যেসব কাজে গোনাহ মাফ হয়



ইসলাম ডেস্ক, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
যেসব কাজে গোনাহ মাফ হয়, ছবি: সংগৃহীত

যেসব কাজে গোনাহ মাফ হয়, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

তওবার মাধ্যমে যেকোনো মহাপাপী হয়ে যেতে পারে গোনাহমুক্ত। হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, ‘গোনাহ থেকে তওবাকারী গোনাহমুক্ত ব্যক্তির মতো।’ -সুনানে ইবনে মাজাহ: ৪২৫০

কোনো মুমিন গোনাহ করে বসে থাকতে পারে না। মুমিন বান্দা গোনাহ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তওবা করে নেয়। কোরআনে কারিম আল্লাহতায়ালা মুমিনের এ গুণের কথা বর্ণনা করেছেন এভাবে, ‘এবং তারা সেই সব লোক, যারা কখনও কোনো অশ্লীল কাজ করে ফেললে বা (অন্য কোনোভাবে) নিজেদের প্রতি জুলুম (গোনাহ) করলে সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং তার ফলশ্রুতিতে নিজেদের গোনাহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। আল্লাহ ছাড়া কেই বা আছে, যে গোনাহ ক্ষমা করতে পারে? আর তারা জেনেশুনে তাদের কৃতকর্মে অবিচল থাকে না। -সূরা আলে ইমরান: ১৩৫

আল্লাহতায়ালাও বান্দার তওবা কবুলের জন্য তার ক্ষমার হাত প্রসারিত করে রাখেন সর্বদা। হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘আল্লাহতায়ালা রাতে তার (ক্ষমার) হাত প্রসারিত করেন, যাতে দিনে যারা পাপ করেছে তারা তওবা করতে পারে। আর দিনে তার (ক্ষমার) হাত প্রসারিত করেন, যাতে রাতে যারা পাপ করেছে তারা তওবা করতে পারে। এভাবে (তার অবারিত ক্ষমা) চলতে থাকবে সূর্য পশ্চিম দিক থেকে উদিত হওয়া পর্যন্ত। -সহিহ মুসলিম: ২৭৫৯

গোনাহ যতবড়ই হোক না কেন, তওবার মাধ্যমে সব গোনাহ মুছে যায়। বিভিন্ন নেক (ভালো) আমলের দ্বারা সগিরা (ছোট) গোনাহগুলো মিটে যায়। আর তওবা সগিরা, কবিরা (বড়) গোনাহ মিটিয়ে দেয়। তবে স্মরণ রাখতে হবে মানুষে অধিকারের ব্যাপারে। অর্থাৎ যে কোনো মানুষের পাওনা থাকলে, তা বুঝিয়ে দিতে হবে অথবা তার থেকে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে তারপর আল্লাহ মাফ করবেন, তার আগে নয়। সুতরাং বান্দার হকের বিষয়ে সাবধান থাকা জরুরি।

নেক আমল পাপ মুছে দেয়
কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘তুমি নামাজ কায়েম করো দিনের দুই প্রান্তভাগে এবং রাতের প্রথমাংশে। অবশ্যই নেক আমল পাপসমূহ মিটিয়ে দেয়। যারা উপদেশ গ্রহণ করে, এ তাদের জন্য এক উপদেশ। -সূরা হূদ: ১১৪

সুতরাং নেক আমলের প্রতি যত্নবান হওয়া চাই। কোনো পাপ হয়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে তওবা করা চাই এবং নেক আমলের মাধ্যমে পাপ মিটিয়ে ফেলা চাই। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবী আবু যরকে (রা.) একবার এ উপদেশই দিয়েছেন। ইরশাদ করেন, ‘হে আবু যর! যেখানেই থাকো আল্লাহকে ভয় করো এবং কোনো পাপ হয়ে গেলেই নেক আমল করো, তা তোমার পাপ মিটিয়ে দেবে।’ -জামে তিরমিজি: ১৯৮৭

যে সব নেক আমল দ্বারা পাপ মিটে যায় এর অন্যতম হলো নামাজ। বর্ণিত আয়াতে সেদিকে ইশারা রয়েছে। নামাজের মাধ্যমে মাফ চাইলে আল্লাহ দ্রুত মাফ করেন। হজরত আবু বকর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেন, ‘কারও কোনো পাপ হয়ে গেলে সে যদি উত্তমরূপে অজু করে এবং দুই রাকাত নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে মাফ চায় আল্লাহ তাকে মাফ করে দেন।’ -মুসনাদে আহমাদ: ২

