ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসন ঠেকাতে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে চলমান অস্থিরতা নিরসনের লক্ষ্যে আগামী এক সপ্তাহব্যাপী ফ্যাসিবাদবিরোধী সকল ছাত্রসংগঠনের সমন্বয়ে ‘জাতীয় ছাত্র সংহতি সপ্তাহ’ পালনের ঘোষণা দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) রাতে রাজধানীর বাংলামোটরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জরুরি বৈঠক করে সব ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে। বৈঠক শেষে এই ঘোষণা দেন তিনি।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আমরা গত কয়েক দিন যাবত দেখছি আওয়ামী ফ্যাসিবাদীদের পুনর্বাসনে নানা ষড়যন্ত্র চলছে। এমনকি একইসময়ে বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক আন্দোলন শুরু হয়েছে। ছাত্র পরিচয়ে লুঙ্গি পরা ব্যক্তিরাও এসে শিক্ষার্থীদের পিটাচ্ছে, যাদেরকে যে কেউ দেখলেই বুঝতে সক্ষম তারা কারা। আমরা দেখেছি রিকশাচালকদের আন্দোলনেও ছাত্রলীগ উসকানি দিয়েছে এবং সহিংস পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করেছে। তাই আজকে আমরা সকল ছাত্রসংগঠন একমত হয়েছি যে, আগামী এক সপ্তাহ আমরা ‘জাতীয় ছাত্র সংহতি সপ্তাহ’ পালন করবো।
তিনি বলেন, গত ১৬ বছরের দুঃশাসনে আওয়ামী লীগ টাকা পাচার করে দেশের ব্যাংকগুলোকে খালি করেছে। আপনারা জানেন একজন এমপিরও বিদেশে ৩ শতাধিক বাড়ি রয়েছে। আমরা আজকের বৈঠকে সকলেই ঐকমত্য হয়েছি যে, দ্রুততম সময়ে সেসব এমপি-মন্ত্রীদের সকল সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে হবে। আমরা দেখছি বিদেশে বসেও তারা দেশবিরোধী নানা ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। তাদের সকল সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা না হলে, এভাবে তারা ষড়যন্ত্র করতেই থাকবে এবং একের পর এক দেশে নানা বিশৃঙ্খলা তৈরি করবে। তাই আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাই, দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার ব্যবস্থা নিতে হবে।
হাসনাত বলেন, বাংলাদেশে যে দাবির আন্দোলনের মৌসুম চলছে, তাতে আওয়ামী লীগের ব্যপক অর্থায়ন রয়েছে। কোনো ফরমেটেই আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসিত হতে দেয়া যাবে না। জিরো টলারেন্স টু আওয়ামী লীগ।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আমানুল্লাহ আমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস, ঢাবি ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি এসএম ফরহাদ, স্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্রসংসদের সভাপতি জামালুদ্দিন মোহাম্মদ খালিদ, ইসলামী শাসনতন্ত্রের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল মুনতাসির আহমদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান হোসাইন নূর ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় সম্পাদক খায়রুল আহসান মারজান, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, সেক্রেটারি নাজমুল হাসান, ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মশিউর রহমান খান রিচার্ড আর সেক্রেটারি সৈকত আরিফ প্রমুখ।
আর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ, মুখ্য সংগঠক আবদুল হান্নান মাসউদ ও মুখপাত্র উমামা ফাতেমা উপস্থিত ছিলেন।
চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে মিথ্যা ঘোষণায় প্রায় ১০ কোটি টাকা শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আমদানি হওয়া বিলাসবহুল ‘নিশান সাফারি’ ব্র্যান্ডের একটি গাড়ি জব্দ করেছে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর পশ্চিম খুলশীর রোজভ্যালি আবাসিকের হাছান টাওয়ার-১ থেকে জব্দ করা হয়। গাড়ির নম্বর লিখা ছিল- ঢাকা মেট্রো-ঘ-১৫-২৩২৪। ওই গাড়ির ওপরে ‘নিশাল পেট্রোল’ লোগো লাগিয়ে চালানো হচ্ছিল। বিআরটিএতেও নেই গাড়ি আমদানি সংক্রান্ত তথ্য।
বিষয়টি বার্তা২৪.কমকে নিশ্চিত করেছেন কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. মিনহাজ উদ্দিন।
তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পশ্চিম খুলশী রোজভ্যালি আবাসিকের একটি বাসা থেকে নিশাল সাফারি ব্রান্ডের ৫৬শ সিসির একটি গাড়ি জব্দ করা হয়েছে। গাড়িটি নিবন্ধিত হলেও বিআরটিএতে আমদানি সংক্রান্ত কোনো ডকুমেন্ট পাওয়া যায়নি। এতে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে গাড়িটি আমদানি ও নিবন্ধন নেওয়া হয়েছে। নিয়ম মাফিক গাড়িটির মোট শুল্ক ৮২৭ শতাংশ। এতে প্রায় ১০ কোটি টাকা শুল্ককর হওয়ার কথা। যেহেতু ডকুমেন্ট পাওয়া যায়নি, তাতে বুঝতে পারা যায় শুল্ক ফাঁকি দিয়ে গাড়িটি আমদানি করা হয়েছে।
