আলীর স্বপ্নপূরণের দায়িত্ব নিলেন মনদীপ ঘরাই
মোহাম্মদ আলী। বাড়ি রংপুর। পিতা পক্ষাঘাতগ্রস্ত। অভাবের সংসার থেকে একরকম যুদ্ধ করেই এবছর এসএসসি পরীক্ষায় ৪.৮৩ জিপিএ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে।
অনেকের মতো সেও মঙ্গলবার (২৮ মে) এসেছে ভিন্নধর্মী আয়োজনে। ঢাকার মোহাম্মদপুরে বসেছিল অন্যরকম এক মিলনমেলা। দুই শতাধিক এসএসসি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়েছিল সেখানে। ভালো কলেজে ভর্তির স্বপ্ন তাদের চোখে-মুখে। ওদের সবাই অস্বচ্ছল পরিবারের।
মেধাবী এই শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন পূরণের দায়িত্ব নিয়েছে সামাজিক সংগঠন ঘুড্ডি ফাউন্ডেশনের উদ্যোগ ‘বর্ণ’ এডুকেশন কেয়ার। ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠানে মেধাবী শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা যোগাতে অতিথি হিসেবে যোগ দেন সিনিয়র সহকারী সচিব মনদীপ ঘরাই। “বর্ণ” এর এই মহৎ উদ্যোগে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখতে দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থী আলীর কলেজে ভর্তির স্বপ্ন পূরণের দায়িত্ব নেন তিনি।
বর্ণ এর শিক্ষা কার্যক্রম চলা পর্যন্ত আগামী ছয় মাস আলীর জন্য অর্থ দেবেন মনদীপ ঘরাই। আলীকে এ মাসের অর্থ হাতে তুলে দিয়ে মনদীপ ঘরাই বলেন, “ বর্ণ এর পরিচালক সাইফুর সাহেবের সাথে আমার পরিচয় আমাদের এক পরিচিতজনের মাধ্যমে।সব ভালো কাজে প্রেরণা দিতে সাধ্যমতো চেষ্টা করি,তাই এক ডাকে ছুটে চলে এসেছি। সেই সাথে আর্থিক দিক দিয়ে অস্বচ্ছল এই মেধাবীদের একটা বার্তা দিতে চেয়েছি যে, ওদের পাশে আছি সবসময়। আমি চাই এই আলীই একদিন সফল হয়ে অন্য কারো পাশে দাঁড়াবে।”
এ বিষয়ে বর্ণ এর পরিচালক সাইফুর বলেন, “ বর্ণ একটা স্বপ্নের নাম। আমার চেষ্টাই থাকে ওদেরকে সফল হিসেবে দেখবার। আমার চারপাশের সবার অংশগ্রহণ আর আমাদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আমরা স্বপ্নযাত্রায় এগিয়ে যেতে চাই।“
অনুষ্ঠান দেখতে আসা একটি আইটি ফার্মের স্বত্বাধিকারী ইব্রাহিম সিকদার বলেন, “ মনদীপ স্যারকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছি। আমিও আমার সাধ্যমতো বর্ণের সাথে থাকতে চাই।“
বর্ণ এই শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে হোস্টেল ও ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষা সহায়তা দিয়ে থাকে। স্বচ্ছল শিক্ষার্থীরাও বর্ণের সাথে যুক্ত হতে পারে, তবে তাদের পড়াশোনা করতে হয় পুরো খরচ দিয়ে।
একজন দরিদ্র শিক্ষার্থীর কলেজে ভর্তি পর্যন্ত ব্যয় ধরা হয়েছে দশ হাজার টাকা।
সরকারি কর্মকর্তা মনদীপ ঘরাই সমাজের নানান শুভ কাজে অবদান রেখে চলছেন। তার লেখা বইয়ের লভ্যাংশের পুরো টাকা উৎসর্গ করেছেন পথশিশুদের শিক্ষা সহায়তায়, নববর্ষ ভাতার পুরো টাকাটা দিয়েছেন পথশিশুদের নববর্ষ উদযাপনে।