কোন পশু কোরবানি দেওয়া জায়েজ, কোনটি নয়

  • মুহাম্মদ ইমদাদুল হক ফয়েজী, অতিথি লেখক, ইসলাম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর একটি পশুর হাট | ছবি: সুমন শেখ

রাজধানীর একটি পশুর হাট | ছবি: সুমন শেখ

ঈদুল আজহার অন্যতম ইবাদত পশু কোরবানি। এটি রাসূল সা. ও তাঁর উম্মতের জন্য বিশেষ বৈশিষ্ট্য ও মর্যাদার প্রতীক।

কোরবানির ফজিলত সম্পর্কে রাসূল সা. ইরশাদ করেন—'আল্লাহ তায়ালার নিকট কোরবানির দিন মানবজাতির কোরবানি অপেক্ষা অধিকতর পছন্দনীয় কোনো আমল নেই। বিচারদিনে কোরবানির পশুকে তার শিং, পশম ও খুরসহ উপস্থিত করা হবে। পশুর রক্ত জমিনে পড়ার পূর্বেই আল্লাহ তায়ালার নিকট তা বিশেষ মর্যাদায় পৌঁছে যায়, সুতরাং তোমরা আনন্দচিত্তে কোরবানি করো।' (সহিহ তিরমিযি: ১৩৯১)

বিজ্ঞাপন

আসুন, জেনে নিই কোন কোন পশু কোরবানি করা যাবে ও কোন কোন পশু কোরবানি করা যাবে না।

যেসব পশু কোরবানি করা যাবে:
কোরবানির জন্য ৬টি পশু নির্দিষ্ট। যথা- গরু, মহিষ, উট, ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা। এগুলো ব্যতীত অন্য কোনো পশু দিয়ে কোরবানি আদায় হবে না।

বিজ্ঞাপন

ছাগল ও ভেড়ার জন্য ১ বছর, গরু ও মহিষের জন্য ২ বছর এবং উটের জন্য ৫ বছর বয়স হওয়া আবশ্যক। অবশ্য, ভেড়া যদি মোটাতাজা হয়, যা দেখতে ১ বছরের মনে হয় তবে সেটি দিয়েও জায়েজ।

উল্লেখ্য, উপরোল্লিখিত ৬ প্রকারের বন্ধ্যা পশুও কোরবানি দেওয়া জায়েজ।

ত্রুটিযুক্ত পশু দিয়ে কোরবানির বিধান:
যে পশুর কান বা দৃষ্টিশক্তি এক তৃতীয়াংশের কম নষ্ট বা কাটা পড়েছে, তা কোরবানি দেওয়া জায়েজ। এক তৃতীয়াংশ বা তার বেশি হলে জায়েজ নয়।

যে পশুর লেজ অর্ধেকের বেশি আছে তা কোরবানি করতে কোনো অসুবিধা নেই। এর বিপরীত হলে জায়েজ নয়।

যে পশুর শিং মোটেই ওঠেনি তা কোরবানি দেওয়া জায়েজ। যদি শিং গোড়ায় ভেঙে যায় এবং এর ক্ষতি মস্তিষ্ক পর্যন্ত পৌঁছে তবে তা দিয়ে কোরবানি আদায় হবে না।

যে পশুর দাঁত মোটেই ওঠেনি বা অর্ধেক পড়ে গেছে তা কোরবানি দেওয়া যাবে না।

যে পশুর জন্মগতভাবে কান নেই তা কোরবানি দেওয়া যাবে না।

যে পশুর জিহবা এ পরিমাণ কাঁটা যে, ঘাস-পাতা খেতে পারে না, তা কোরবানি দেওয়া যাবে না।

যে পশু তিন পা দিয়ে চলে, এক পা মাটিতে রাখতে পারে না বা রাখতে পারে কিন্তু এটি দিয়ে চলতে পারে না, তা কোরবানি দেওয়া যাবে না।

যে পশুর স্তন কাঁটা বা জখম হওয়ার কারণে বাচ্চাকে দুধ পান করাতে পারে না তা দিয়ে কোরবানি বৈধ নয়।

জেনেশুনে চুরিকৃত পশু ক্রয় করা এবং তা কোরবানি করা জায়েজ নয়।

হিজড়া পশু কোরবানি করা জায়েজ নয়।

ত্রুটিহীন পশু ক্রয় করার পর তাতে যদি এমন কোনও ত্রুটি জন্ম নেয়, যা কোরবানি শুদ্ধ হওয়ার জন্য প্রতিবন্ধক, তবে নেসাব পরিমাণ সম্পদের অধিকারী ব্যক্তির জন্য এ রূপ পশু দিয়ে দিয়ে কোরবানি বৈধ নয়, দরিদ্র ব্যক্তির জন্য বৈধ।

গর্ভবতী পশু কোরবানি করা মাকরুহ।

আল্লাহ তায়ালা আমাদের সহিহ-শুদ্ধ নিয়তে পবিত্র সম্পদ থেকে সঠিকভাবে কোরবানির তাওফিক দান করুন।