নির্বাচনী হাওয়া ছাপাখানাগুলোতেও!

  • মনি আচার্য্য, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

বেড়েছে ছাপাখানার ব্যস্ততা

বেড়েছে ছাপাখানার ব্যস্ততা

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে দেশের ছোট বড় সব রাজনৈতিক দল। আর তাই ভোটের দৌঁড়ে এগিয়ে থাকতে প্রচারণার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন সব প্রার্থী। ফলে কর্মতৎপরতা বেড়েছে রাজধানীর ছাপাখানাগুলোতে। নির্বাচনী পোস্টার ও লিফলেট ছাপাতেই এখন ব্যস্ত ছাপাখানার শ্রমিকরা। সকাল ৬টায় এসব কারখানায় কর্মচঞ্চলতা শুরু হয়, যা চলতে থাকে রাত ৩-৪টা পর্যন্ত।

জানা গেছে, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ না করায় অনেকটা ফাঁকা মাঠে গোল দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতাই ১৫৪ জন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। যেসব আসনে নির্বাচন হয় সেটাও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ছিল না। তাই নির্বাচনী প্রচারণায় তেমন নজর দিতে হয়নি কোনো প্রার্থীকে। ফলে নির্বাচনী পোস্টার ছাপানোরও প্রয়োজন না হওয়ায় ছাপাখানার ব্যবসা তেমন ভালো যায়নি।

বিজ্ঞাপন

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Dec/11/1544526598783.jpg

সোমবার (১০ ডিসেম্বর) রাজধানীর ফকিরাপুল গরম পানি গলির কয়েকটি ছাপাখানায় গিয়ে কর্মীদের বেশ কর্মচঞ্চল দেখা গেছে। সবাই নির্বাচনী পোস্টার ও লিফলেট ছাপানোর কাজে মনোযোগী। পোস্টার ছাপানোর এই কর্মযজ্ঞ শুধুমাত্র করখানাগুলোতেই সীমাবদ্ধ নয়। এই কর্মচঞ্চলতার রেশ পড়েছে ওই গলির রাস্তায়। একদিকে, কারখানায় মেশিনে ‘খট’ ‘খট’ শব্দে পোস্টার ছাপানো হচ্ছে, অন্যদিকে রাস্তায় হুড়াহুড়ি। এ সময় রাস্তার ওপর ভ্যান কিংবা রিকশায় পোস্টার উঠানোর চিত্র লক্ষ্য করা যায়।

বিজ্ঞাপন

সরেজমিনে দেখা গেছে, ছাপাখানাগুলোতে জার্মানির অত্যাধুনিক ‘সর্ক’ মেশিনে চলছে পোস্টার ছাপানোর কাজ। কর্মচারীরা রিমরিম সাদা কাগজ লোড করছেন মেশিনে, আর তা নিমেষেই সুন্দর নির্বাচনী পোস্টার হয়ে বের হচ্ছে। একই গলিতে ‘নৌকা’, ‘ধানের শীষ’ থেকে শুরু করে নানা প্রতীকের প্রার্থীদের পোস্টার ছাপানোর কাজ চলছে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Dec/11/1544526613658.jpg

ছাপাখানার মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ছাপাখানাগুলোতে ৫ হাজার মানুষ কর্মরত আছেন। সবাই নির্বাচনকে সামনে রেখে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। কেননা নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীরা ১১ ডিসেম্বর থেকে নামছেন আনুষ্ঠানিক প্রচারণায়। নির্ধারিত সময়ে পোস্টার সরবরাহ করতে শ্রমিকদের কাজ করতে হচ্ছে দিনরাত। এছাড়া ছাপার উপকরণ কাগজ, কালি, আঠা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে রাখতে হচ্ছে নিয়মিত যোগাযোগ। কাজ বেড়েছে গ্রাফিক্স ডিজাইনারদেরও। প্রার্থীদের চাহিদা অনুসারে বিভিন্ন আকারের ডিজাইন তৈরিতে ব্যস্ত তারা। তবে কাজের চাপ বাড়লেও বাড়তি আয়ে খুশি সবাই।

ছাপাখানার মালিকরা জানিয়েছেন, নির্বাচন আসলেই তাদের বড় ব্যবসার লক্ষ্য থাকে। প্রতীক বরাদ্দ হওয়া পর থেকে কাজের চাপ বেড়েছে কয়েক গুণ। কিন্তু গত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় পোস্টার ছাপানোর কাজ তেমন পায়নি ছাপাখানাগুলো।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Dec/11/1544526630238.jpg

উদ আর্ট প্রেসের ব্যবস্থাপক মো. শাহাদাত হোসেন বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ‘গত নির্বাচনে ২০ হাজার পোস্টারও ছাপানোর অর্ডার পাইনি। তবে এবার ইতোমধ্যে ২ লাখ পোস্টার ছাপানোর অর্ডার পেয়েছি। নির্বাচনী মৌসুম হওয়ায় সকাল ৬টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত আমাদের পোস্টার ছাপানোর কাজ চলছে। এবার ৩ আওয়ামী লীগ ও ৩ বিএনপি প্রার্থীর পোস্টার ছাপাচ্ছি। প্রতি পিস পোস্টার ছাপাতে নেওয়া হচ্ছে ২ টাকা ৫০ পয়সা করে।’

আশরাফ প্রেসের মালিক মো. শরিফ বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ‘আমাদের এখন প্রচুর কাজের চাপ। কিশোরগঞ্জ-২ আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী নূর মোহাম্মদসহ ৫ জন প্রার্থীর ২ লাখ পোস্টার ছাপানোর কাজ পেয়েছি। মঙ্গলবার এসব পোস্টার প্রার্থীদের হাতে তুলে দিতে হবে। ১২ জন দক্ষ কর্মী নিয়ে রাতদিন চলছে পোস্টার ছাপানোর  কাজ।’