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মধ্যবর্তী গোনাহগুলো মিটিয়ে দেয়
যে ব্যক্তি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের ব্যাপারে যত্নবান তার কোনো গোনাহ থাকতে পারে না। একে তো নামাজি ব্যক্তি গোনাহ থেকে বেঁচে থাকতে চেষ্টা করবে, প্রতি নামাজেই গোনাহ থেকে মাফ চাইবে এবং গোনাহ থেকে বেঁচে থাকার সংকল্প করবে। তারপরও যদি কোনো গোনাহ হয়ে যায়, তাহলে আল্লাহতায়ালা নামাজের মাধ্যমে বান্দার গোনাহগুলো মিটিয়ে দেন। হাদিসে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেন, (তোমাদের কী মনে হয়?) কারও বাড়ির পাশে যদি নদী থাকে আর সে তাতে প্রতিদিন পাঁচ বার গোসল করে, তার শরীরে কি কোনো ময়লা থাকবে? সাহাবায়ে কেরাম উত্তরে বললেন, না; তার শরীরে কোনো ময়লা অবশিষ্ট থাকবে না। নবী করিম (সা.) তখন বললেন, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের দৃষ্টান্তও এরূপ। এর মাধ্যমে আল্লাহ (বান্দার) পাপসমূহ মিটিয়ে দেন। -সহিহ মুসলিম: ৬৬৭

অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, এক জুমা থেকে আরেক জুমা, এক রমজান থেকে আরেক রমজানের মধ্যবর্তী সময়ের গোনাহকে মিটিয়ে দেয়; যদি ওই ব্যক্তি কবিরা গোনাহ থেকে বেঁচে থাকে (ওই ব্যক্তির যদি কবিরা গোনাহ না থাকে)। -সহিহ মুসলিম: ২৩৩

অর্থাৎ কবিরা গোনাহ করলে সব গোনাহের কাফফারা হবে না বরং শুধু সগিরা গোনাহের কাফফারা হবে। কারণ, কবিরা গোনাহ তওবা ছাড়া মাফ হয় না (তেমনি বান্দার হকও, যা অন্য হাদিস থেকে বোঝা যায়)।

অজু গোনাহ ধুয়ে দেয়
নামাজের জন্য, কোরআন তেলাওয়াত বা অন্য কোনো আমলের জন্য আমরা অজু করি। নির্দিষ্ট অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ধৌত করি, অজুর মাধ্যমে পবিত্র হই। এই অজু কিন্তু মানুষের গোনাহগুলোও ধুয়ে দেয়। গোনাহের নাপাকি থেকে মানুষকে পবিত্র করে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন মুসলিম অজু করে, চেহারা ধোয়ার সময় পানির ফোঁটার সঙ্গে চোখের গোনাহগুলো ধুয়ে যায় (বর্ণনাকারী বলেন, অথবা নবী করিম সা. বলেছেন, পানির শেষ ফোঁটার সঙ্গে ধুয়ে যায়)। হাত ধোয়ার সময় হাতের গোনাহগুলো ধুয়ে যায়। পা ধোয়ার সময় পায়ের দ্বারা কৃত গোনাহগুলো ধুয়ে যায়। এভাবে বান্দা গোনাহ থেকে একেবারে পাক-সাফ হয়ে যায়। -সহিহ মুসলিম: ২৪৪

কষ্টের সময় উত্তমভাবে অজু করা গোনাহের কাফফারা
প্রচণ্ড শীতের রাতে অজু করা ভীষণ কষ্টের কাজ। এসন অবস্থায় যে পরিপূর্ণরূপে অজু করবে তার জন্য রয়েছে বিশেষ পুরস্কার। আর সেটা হলো- গোনাহ মিটে যাওয়া। বান্দার গোনাহ মিটে যাওয়ার চেয়ে বড় পুরস্কার আর কী হতে পারে? দীর্ঘ এক হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, ‘পাপ মোচনাকরী হলো- নামাজের পর (আরেক নামাজের অপেক্ষায়) মসজিদে অবস্থান করা, পায়ে হেঁটে মসজিদে গমন এবং কষ্টের মুহূর্তে পূর্ণরূপে অজু করা। -জামে তিরমিজি: ৩২৩৩

