ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও বিচার, পর্ব-৩

একমাত্র ট্রাইব্যুনালে সারা দেশের চাপ



নাজমুল আহসান রাজু, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রংপুরের পীরগাছা উপজেলা থেকে মেয়ের জন্য রাজধানী ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে এসেছিলেন আবুল খায়ের (৫০)। উচ্চ মাধ্যমিকে পড়া তার মেয়ের নামে ফেসবুকে ভুয়া আইডি খোলা এবং অশ্লীল ছবি ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগে ট্রাইব্যুনালে মামলা করতেই এতোটা পথ পাড়ি দেন তিনি। কারণ, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনেই পীরগাছা থানায় মামলা করার সুযোগ থাকলেও তার ফল পাওয়া সময় সাপেক্ষ। এভাবে তার মতো অনেকেই দূর দূরান্ত থেকে মামলা করতে আসেন পুরান ঢাকার এই বিশেষ আদালতে।

তদের একজন লক্ষীপুরের চন্দ্রগঞ্জ থানার দিঘলী গ্রামের নুর আলম ছিদ্দিক। ২০১২ সালে তিনি বিয়ে করেন। তিন সন্তানের বাবা নুর আলম ছিদ্দিক জীবিকার তাগিদে থাকেন কক্সবাজারে। বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে তিনি জানান, বিয়ের আগে থেকে তার স্ত্রীর সঙ্গে কামাল উদ্দিন নামের এক ব্যক্তির প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু পরিবার সম্মত না থাকায় কামাল উদ্দিনের সঙ্গে বিয়ে হয়নি। পারিবারিক সম্মতিতে নুর আলম ছিদ্দিকের সঙ্গে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে কামাল উদ্দিন তার স্ত্রীকে উত্যক্ত করার পাশাপাশি ‘কুপ্রস্তাব’ দিয়ে আসছিল। এরমধ্যে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারিরীক সম্পর্ক গড়েন কামাল উদ্দিন। ২০১৪ সালে শারীরিক সম্পর্কের একটি ভিডিও করে দিনের পর দিন ভয় ভীতি দেখাতে থাকেন। এক পর্যায়ে নুর আলম ছিদ্দিক বিষয়টি জানতে পারেন। তাই ঢাকায় এসেছেন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করতে। মামলার জন্য এ নিয়ে তাকে ১০ দিন ঢাকায় আসতে হয়েছে। গত জুলাইয়ে মামলার পর তদন্তের জন্য চন্দ্রগঞ্জ থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। 

আরও পড়ুন: সাত বছরে ২৬৫১ মামলা সাজা ১৫টিতে

পুলিশের ফাইনাল রিপোর্টেই শেষ ৩৩৪ মামলা

সারা দেশের জন্য রাজধানী ঢাকায়ই একটিমাত্র সাইবার ট্রাইব্যুনাল থাকায় আবুল খায়ের ও নুর আলম ছিদ্দিকের মতো অনেককেই ঢাকায় আসতে হচ্ছে বিচারের জন্য। অথচ এ সংক্রান্ত দুই আইনেই বলা আছে, সরকার চাইলে একাধিক সাইবার ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে।

এমন পরিস্থিতিতে রাজধানীর এই একটি ট্রাইব্যুনালেই চলছে সব মামলার বিচার। যেখানে রয়েছে এজলাস সংকট। সাত বছর আগে যাত্রা শুরুর পর থেকেই দুর্নীতির মামলার বিচারে গঠিত বিশেষ জজ আদালতের এজলাস ভাগাভাগি করে চলে আসছে বিচার কাজ। পূর্ণকালীন বিচার কার্যক্রম চলেনি একদিনও। আধাবেলার বিচারে সামলাতে হচ্ছে সারাদেশের মামলার চাপ। এতে বিচারপ্রার্থী মানুষকেও দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে দিনের পর দিন।

