শিক্ষক সংকট, ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান
লক্ষ্মীপুর: বিদ্যালয়ে রয়েছে শিক্ষক সংকট। নেই প্রধান শিক্ষকও। ভবন সংকটও রয়েছে। যার কারণে ঝুঁকিপূর্ণ দুটি সেমিপাকা ভবনে চলছে পাঠদান। টিনের চালায় বড় বড় ফুটো। রোদ-বৃষ্টিকে সঙ্গী করেই পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। যেকোনো সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে প্রাণহানির শঙ্কা রয়েছে। সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকেন অভিভাবকরা। এ করুণ অবস্থা লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার পূর্ব করইতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের।
তবে চলতি অর্থবছরে বিদ্যালয়ের অবকাঠামোর উন্নয়নের আশ্বাস দিচ্ছেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মোল্লা।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে চলছে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম। ৭ জন শিক্ষক থাকার কথা থাকলেও আছেন ৪ জন। এরমধ্যে একজন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। এতে শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। পড়াশোনায়ও পিছিয়ে পড়ছে শিক্ষার্থীরা।
এদিকে গত ৫ বছরে সমাপনী পরীক্ষায় শতভাগ পাসের রেকর্ড গড়েছে বিদ্যায়লটি। কিন্তু শিক্ষক সংকটের কারণে ভবিষ্যতে পাসের হার নিয়ে চিন্তিত অভিভাবকরা।
এদিকে বিদ্যালয়টিতে একটি পাকা ভবন ও দুটি সেমিপাকা ভবন রয়েছে। এরমধ্যে সেমিপাকা ভবন দুটিই জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ। দেয়ালের পলেস্তরাও খসে পড়ছে। চালায় বড় বড় ফুটো। বৃষ্টি এলেই বই খাতা ভিজে যায়। পাঠদানও বন্ধ থাকে। তপ্তরোদে গরমে অস্বস্তিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় শ্রেণিকক্ষে। এছাড়াও নিরাপদ স্যানিটেশন ব্যবস্থা না থাকায় স্বাস্থ্যহানির শঙ্কা রয়েছে। বিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য নেই সীমানা প্রাচীর।
জানা গেছে, ১৮৯১ সালে বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। এখানে একটি পাকা ও দুটি ঝুঁকিপূর্ণ সেমিপাকা ভবন রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির জমির পরিমাণ ৫০ শতাংশ। এরমধ্যে ২০ শতাংশ জমিতে জলাশয় রয়েছে। মাটি ভরাটের অভাবে খেলাধুলার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শ্রেণিকক্ষে চালা থেকে তাদের গায়ে ময়লা পড়ে। বৃষ্টির সময় শ্রেণিকক্ষে পানি পড়ে তাদের বই-খাতা ভিজে যায়। এ কারণে পাঠদান সম্ভব হয়না। গরমের কারণেও শিক্ষার্থীদের অস্বস্তিতে পড়তে হয়।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. জামাল উদ্দিন জানান, বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকটে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। এতে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়ছে। সমস্যাগুলোর বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এখনো পর্যন্ত অবকাঠামোগত উন্নয়নে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি।
সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মোল্লা জানান, শিক্ষক সংকটের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। খুব শিগগিরই শূন্যপদগুলো পূরণ করা হবে। এছাড়া বিদ্যালয়ের দুটি ভবনের ৪টি শ্রেণিকক্ষ জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ। আশা করি এই অর্থবছরেই এ সমস্যার সমাধান হবে।