নামাজের জন্য মসজিদে গমন, কদমে কদমে গোনাহ মাফ
জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় আল্লাহতায়ালার কাছে অনেক প্রিয়। ফলে জামাতের নামাজের জন্য যে কদম আগে বাড়ে তা আল্লাহর কাছে পছন্দনীয়। জামাতে নামাজের জন্য আগে বাড়া প্রতিটি কদমের বিনিময়ে আল্লাহ বান্দার গোনাহ মাফ করেন এবং মর্যাদা বৃদ্ধি করেন। হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘জামাতের নামাজ ঘরের বা বাজারের নামাজ অপেক্ষা পঁচিশ গুণ বেশি সওয়াব রাখে। কারণ, বান্দা যখন উত্তমরূপে অজু করে এবং একমাত্র নামাজের উদ্দেশ্যেই ঘর থেকে বের হয় তো প্রতিটি কদমের বিনিময়ে আল্লাহ তার একটি করে মর্যাদা বৃদ্ধি করেন এবং একটি করে গোনাহ মিটিয়ে দেন। -সহিহ বোখারি: ৬৪৭

   

হজযাত্রীর কাছে নুসুক কার্ড না পেলেই আটক



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
নুসুক কার্ড, ছবি: সংগৃহীত

নুসুক কার্ড, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চলতি বছর নুসুক কার্ড ছাড়া কেউ হজ করতে পারবেন না। সৌদি সরকারের হজ ও উমরা মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়া হজযাত্রী প্রতিরোধ করতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

শনিবার (২৫ মে) ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি হজ এজেন্সির মালিকদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, জেদ্দা হজ অফিস থেকে এ সংক্রান্ত প্রাপ্ত পত্রের ছায়ালিপি পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

জেদ্দা হজ অফিস থেকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, মাশায়ের (মিনা, আরাফাত ও মুজদালিফ) এলাকাসহ মক্কা নগরীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে মক্কায় প্রবেশের তাসরিহ বা নুসুক কার্ড ছাড়া কাউকে পাওয়া গেলে প্রথমবার ১০ হাজার সৌদি রিয়াল অর্থদণ্ড এবং পুনরায় অপরাধে দ্বিগুণ জরিমানা ও কারাদণ্ডের বিধান করা হয়েছে। হজের অনুমতি নেই, এমন কোনো ব্যক্তিকে পরিবহন করা হলে পরিবহনকারীকে ছয় মাসের কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার সৌদি রিয়াল জরিমানা করা হবে।

এ ছাড়া মিনা ও আরাফাতে হাজির তাঁবুতে নুসুক কার্ড ছাড়া কাউকে পাওয়া গেলে তাকে অর্থদণ্ড আরোপ এবং দেশে প্রত্যাবর্তনের মতো শাস্তি প্রদানের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এরূপ কর্মের সহযোগিতাকারীকেও শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হবে।

হজের অনুমতি নেই কিংবা নুসুক কার্ডবিহীন কাউকে মাশায়েরে পরিবহন করলে গাড়িচালকসহ উভয়েই শাস্তির আওতায় আসবেন। ই-হজ সিস্টেমে ভাড়াকৃত বাড়ি বা হোটেলে হাজি আবাসন না করে অন্যত্র হাজি আবাসন করা হলে অথবা সিস্টেমে এক হোটেল এন্ট্রি দিয়ে অন্য হোটেলে হাজি ওঠানো হলে এজেন্সি বা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হবে।

ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ডিজিটাল এই নুসুক কার্ডে সংশ্লিষ্ট হজযাত্রীর প্রয়োজনীয় সব তথ্য মজুদ থাকবে এবং হজের জন্য পবিত্র কাবার প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে চাইলে এই কার্ড অবশ্যই প্রদর্শন করতে হবে। হজের অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা পালনেও বিভিন্ন জায়গায় কার্ডটি দেখাতে হবে।

;

মক্কায় প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ রাস্তা ও ইবাদতের স্থান



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
প্রতিবন্ধীদের জন্য নির্ধারিত মসজিদে হারামের ৯১ নম্বর গেট, ছবি: সংগৃহীত

প্রতিবন্ধীদের জন্য নির্ধারিত মসজিদে হারামের ৯১ নম্বর গেট, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আগে থেকে ব্যবস্থা থাকলেও চলতি হজ মৌসুমে মক্কার মসজিদে হারামে অসুস্থ, বয়স্ক ও বিশেষভাবে অক্ষম প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে হারামাইন পরিচালনা পরিষদ। তাদের দেখাশোনা, রাস্তা দেখানো ও যেকোনো ধরনের সাহায্যের জন্য বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত ২ শতাধিক গাইড নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

এবার মসজিদে হারামের কয়েকটি স্থান বিভিন্ন শ্রেণির প্রতিবন্ধীদের জন্য সংরক্ষিত করা হয়েছে, যাতে তাদের ইবাদত-বন্দেগি ও চলাচলে কোনো অসুবিধায় পড়তে না হয়।

