উন্নয়নের বার্তা নিয়ে ‘পায়রা পাড়ে’ যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী
পটুয়াখালী (পায়রা) থেকে: পদ্মা সেতু, পায়রা সমুদ্র বন্দর, শেখ হাসিনা সেনানিবাস ও বঙ্গোপসাগরের ব্লু ইকোনমিকে ঘিরে যে অমিত সম্ভাবনার দুয়ার উন্মোচিত হয়েছে তাতে নতুন জীবনের স্বপ্ন দেখছে দক্ষিণাঞ্চলের বিশাল জনপদ। এই জনপদের মানুষের সে স্বপ্নপূরণে চলছে ব্যাপক অবকাঠামো নির্মাণ কাজ।
এসব প্রকল্পের নির্মাণ কাজ পরিদর্শন, ভিত্তপ্রস্তর স্থাপন ও উদ্বোধনে কাল শনিবার (২৭ অক্টোবর) দক্ষিণের দুইজেলা পটুয়াখালী ও বরগুনা সফরে আসছেন স্বপ্নপূরণের অগ্রদূত আওয়ামী লীগ সভপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সরেজমিনে দেখা যায়, ঢাকা থেকে মুন্সীগঞ্জ, শরিতপুর, মাদারীপুর, বরিশাল, পটুয়াখালী মহাসড়ক জুড়ে শুধুই উন্নয়নের মহাকর্মজজ্ঞ। কোথাও ফোর লেন নির্মাণের কাজ চলছে, কোথাও চলছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ব্রিজ কালভার্ট নির্মাণ কাজ। বিশাল বিশাল ক্রেন, ঢালাই দেওয়া পিলার মহাসড়কের বুক চিড়ে দাঁড়িয়ে আছে। উন্নয়নের সাইড ইফেক্টে মহাসড়কগুলো খানাখন্দে ভরা, এবরো থেবরো।
জানা গেছে, ২০১৩ সালের ১৮ নভেম্বর পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার টিয়াখালী ইউনিয়নে রামনাবাদ চ্যানেলের পশ্চিম তীরে ১৬ একর জমির উপর পায়রা সমুদ্রবন্দর নির্মাণের কাজ শুরু হয়। বাংলাদেশের তৃতীয় এবং দক্ষিণ এশিয়ার সামুদ্রিক বন্দর পায়রাকে ভিত্তি করে দক্ষিণ জনপদেও সামগ্রিক উন্নয়নে যোগ হচ্ছে নতুন মাত্রা। ক্ষমতাসীন সরকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যে ১০টি মেগাপ্রকল্প নিয়ে কাজ করছে তার মধ্যে একটি পায়রা ‘গভীর সমুদ্র বন্দর’, এবং পদ্মা সেতু। পদ্মা বহুমখী সেতু হয়ে পায়রা বন্দর পর্যন্ত রেল যোগাযোগ নিশ্চিতের ঘোষণাও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। জাতীয় অগ্রগতির মাইলফলকে পায়রা বন্দরকে ঘিরে আগামী দিনে দক্ষিণ জনপদ হয়ে উঠবে অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র। বন্দরটি পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হলে উপকূলীয় এলাকার হাজার হাজার যুবকের জন্য সৃষ্টি হবে কর্মসংস্থান।
সে সঙ্গে নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড (এনডব্লিউপিজিসিএল) পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রীডে যুক্ত হয়ে এই জনপদের জীবনের গতিকে দেবে নতুন মাত্রা। আবার তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাশে নির্মাণ হয়েছে ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য পুনর্বাসন প্রকল্প “স্বপ্নের ঠিকানা”। যেটি হবে এশিয়ার মধ্যে পুনর্বাসন প্রকল্পের একটি ইউনিক রোল মডেল। এখানে বসবাসের জন্য সকল নাগরিক সুবিধা থাকছে। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে অর্জিত আয়ের মাধ্যমে স্বপ্নের ঠিকানা’র রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নিয়েছে বাংলাদেশ চায়না পাওয়ার (প্রাঃ) কোম্পানি লিমিটেড।
এখানে থাকবে একটি কারিগরি স্কুল। এই দক্ষ জনশক্তি যেন বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও বিদেশে সুনামের সহিত কাজ করতে পারে সেই লক্ষ্যে এখানকার শিক্ষার্থীদের পাঁচটি ভাষা শিক্ষা দেওয়া হবে।
আগামী ২৭ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পুনর্বাসন প্রকল্প “স্বপ্নের ঠিকানা” উদ্বোধনসহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিফলক স্থাপন ও উন্মোচন করবেন শেখ হাসিনা।
পটুয়াখালী ও বরগুনা সফরের উদ্দেশ্যে শনিবার সকাল ১০টায় ঢাকার তেজগাঁ বিমানবন্দর থেকে হেলিকপ্টার যোগে রওনা দিবেন প্রধানমন্ত্রী।