রাতে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ১৭ নভেম্বর চট্টগ্রাম নগরীর পশ্চিম খুলশী রোজভ্যালি আবাসিকের হাছান টাওয়ার-১ থেকে নিশান ব্রান্ডের গাড়িটি আটক করা হয়। গাড়িটি ২০১৫ মডেলের। কিন্তু গাড়িটির গায়ে নিশাল পেট্রোল লেখা থাকলেও চেসিস নম্বর দিয়ে ওয়েবসাইটে সার্চ করে গাড়িটি নিশান সাফারি হিসেবে নিশ্চিত হওয়া যায়। ওই দিন গাড়িটির আমদানি সংক্রান্ত কোনো ডকুমেন্ট দেখাতে না পারায় মালিকের প্রতিনিধি মো. পারভেজ উদ্দিনের জিম্মায় গাড়িটি রাখা হয়।
মালিকের প্রতিনিধি একটি হলফনামা উপস্থাপন করেন। তাতে দেখা যায়, ওসমান গনি মেঘনা সিডস ক্রাসিং লিমিটেড থেকে দেড় কোটি টাকায় গাড়িটি ক্রয় করেছেন। যাবতীয় কাগজপত্র বুঝে পেয়েছেন এবং সরকারি রাজস্ব সংক্রান্ত কোনো জটিলতার উদ্ভব হলে তিনি তার সম্পূর্ণ দায়-দায়িত্ব বহন করবেন। কিন্তু কাস্টমস গোয়েন্দা টিমের কাছে তিনি গাড়ি আমদানি সংক্রান্ত দলিলাদি উপস্থাপন করতে পারেননি। মেঘনা সিডস ক্রাসিং লিমিটেডের প্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারাও আমদানি কিংবা ক্রয় সংক্রান্ত কোনো দলিলাদি খুঁজে পায়নি বলে কাস্টমস গোয়েন্দা টিমকে জানায়।
পরবর্তী সময়ে বিআরটিএতে যোগাযোগ করেও গাড়িটি আমদানির কোনো তথ্য না পাওয়ায় এটি শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আমদানি করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। সোমবার ২৫ নভেম্বর কাস্টমস গোয়েন্দা টিম গাড়িটি জব্দ করে চট্টগ্রাম কাস্টমস গুদামে জমা দেয়।
নরসিংদীর পলাশে ট্রলি ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে সাকিব ও সিয়াম নামে দুই বন্ধু নিহত হয়েছে।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় পলাশ উপজেলার ডাংগা ইউনিয়নের দৃষ্টিনন্দন সড়কে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত সাকিব (১৮) ডাংগা ইউনিয়নের তালতলা গ্রামের ফারুক মিয়ার ছেলে ও সিয়াম (১৮) এক ইউনিয়নের কেন্দুয়াব গ্রামের মজিবুর রহমানের ছেলে।
নিহতদের স্বজন ও স্থানীয়রা জানান, আজ সন্ধ্যায় তালতলা এলাকা থেকে সাকিব ও সিয়াম নামে দুই বন্ধু মোটরসাইকেল করে ঘোড়াশালের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। পরে সন্ধ্যা ৬টার দিকে সান্তানপাড়ার দৃষ্টিনন্দন সড়কে বিপরীত দিক আসা ইট বোঝাই ট্রলির সাথে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে সড়কের পাশে ছিটকে পড়ে দুই বন্ধু। পরে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় সাকিবের। গুরুতর আহত অবস্থায় সিয়ামকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যায় সে-ও। এ ঘটনার পর ট্রলি চালক পালিয়ে গেলেও ট্রলিটি জব্দ করা হয়।
নরসিংদী সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার মনির হোসেন জানান, সিয়ামকে মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে আনার পর তাকে স্যালাইন ও অক্সিজেন দেওয়া হয়। ১৫ মিনিট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর সিয়াম মারা যায়।
পলাশ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: শহিদুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে সুরতহাল তৈরী করা হয়েছে। নিহতদের পরিবারের সাথে কথা বলে এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সবুজবাগের ভাইকদিয়ার একটি মাছের ঘের থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় খালি ম্যাগাজিনসহ একটি পিস্তল উদ্ধার করেছে ডিএমপির সবুজবাগ থানা পুলিশ।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) রাত ৭টা ৪৫ মিনিটের দিকে ভাইকদিয়ার আব্দুর রাজ্জাক (৩৫) এর মাছের ঘের থেকে খালি ম্যাগাজিনসহ পিস্তলটি উদ্ধার করে পুলিশ।
ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সবুজবাগ থানা সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার ভাইকদিয়ার একটি মাছের ঘেরে অভিযান পরিচালনা করে পরিত্যক্ত অবস্থায় খালি ম্যাগাজিনসহ একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়।
এ সংক্রান্তে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।