সৌদি আরবের সরকারি বার্তা সংস্থা এসপিএ জানিয়েছে, মসজিদে হারামে চলাচলে অক্ষম প্রতিবন্ধীদের হুইলচেয়ারের জন্য বিশেষ পথ তৈরি করা হয়েছে। সেই সঙ্গে যেখানে তাদের বসার স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে, সেখানে পানিসহ অন্যান্য সুবিধা দেওয়া হয়েছে।

পুরুষ ও নারী প্রতিবন্ধীদের জন্য মসজিদে হারামে পৃথক তিনটি স্থান সংরক্ষিত রয়েছে, যা প্রধান ফটকের কাছে। ফলে তাদের যাতায়াতের ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হবে না। জায়গাগুলো হলো- মসজিদে হারামের ৯১ নম্বর গেট এবং আল শাবাকা ব্রিজের কাছে ৬৮ নম্বর গেট (নিচতলায়)।

মসজিদে হারামে প্রতিবন্ধীদের চলাচলে রয়েছে আলাদা ব্যবস্থা, ছবি: সংগৃহীত

আর নারীদের হুইলচেয়ার ব্যবহার করার জন্য বাদশাহ ফাহাদ এক্সটেনশনের গেট নম্বর ৮৮ এবং নিচতলার গেট নম্বর ৬৫ ছাড়াও মাতাফের (কাবা চত্বর) সামনে নামাজের জন্য একটি স্থান (মুসাল্লা নম্বর ১৫) সংরক্ষিত ঘোষণা করা হয়েছে, যেখানে হুইলচেয়ারসহ নারীরা আরামে বসতে পারেন৷

এ ছাড়া বয়স্কদের জন্য ডিজিটাল কোরআন এবং অন্ধদের জন্য ব্রেইল সংস্করণ ছাড়াও শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধীদের জন্য সাংকেতিক ভাষায় জুমার খুতবার শোনার বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে।

;

সোমবার ছায়াশূন্য কাবার দেখা মিলবে



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
সোমবার ছায়াশূন্য কাবার দেখা মিলবে, ছবি: সংগৃহীত

সোমবার ছায়াশূন্য কাবার দেখা মিলবে, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সোমবার পবিত্র কাবা ঘরের ঠিক ওপরে উঠে আসবে সূর্য। ওই সময়ে ছায়াশূন্য পবিত্র কাবার দেখা মিলবে।

জ্যোতির্বিদরা জানিয়েছেন, সোমবার (২৭ মে) স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ১৮ মিনিটে পবিত্র কাবার ঘরের ঠিক ওপর সূর্য থাকবে। বছরের দুইবার এমন ঘটনা ঘটলেও চলতি বছরে প্রথমবারের মতো এ ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে।

আল আরাবিয়া নিউজকে জেদ্দা অ্যাস্ট্রোনোমিক্যাল সোসাইটির প্রধান মাজেদ আবু জাহরা জানিয়েছেন, সোমবার দুপুর নাগাদ মক্কার পবিত্র কাবা ঘরের সঙ্গে সূর্য একই লাইনে অবস্থান করবে। এ সময় সূর্যের কেন্দ্রবিন্দুটি কাবার ঠিক ওপরে উঠে আসবে।

জ্যোতির্বিদরা জানিয়েছেন, সূর্যের এই অবস্থানকে ‘ছায়াশূন্য’ (জিরো শ্যাডো) অবস্থা বলেই চিহ্নিত করেন মহাকাশ বিজ্ঞানীরা। বছরে অন্তত দুইবার পবিত্র মক্কা নগরীর ক্ষেত্রে এই ঘটনা ঘটে। প্রতিবছর ২৭ বা ২৮ মে ছাড়াও ১৫ বা ১৬ জুলাই তারিখে একই ঘটনা ঘটে থাকে। পবিত্র কাবাঘরটি বিষুবরেখা ও কর্কটক্রান্তির মাঝে অবস্থিত হওয়ার কারণেই এমনটা ঘটে।

তারা আরও জানান, মক্কায় সোমবার ভোর ৫টা ৩৮ মিনিটে সূর্যোদয় হবে। উত্তরপূর্ব দিকটি থেকে সূর্য ধীরে ধীরে ওপরে উঠতে শুরু করবে। সে কারণে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য হলেও পবিত্র এই মসজিদ ঘরের কোনো দিকে কোনো ছায়া থাকবে না।

পৃথিবীর অক্ষরেখায় সূর্য ২৩.৫ ডিগ্রি কৌণিক অবস্থান নিয়ে বিষুব রেখার উত্তর ও দক্ষিণ দিকে ঘুরতে থাকে।