একটি মামলার শুরু থেকে অভিযোগ গঠন, হাজিরা ও সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যন্ত নানা ধরনের পরিস্থিতিতে পড়তে হয় উভয়পক্ষকে। মামলা সংশ্লিষ্ট বাদী ও স্বজনদের রাজধানীর বাইরে থেকে দিনের পর দিন ঢাকায়় আসতে হয়। আদালতে আসার পর এজলাস না থাকায় বসারও সুযোগ পান না তারা, ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকেন। অনেক সময় সাক্ষ্য না দিয়েই চলে যেতে হয় সাক্ষীদের।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, সারা দেশের জন্য একটিমাত্র ট্রাইব্যুনাল। আর্থিকভাবে যারা দুর্বল তাদের কষ্ট বেশী। কারণ মামলা করতে ছুটতে হয় ঢাকায়। সীমাহীন দুর্ভোগের মধ্যেও তারা ঢাকায় যান। এটা অমানবিক। একাধিক ট্রাইব্যুনাল করা হলে এ দুর্ভোগ থাকবে না।

সাত বছর আগে ঢাকার পাশাপাশি চট্টগ্রামে সাইবার ট্রাইব্যুনাল গঠনের ঘোষণা আসে জাতীয় সংসদে।

২০১২ সালের ১৯ নভেম্বর প্রশ্নোত্তর পর্বে তখনকার আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেছিলেন, সাইবার অপরাধের বিচারের জন্য দেশে প্রথমবারের মতো ঢাকা ও চট্টগ্রামে দুটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হচ্ছে। এরপর ঢাকায় সাইবার ট্রাইব্যুনাল হলেও চট্টগ্রামে হয়নি। মাঝে প্রত্যেক বিভাগীয় শহরে ট্রাইব্যুনাল গঠনের একাধিক ঘোষণাও আসে। 

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের আইন বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে জানান, শিগগিরই সাত বিভাগীয় শহরে সাইবার ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম শুরু হবে। সচিব কমিটি অনুমোদন দিয়েছে। আনুষ্ঠানিকতা শেষে পদায়ন করা হবে। এজলাস সংকটের ব্যাপারে তিনি বলেন, আমি সদ্য যোগদান করেছি। খোঁজ খবর নেওয়ার পর এ বিষয়ে বলা যাবে।

ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত ভবনের ষষ্ঠতলায় সাইবার ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম চলে। যেদিন বিশেষ জজ আদালতের সারাদিন বিচার কাজ চলে সেদিন আর বসা হয়না ট্রাইব্যুনালের বিচারকের। অপেক্ষায় থাকতে হয় কখন বিশেষ জজ আদালতের কার্যক্রম শেষ হবে তার। সাধারণত বেলা দুইটার পর ২ ঘণ্টার জন্য বসেন সাইবার ট্রাইব্যুনাল। ফলে সারাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা বিচারপ্রার্থীরা ভোগান্তিতে পড়েন। বেশি দুর্ভোগে পোহাতে হয় নারী বিচারপ্রার্থীদের।

এ ট্রাইব্যুনালের বিচারকের জন্য খাস কামরা রয়েছে। গুরত্বপূর্ণ মামলার নথিসহ পেশকারের বসার জায়গা ভবনের পশ্চিম কোনের মালামালের কক্ষে। আদালতের সেরেস্তা নেই। ডিজিটাল মাধ্যমের অপরাধের জন্য গঠিত ট্রাইব্যুনাল অথচ প্রযুক্তিগত সুবিধা অনুপস্থিত। পেশকারের কক্ষে ঢোকার আগে আছে পাবলিক প্রসিকিউটরের কক্ষ, যা থাই গ্লাস দিয়ে তৈরি।

এ ট্রাইব্যুনাল প্রসঙ্গে কথা হয়, সাবেক আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদের সঙ্গে। তিনি বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য আদালতের কার্যক্রম। সেখানে একটি মাত্র ট্রাইব্যুনালের কারণে যদি দূরদুরান্ত থেকে আসা বিচার প্রার্থীদের ফিরে যেতে হয় সেটা কাম্য নয়। বিচারপ্রার্থীদের সুবিধার্থে প্রয়োজনীয় ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠা করা উচিত। মামলার যদি শুনানি না হয় তাহলে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হবে না। আর মুলতবি যদি একবার হয় তাহলে মামলার শুনানি ঝুলে যায়।

ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম (শামীম) এজলাস সংকট প্রসঙ্গে বলেন, গত সাত বছর অপর একটি আদালতের এজলাস ভাগাভাগি করতে হয়েছে। এ সমস্যার সমাধান হতে যাচ্ছে। আগের পুরাতন জেলা জজ আদালতের ষষ্ঠ তলায় এজলাস হবে। হয়তো দুইমাসের মধ্যে সেখানে সাইবার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর হবে। এজলাস পেলে প্রয়োজনীয় সকল কিছুই পাওয়া যাবে।

   

পরিবেশরক্ষায় গাছ কাটা নিয়ন্ত্রণে হাইকোর্টের রুল



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পরিবেশ রক্ষায় রাজধানীসহ সারা দেশের গাছ কাটা নিয়ন্ত্রণে কমিটি গঠনের কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না-তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

মঙ্গলবার (৭ মে) বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার সমন্বয়ে গঠিত একটি বেঞ্চ এ আদেশ দেন। পরিবেশ সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র এডভোকেট মনজিল মোরসেদ।

পরিবেশ রক্ষায় রাজধানীসহ সারা দেশের গাছ কাটা বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে ৫ মে রিট দায়ের করা হয়। জনস্বার্থে মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) এ রিট দায়ের করে।

তাপমাত্রা অত্যধিক বৃদ্ধি ও জনজীবন অতিষ্ঠ হওয়ার মধ্যেও বিভিন্ন এলাকায় হাজার হাজার গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে মর্মে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করে রিটটি দায়ের করা হয়।

আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য ঢাকা শহরে যে পরিমাণ গাছপালা থাকা দরকার তা দিন দিন কমছে। তিনি বলেন, সম্প্রতি তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে মানুষের জীবনযাত্রা আরও দুর্বিষহ হয়ে উঠছে, যার কারণে সুষ্ঠুভাবে বেঁচে থাকার অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। অন্যদিকে সামাজিক বনায়ন চুক্তিতে সারা দেশে লাগানো গাছগুলো কেটে ফেলার কারণে পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হচ্ছে যা বন্ধ না হলে বাংলাদেশের পরিবেশ বিপর্যয় ঘটবে ও মানুষের বেঁচে থাকার অধিকার মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

;

অর্থপাচার মামলায় ফরিদপুরের পৌর মেয়র ও কাউন্সিলরের জামিন



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দুই হাজার কোটি টাকা পাচারের মামলায় ফরিদপুর পৌরসভার মেয়র অমিতাভ বোস ও ওয়ার্ড কমিশনার গোলাম মো. নাসিরকে জামিন দিয়েছেন আদালত। একই সাথে ফরিদপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী শামসুল আলম চৌধুরীর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (৭ মে) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আস সামছ জগলুল হোসেনের আদালতে আসামিরা আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক ফরিদপুর পৌরসভার মেয়র অমিতাভ বোস ও ওয়ার্ড কমিশনার গোলাম মো. নাসিরকে জামিন ও ফরিদপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী শামসুল আলম চৌধুরীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী শাহিনুর ইসলাম এতথ্য নিশ্চিত করে বলেন, এই মামলায় সম্প্রতি আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন আদালত।

দুই হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে ২০২০ সালের ২৬ জুন রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলাটি দায়ের করেন সিআইডির পরিদর্শক এস এম মিরাজ আল মাহমুদ।

২০২১ সালের ৩ মার্চ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির সহকারী পুলিশ কমিশনার (এএসপি) উত্তম কুমার সাহা ১০ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন। গত বছর ১ সেপ্টেম্বর মামলাটি চার্জ গঠন বিষয়ে শুনানির জন্য ছিল। কিন্তু সেদিন মামলাটিতে কিছু অসংগতি দেখতে পাওয়ায় আদালত সুয়ো মোটো (স্বপ্রণোদিত) ভাবে সিআইডিকে পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দেন।

 সেই নির্দেশনা মেনে নতুন করে আরও ৩৬ জনকে আসামি করে মোট ৪৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় সিআইডি। রুবেল-বরকত ছাড়াও উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন, সাবেক স্থানীয় সরকার মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের আপন ভাই খন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবর, তার এপিএস সত্যজিৎ মুখার্জী, ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম খন্দকার লেভী, শহর যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসিবুর রহমান ফারহান, খোন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবর, এএইচএম ফুয়াদ, ফাহাদ বিন ওয়াজেদ ওরফে ফাহিম, কামরুল হাসান ডেভিড, মুহাম্মদ আলি মিনার ও তারিকুল ইসলাম ওরফে নাসিম।

