চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা নিরসনে ১৩টি খাল সংস্কার হচ্ছে

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চট্টগ্রাম, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা নিরসনে সেনাবাহিনীর ক্যাম্পের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন অতিরিক্ত পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজহার সিদ্দিকী, ছবি: বার্তা২৪.কম

চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা নিরসনে সেনাবাহিনীর ক্যাম্পের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন অতিরিক্ত পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজহার সিদ্দিকী, ছবি: বার্তা২৪.কম

চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে খাল খনন ও সংস্কার করার কথা জানিয়েছে এ প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। জলাবদ্ধতা নিরসনে ১৩টি খাল আসন্ন বর্ষা শুরুর আগেই সংস্কারের কথা জানিয়েছেন তারা।

শনিবার (৪ মে) ওয়াসা মোড়ে সেনাবাহিনীর ক্যাম্পের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা জানান প্রকল্পের অতিরিক্ত পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজহার সিদ্দিকী।

বিজ্ঞাপন

প্রকল্পে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, যে সমস্ত খাল ভরাটের কারণে শহরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় এমন ১৩টি খাল সংস্কারেরর কাজ চলছে। একইসঙ্গে স্থানীয় প্রতিনিধি ও জনগণকে এসব কাজে সম্পৃক্ত করার মধ্যে দিয়ে কাজ এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। আপাতদৃষ্টিতে এ বছরে নাগরিকরা পুরোপুরি জলাবদ্ধতা থেকে মুক্ত না হলেও এর স্থানীয় সমাধানে কাজ করা হচ্ছে বলেও জানানো হয়।

চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খান পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন' শীর্ষক প্রকল্প মতবিনিময় সভায় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ), ওয়াসা, পানি উন্নয়ন বোর্ড, কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন, সিটি করপোরেশনসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

বিজ্ঞাপন

জানা যায়, চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রধানমন্ত্রী ২০১৭ সালে সাড়ে পাঁচ হাজারের বেশি কোটি টাকা বরাদ্দ দেন। সেনাবাহিনী এসব কাজের দায়িত্ব পান। দেড় বছর হতে চললেও পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো কার্যত অগ্রগতি নেই বলে অভিযোগ করে আসছেন।

সভার শুরুতে বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজহার সিদ্দিকী সাংবাদিকদের জানান, নগরীর খালগুলো অবৈধভাবে ভরাট, দূষণ করার হওয়ায় জোয়ারের পানি ঢুকে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করছে। এছাড়া নগরীর মধ্যেকার ড্রেনেজ ও খাল দখল, স্থাপনা নির্মাণের কারণেও এর স্থায়ী সমাধান পাওয়া যাচ্ছে না। এক্ষেত্রে জলাবদ্ধতার জন্য দায়ী এমন ১৩টি খাল সংস্কারের করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে স্থানীয় কাউন্সিলরের সঙ্গে বৈঠক করে সমস্যা চিহ্নিত করে সাতদিনের মধ্যে সমাধানের কাজ করা হচ্ছে।

তিন ধাপের মাধ্যমে বাকিগুলো খনন ও পরিস্কার করা হবে। এছাড়া জলাবদ্ধতা দেখা দিলে ওয়ার্ডভিত্তিক রেসপন্স টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিরসনে  কাজ করবে।

তিনি আরও জানান, জলাবদ্ধতা নিরসনে আরেকটি প্রকল্প হিসেবে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) এক হাজার ৭০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নদী পাড়ে রাস্তা নির্মাণ করবে। এটি একনেকে অনুমোদনের পরে জমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু হবে। ফলে ভবিষ্যতে খাল দূষণ এবং ভরাট রোধ করা সম্ভব হবে।

অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম খাল দখল ও দূষণ, জলাবদ্ধতার কারণ, বর্তমান কাজের অগ্রগতি, সুপারিশ, প্রস্তাবনা বিষয়ে প্রামাণ্যচিত্র দেখানো হয়। সভায় অংশ নিয়ে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ( সিডিএ) প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস নিয়মিত কর্ণফুলী নদী ড্রেজিং না হলে জলাবদ্ধতার নিরসন সম্ভব নয় বলে জানান। তিনি জলাবদ্ধতার জন্য সিডিএকে এককভাবে দোষারোপ না করে লোকবলের অভাব ও জনগণের আইন না মানার প্রবণতার কথা উল্লেখ করেন।

এ সময় সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে খাল ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণে সিডিএর অনুমোদন বিষয়ে কঠোর হওয়ার কথা জানানো হয়।

সভার শেষে সরকারের গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রমজানে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, শতভাগ বাধ খুলে দেওয়াসহ বেশ কিছু সিদ্ধান্তের মাধ্যমে জলাবদ্ধতা স্থায়ী সমাধানের বিষয় তুলে ধরা হয়।