এভাবে একবার উত্তর গোলার্ধে একবার দক্ষিণ গোলার্ধে যায়। আর এই আসা যাওয়ার পথে বছরে দুইবার সরাসরি ওপরে অবস্থান নিয়ে পবিত্র কাবাকে ছায়াশূন্য করে দেয়।

জ্যোতির্বিদ আবু জাহরা আরও জানান, কাঠের কোনো কাঠি মাটিতে লম্বালম্বী করে মানুষ কাবার সঠিক দিক নির্ধারণ করতে পারবে। এর মাধ্যমে কিবলার দিকটি কাঠির ছায়ার ঠিক বিপরীতে দেখতে পাবে।

;

হজযাত্রীদের জন্য ২ শতাধিক বিশেষ গাইড, সাড়ে ৩ হাজার বাস



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
শায়খ সুদাইস এক হজযাত্রীকে উপহার দিচ্ছেন, ছবি: সংগৃহীত

শায়খ সুদাইস এক হজযাত্রীকে উপহার দিচ্ছেন, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আসন্ন হজে মসজিদ হারাম এবং মসজিদে নববিতে আগত বয়স্ক, প্রতিবন্ধী এবং অসুস্থদের বিশেষ যত্ন ও সেবার লক্ষে বিশেষ দল নিয়োগ করা হয়েছে।

হারামাইন প্রেসিডেন্সির উদ্যোগে চলতি হজ মৌসুমে ‘ইনসানিয়্যুন’ মানবিক উদ্যোগ শিরোনামে এই কর্মসূচি পারিচালিত হবে। এর মাধ্যমে হজযাত্রীদের অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ হবে। যারা অসুস্থ, বয়স্ক এবং প্রতিবন্ধী- তারা নির্বিঘ্নে ও আরামের সঙ্গে গ্র্যান্ড মসজিদ এবং মসজিদে নববি পরিদর্শন, জিয়ারত ও ইবাদত-বন্দেগি পালন করতে পারবেন।

মসজিদে হারাম এবং নববির ধর্ম বিষয়ক প্রধান শায়খ আবদুর রহমান আস-সুদাইস এই কর্মসূচি উদ্বোধন করে বলেন, ‘মানবতাবাদী উদ্যোগের লক্ষ্য হলো- আচরণ উন্নত করা এবং প্রেসিডেন্সি কর্তৃক প্রদত্ত পরিষেবাগুলোকে বিভিন্ন সেক্টর এবং বিভাগজুড়ে বিস্তৃতি করা। আমরা সব ধরনের হজযাত্রীদের জন্য একটি উপযুক্ত উপাসনার পরিবেশ উপহার দিতে চাই। আমাদের উদ্দেশ্য, মুসলমানদের উদার মনোভাব বাড়ানো এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে সেবার মান উন্নত করা।’

এই উদ্যোগের জন্য বিশেষভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ২ শ গাইড নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যারা এই শ্রেণির হজযাত্রীদের ধর্মীয় চাহিদা মেটাতে প্রযুক্তি, মেধা ব্যবহার করবে। তারা অসুস্থ, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী হজযাত্রীদের ধর্মীয়ভাবে সচেতনতা বৃদ্ধি ও দিকনির্দেশনার জন্য নিবিঢ়ভাবে কাজ করবে।

এ সময় তিনি বলেন, হজপালনকারীদের সেবা দিতে ধর্মীয় বিষয়ক সংস্থার পক্ষ থেকে কোনো অবহেলা সহ্য করা হবে না।

তিনি আরও বলেন, হারামাইনের ধর্মবিষয়ক অধিদপ্তর হজ মৌসুমে বিভিন্ন দেশ থেকে আগত হজযাত্রীদের জন্য বিভিন্ন ভাষায় বিষয়ভিত্তিক ধর্মীয় পুস্তিকা তৈরি করেছে, যা হজযাত্রীদের দেওয়া হবে।

মিনা-আরাফাতের জন্য সাড়ে ৩ হাজার বাস : সৌদি আরবে হজ ব্যবস্থাপনায় সেন্ট্রাল ট্রান্সপোর্ট অথরিটি চলতি হজের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। ঘোষণায় বলা হয়, হাজিদের পরিবহনের জন্য ৩ হাজার ৫০০টি বাস প্রস্তুত। এসব বাস চলতি হজ মৌসুমে মসজিদে হারামের চারপাশে অবস্থিত ৯টি স্টেশন থেকে চলাচল করবে। বাসগুলো হজযাত্রীদের মিনা ও আরাফাতে আনা-নেওয়া করবে। এ জন্য ১২টি রুট নির্ধারণ করা হয়েছে।

;