উত্তরণ হয়, সে পরিপূর্ণ হয়। আমরা কাছের মানুষের ওপর অধিকার বোধ জাহির করি। আসলে কারও ওপর অধিকার ফলানো যায় না। মানবিক সম্পর্কের সূক্ষ্ম কিছু মোচড় উঠে আসবে ‘ডিয়ার মা’ সিনেমায়।”

ছবিতে নাম চরিত্রটি করছেন জয়া আহসান। এ বিষয়ে তিনি বলেন,“এই গল্পটা আগে কখনো বলা হয়নি। তাই এটা পর্দায় বলা খুব জরুরি ছিল। এ ধরনের চরিত্রও আমি আগে করিনি। টোনিদা (অনিরুদ্ধ) সংবেদনশীল ভাবে গল্প বলেন, যেটা আমার খুব ভালো লাগে।”

জয়া আহসান /  ছবি : ফেসবুক

জানা যায় মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে শুরু হবে শুটিং। এই মুহূর্তে কলকাতায় চলছে ওয়ার্কশপ।

;

তৃতীয় সপ্তাহে এসে ‘ওমর’ আর ‘লিপস্টিক’-এর চমক



বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
‘ওমর’ ও ‘লিটস্টিক’ সিনেমার পোস্টার

‘ওমর’ ও ‘লিটস্টিক’ সিনেমার পোস্টার

  • Font increase
  • Font Decrease

সাম্প্রতিক সময়ের সর্বোচ্চ সংখ্যক ছবি মুক্তি পেয়েছে গত রোজার ঈদে। একসঙ্গে ১১টি ছবি এসেছে বড় পর্দায়। এর মধ্যে প্রথম দুই সপ্তাহে অনুমিত দাপট দেখা গেছে শাকিব খান অভিনীত ‘রাজকুমার’র। হিমেল আশরাফ পরিচালিত ছবিটি ১২৬টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছিল। এছাড়া মাল্টিপ্লেক্স থেকে শুরু করে সিঙ্গেল স্ক্রিনেও ভালো ব্যবসা করেছে।

সাধারণত ঈদের ছবির হল তালিকা দুই সপ্তাহ পর আপডেট হয়। তাই শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) শুরু হচ্ছে ছবিগুলোর নতুন সপ্তাহ। আর এই তৃতীয় সপ্তাহে এসে চমক দেখিয়েছে দুটি ছবি। এগুলো হলো ‘লিপস্টিক’ ও ‘ওমর’। এর মধ্যে মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ নির্মিত ও শরিফুল রাজ অভিনীত ‘ওমর’ ঈদে মুক্তি পেয়েছিল ২১টি প্রেক্ষাগৃহে। নতুন সপ্তাহে এটি চলবে ২৬টি হলে। যেটা নিঃসন্দেহে চমৎকার অগ্রগতি।

তবে বড় চমক দেখালো ঈদের ‘বঞ্চিত’ সিনেমা ‘লিপস্টিক’। এই ছবির টিম আশা করেছিল, ‘রাজকুমার’র পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ হল তারা পাবে। কিন্তু আদতে ছবিটি মাত্র ৭টি হল পেয়েছিল। এটাকে ‘ষড়যন্ত্র’ বলেও অভিযোগ করেছিলেন ছবির সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, ভালো গল্পের মানসম্মত সিনেমা হওয়া সত্ত্বেও ছবিটিকে হল-বঞ্চিত করা হয়েছে।

তৃতীয় সপ্তাহে ‘লিপস্টিক’ সিনেমার হল লিস্ট

সেই আক্ষেপই যেন বাস্তব হলো। তৃতীয় সপ্তাহে অর্থাৎ শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) থেকে দেশজুড়ে ৩১টি সিনেমা হলে চলবে আদর আজাদ ও পূজা চেরী অভিনীত ‘লিপস্টিক’। যা প্রথম সপ্তাহের চেয়ে চার গুণেরও বেশি! সহজেই আঁচ করা যায়, হল মালিকেরা ছবিটির মধ্যে সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছেন। তবে সেই সম্ভাবনা বাস্তবে ইতিবাচক ফল বয়ে আনে কিনা, তা জানা যাবে সপ্তাহের শেষে।