সম্পূরক চার্জশিটের নতুন আসামিরা হলেন, নিশান মাহমুদ ওরফে শামীম, মো. বিল্লাল হোসেন, মো. সিদ্দিকুর রহমান ওরফে সিদ্দিক, মো. সাইফুল ইসলাম জীবন, অ্যাডভোকেট অনিমেশ রায়, শামসুল আলম চৌধুরী, দীপক কুমার মজুমদার, শেখ মাহতাব আলী, সত্যজিৎ মুখার্জি, মো. শহীদুল ইসলাম ওরফে মজনু, ফকির মো. বেলায়েত হোসেন, গোলাম মো. নাছিম, মো. জামাল আহমেদ ওরফে জামাল, বেলায়েত হোসেন মোল্লা, মো. আফজাল হোসেন খান ওরফে শিপলু, অমিতাব বোস, চৌধুরী মো. হাসান, মো. জাফর ইকবাল ওরফে হারুন মন্ডল, বরকতের স্ত্রী আফরোজা আক্তার পারভীন, রুবেলের স্ত্রী সোহেলী ইমরুজ পুনুম, সাহেব সারোয়ার, আমজাদ হোসেন বাবু, স্বপন কুমার পাল, অ্যাডভোকেট জাহিদ ব্যাপারী, খলিফা জামাল, হাফিজুল হোসেন তপন, রিয়াজ আহমেদ শান্ত, আনোয়ার হোসেন আবু ফকির, মো. মনিরুজ্জামান মামুন, মাহফুজুর রহমান, সুমন সাহা, মো. আব্দুল জলিল শেখ, মো. রফিক মন্ডল, খন্দকার শাহীন আহমেদ ওরফে পান শাহীন, আফজাল হোসেন খান ও সাংবাদিক মোহাম্মাদ আরিফুর রহমান ওরফে দোলন।

;

মনজিল হত্যা মামলা: সৎ মা-ভাইসহ ৬ জনের যুক্তিতর্ক অব্যাহত



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানী বাড্ডার আফতাবনগরে নিজ ফ্ল্যাটে ও লেভেল পড়ুয়া একেএম মনজিল হক হত্যা মামলায় সৎ মা লায়লা ইয়াসমিন লিপি ও ভাই একেএম ইয়াসিন হকসহ ৬ জনের পক্ষে যুক্তিতর্ক অব্যাহত রয়েছে।

মঙ্গলবার (৭ মে) দুপুরে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের আদালত আসামিদের যুক্তিতর্ক রেকর্ড করেন।

আসামিদের আইনজীবী রেজাউল করিম যুক্তিতর্ক উত্থাপন করেন, তবে এদিন তা শেষ না হওয়ায় আগামী ৪ জুন পরবর্তী তারিখ ধার্য করেছেন আদালত।

এর আগে গত ৩০ এপ্রিল রাষ্ট্রপক্ষ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করেন। ওইদিন আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে দাবি করে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড প্রার্থনা করেন।

সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আজাদ রহমান এতথ্য নিশ্চিত করেন।

এ নিয়ে মামলাটিতে ৪২ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন আদালত।

মামলার অপর আসামিরা হলেন, সৎ মামা আবু ইউসুফ নয়ন, মামলার বাদী চাচা ফারুক মিয়া, রবিউল ইসলাম সিয়াম ও সিমান্ত হোসেন তাকবীর । মাহফুজুল ইসলাম অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তার বিচার শিশু আদালতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আসামিদের মধ্যে ইয়াসিন ও সিয়াম কারাগারে। সিমান্ত হোসেন তাকবীর জামিনের। অপর তিন আসামি শুরু থেকে পলাতক রয়েছে।

জানা যায়, ২০১৭ সালের ১১ ডিসেম্বর রাজধানী বাড্ডার আফতাবনগরে নিজ ফ্ল্যাটে হত্যার শিকার হন ও লেভেল পড়ুয়া মনজিল হক (২৮)। হত্যাকাণ্ডের পর চাচা ফারুক মিয়া বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের নামে মামলা করেন।

পরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) তদন্তে উঠে আসে সম্পত্তির লোভে মনজিলকে সৎ মা লায়লা ইয়াসমিন লিপি, সৎ মামা আবু ইউসুফ নয়ন ও সৎ ভাই একেএম ইয়াসিন হক (২৫) ও মামলার বাদী চাচা ফারুক মিয়া (৫৮) হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা।

২০২১ সালের ২৬ অক্টোবর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন সিআইডি পুলিশের ইন্সপেক্টর মো. শামসুদ্দিন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, বাদী ফারুক ও নিহত মনজিলের বাবা আপন বড় ভাই। তারা একই সঙ্গে গার্মেন্টসের ব্যবসা করতেন। শান্তিনগর বাজারের পিছনে মনার ছেলে মনজিল এবং ইয়াসিন ও ফারুকের ছেলে নিজেদের যৌথ নামে একটি ফ্ল্যাট ছিল। কিন্তু মনা ওই ফ্ল্যাটটি তার ছেলেদের দিয়ে দলিল করিয়ে বিক্রি করে দেয়। এ নিয়ে নিহতের বাবার সঙ্গে ফারুকের দ্বন্দ্ব ছিল। নিহতের বাবার মারা যাওয়ার পর সেই ক্ষোভ মনজিলের ওপর ছিল। ওই ক্ষোভ থেকেই মনজিলকে হত্যার পরিকল্পনায় ভাতিজা ইয়াসিনের সঙ্গে চাচা ফারুক যোগ দেয়।

;

বিচারকের স্বাক্ষর জাল

দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলার প্রতিবেদন দাখিল হয়নি



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিচারকের স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া সার্টিফিকেট দিয়ে মোটরযান ফেরত দেওয়ার অভিযোগে করা মামলায় প্রতিবেদন দাখিল পিছিয়ে আগামী ৯ জুন ধার্য করেছেন আদালত।

মঙ্গলবার (৭ মে) মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। তবে এদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতয়ালী থানার সাব-ইন্সপেক্টর সাইফুল ইসলাম প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেননি।

ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রশিদুল আলমের আদালত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নতুন করে এই তারিখ ধার্য করেন।

আসামিরা হলেন- মোটরযান শাখার ইনচার্জ সাব-ইন্সপেক্টর ফুয়াদ উদ্দিন এবং কনস্টেবল আবু মুছা।

২০২৩ সালের ৫ সেপ্টেম্বর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১০ এর বেঞ্চ সহকারি ইমরান হোসেন কোতয়ালী থানায় এ মামলা দায়ের করেন।

মামলায় অভিযোগ থেকে জানা যায়, ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শেখ সাদী ১০ নং আদালতের পাশাপাশি মোটরযান সম্পর্কিত মামলা পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত। গত ২৪ সেপ্টেম্বর আড়াইটার দিকে মোটরযান শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত ইনচার্জ এসআই ফুয়াদ উদ্দিন অন্যান্য নথির সঙ্গে নন এফআইআর দুটি মামলা বিচারকের কাছে উপস্থাপন করেন। কিন্তু আসামি না থাকায় বিচারক কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি।

পরবর্তীতে বিচারক জানতে পারেন, মামলা দুটির জব্দকৃত আলামত মোটরযান শাখার ইনচার্জ ফুয়াদ উদ্দিন ও জিআরও আবু মুছা তাদের অন্যান্য সহযোগীদের যোগসাজসে বিচারকের স্বাক্ষর জাল করে পরোয়ানা ফেরত কাগজে ম্যাজিস্ট্রেটের স্বাক্ষরের জায়গায় নিজেরা স্বাক্ষর প্রদান করে মোটরযান আসামিদের দিয়ে দেয়।

মামলায় আরও বলা হয়, মোটরযান শাখার ইনচার্জ এসআই ফুয়াদ উদ্দিন ও জিআরও আবু মুছা তাদের অন্যান্য সহযোগীদের যোগসাজসে দীর্ঘ দিন ধরে বিচারকের স্বাক্ষর জাল করে একই ধরনের অপরাধ করে আসছেন।

;