আদর আজাদ হল বাড়ার আভাস দিয়ে ক’দিন আগেই বলেছেন, “ঈদের আগে বলেছিলাম, আমাদের ‘লিপস্টিক’ দ্বিতীয় সর্বোচ্চ হল পাবে। এটা বলেছিলাম আমাদের কনটেন্টের জোরে। একটু দেরিতে হলেও কথা কিন্তু সত্য। দর্শকের আগ্রহ, হল মালিকদের চাহিদা, সিনেমাটির ইতিবাচক আলোচনা এবং সাংবাদিক ভাই-বোনদের সহযোগিতায় ২৬ এপ্রিল থেকে ছবিটির হলসংখ্যা কয়েকগুণ বেড়ে যাচ্ছে। বলেছিলাম, আমাদের কনটেন্টের দম আছে। আসলেই আছে। যারা যারা এখনও দেখতে পারেননি, দেখার পর এটাই বলবেন, শিওর।”

দুই সিনেমার হলসংখ্যা বাড়ার ফলে ঈদের অন্য ছবিগুলোর হল কমেছে, তা সহজেই আঁচ করা যায়। যেমন মিশুক মনি নির্মিত ‘দেয়ালের দেশ’ ঈদের দিন থেকে চলছিল ১৩টি প্রেক্ষাগৃহে। তৃতীয় সপ্তাহে এর দুটি হল কমে গেছে।

তৃতীয় সপ্তাহে ‘ওমর’ সিনেমার হল লিস্ট

এর বাইরে ‘রাজকুমার’ টিম এখনও তৃতীয় সপ্তাহের হললিস্ট প্রকাশ করেনি। তবে ছবিটি স্টার সিনেপ্লেক্সে দ্বিতীয় সপ্তাহেও ব্যবসার দিক থেকে শীর্ষে রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ও সিনেপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ।

এই ঈদে মুক্তি পাওয়া অন্য ছবিগুলো হলো গিয়াস উদ্দিন সেলিম পরিচালিত ‘কাজল রেখা’, কামরুজ্জামান রোমানের ‘মোনা: জ্বীন ২’, জাহিদ হোসেন পরিচালিত ‘সোনার চর’, ফুয়াদ চৌধুরীর ‘মেঘনা কন্যা’, জসিম উদ্দিন জাকিরের ‘মায়া: দ্য লাভ’, কাজী হায়াত পরিচালিত ‘গ্রিন কার্ড’ ও ছটকু আহমেদের ‘আহারে জীবন’। এর মধ্যে ‘জ্বীন ২’ ছাড়া কোনও ছবি তেমন সাড়া পায়নি।

;

সেন্সর বোর্ডের ওপর ক্ষুব্ধ রায়হান রাফী



বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
‘অমীমাংসিত’ সিনেমার পোস্টার ও রায়হান রাফী

‘অমীমাংসিত’ সিনেমার পোস্টার ও রায়হান রাফী

  • Font increase
  • Font Decrease

গত ক’বছর ধরে প্রেক্ষাগৃহ আর ওটিটি, দুই মাধ্যমেই সফলতা পেয়েছেন তরুণ নির্মাতা রায়হান রাফী। সেই নির্মাতাই প্রথমবার আটকা পড়লেন সেন্সর বোর্ডের জালে। আটকে গেলো তার ওয়েব সিনেমা ‘অমীমাংসিত’।

২৪ এপ্রিল বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড থেকে চূড়ান্ত রায় জানানো হলো, ছবিটি দর্শকদের সামনে প্রদর্শনযোগ্য নয়। তবে ৩০ দিনের মধ্যে আপিলের সুযোগ রয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ‘অমীমাংসিত’ নির্মাতা রায়হান রাফী। সেন্সর বোর্ডের এমন সিদ্ধান্তের বিপরীতে তার ভাষ্য, ‘বিষয়টি এমন হলো, আমরা সবাই ফেরেশতা, বাস করি বেহেশতে! এখানে কোনও খুন হয় না, কোনও গুম হয় না, কোনও ধর্ষণ হয় না।’

রাফীর ভাষায়, ‘সিনেমা বাস্তবের সাথে মিলে গেছে, তাই এটা মুক্তি দেওয়া যাবে না! সিনেমা হতে হবে অবাস্তব! বিষয়টা তাহলে এমন, কোনও সিনেমায় কোনও সাংবাদিক দম্পতি খুন হতে পারবে না? কাল্পনিক কাহিনি উল্লেখ করার পরেও যদি কোনও ঘটনার সাথে মিল খুঁজে পাওয়া যায়, তাহলে ব্যাপারটা এমন, ঠাকুর ঘরে কে রে? আমি কলা খাই না টাইপ।’

নির্মাতা রায়হান রাফী

এই নির্মাতার প্রশ্ন, ‘তাহলে কি সিনেমায় কোনও মেয়ে গুম হয়ে খুন হলে তা কুমিল্লার তনুর সাথে মেলানো হবে? সিনেমায় কোনও কিশোরের লাশ নদীতে পাওয়া গেলে তার সাথে নারায়ণগঞ্জের ত্বকী হত্যাকাণ্ডকে মেলানো হবে?’

নির্মাতার দাবি, ‘অমীমাংসিত’ সিনেমায় কোনও বাস্তব ঘটনার কিছুই প্রমাণ করা হয়নি। রাফী বলেন, ‘সিনেমায় কোনও খুন দেখানো যাবে না, কোনও ধর্ষণ দেখানো যাবে না, কোনও অপহরণ দেখানো যাবে না, কোনও গুম দেখানো যাবে না। আমরা সবাই ফেরেশতা, বাস করি বেহেশতে। এখানে কোনও খুন হয় না, কোনও গুম হয় না, কোনও ধর্ষণ হয় না। এভাবেই হাত পা বেঁধে সাঁতার কাটতে হবে আমাদের দেশের সিনেমাকে।’

২৪ এপ্রিল সেন্সর বোর্ডের উপপরিচালক মো. মঈনউদ্দীন স্বাক্ষরিত চিঠিতে জানানো হয় ‘অমীমাংসিত’ ছাড়পত্র না দেওয়ার পেছনের চারটি উল্লেখযোগ্য কারণ। সেগুলো হলো-

১. চলচ্চিত্রটিতে নৃশংস খুনের দৃশ্য রয়েছে।
২. কাল্পনিক কাহিনি, চিত্রনাট্য ও সংলাপের বিষয়বস্তু বাস্তবতার সঙ্গে মিল রয়েছে।
৩. এ ধরনের কাহিনি বাস্তবে ঘটেছে এবং ঘটনা সংশ্লিষ্ট মামলা উচ্চ আদালতে বিচারাধীন।
৪. চলচ্চিত্রটির কাহিনি/বিষয়বস্তু বিচারাধীন মামলার সঙ্গে মিল থাকায় ভুল বার্তা দিতে পারে এবং তদন্তে বিঘ্ন ঘটাতে পারে।

ছবিটির মুখ্য চরিত্রে আছেন তানজিকা আমিন

এছাড়া সেন্সর বোর্ডের সদস্যগণ আরও মতামত দেন যে ‘দ্য কোড ফর সেন্সরশিপ অব ফিল্মস ইন বাংলাদেশ, ১৯৮৫-এর ১-এর ও, ঠ, ঠওও দফায় বর্ণিত উপাদানসমূহ চলচ্চিত্রটিতে বিদ্যমান থাকায় এটি জনসাধারণের মধ্যে প্রদর্শন উপযোগী নয়। তাই বাংলাদেশ সেন্সরশিপ আইনের বিধি ১৬(৫) মোতাবেক উক্ত চলচ্চিত্রের সেন্সর আবেদনপত্র নির্দেশক্রমে অগ্রাহ্য করা হলো।

তবে, এই সিদ্ধান্ত-পত্র প্রাপ্তির ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে ছবিটি প্রদর্শনের বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য সরকার বরাবর আপিল আবেদন করার সুযোগ রয়েছে প্রযোজক-পরিচালকদের। ফজলুল হক ইনস্টিটিউট অব মিডিয়া স্টাডিজের পক্ষে ছবিটির প্রযোজক শহিদুল আলম সাচ্চু। এটি ইমপ্রেস টেলিফিল্মের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ওটিটি প্ল্যাটফর্ম আইস্ক্রিন-এর জন্য নির্মিত। ছবিটির মুখ্য চরিত্রে আছেন ইমতিয়াজ বর্ষণ ও তানজিকা আমিন।

;