শ্রম অধিদফতরের নির্দেশনা মানছে না গ্রামীণ টেলিকম!
ঢাকা: শ্রমিকদের সঙ্গে বিবাদ মেটাতে গ্রামীণ টেলিকম কর্তৃপক্ষকে সালিসি সভায় বসার নির্দেশনা দিয়েছে শ্রম অধিদফতর। কিন্তু ওই নির্দেশনা মানছে না প্রতিষ্ঠানটি। ফলে শ্রমিক অসন্তোষ বাড়ছে।
শ্রম অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, গ্রামীণ টেলিকমের কর্মীরা ইনক্রিমেন্ট, শ্রম আইন অনুযায়ী কর্মী নিয়োগ, শ্রম আইনের ২৩২ ধারা অনুযায়ী লভ্যাংশ প্রদানসহ ১২ দফা দাবি আদায়ে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন।
প্রতিষ্ঠানটির কর্মীদের অভিযোগ, প্রায় তিন বছর ধরে তাদের ইনক্রিমেন্ট হয় না। এমনকি সরাসরি প্রক্রিয়া বাদ দিয়ে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে কর্মী নিয়োগ দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। এসব অনিয়মের বিষয়ে কর্মীরা শ্রম অধিদফতরের শরণাপন্ন হলে গত ১৪ জানুয়ারি প্রথম সালিসি বৈঠক ডাকা হয়। কিন্তু মালিকপক্ষ দুই মাসের সময় চায়। পরে ৩১ মার্চ সালিসি বৈঠকের দিন নির্ধারণ করা হলেও মালিকপক্ষ বিষয়টি এড়িয়ে যায়। মূলত কর্মীদের করা মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ায় মালিকপক্ষ সালিসি বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারেনি বলে জানানো হয়। তবে কর্মীদের পক্ষ থেকে প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা জানান, গ্রামীণ টেলিকমের কাছে শ্রম আইনের ২৩২ ধারা অনুযায়ী নিট লাভের ৫ শতাংশ হারে প্রায় ১০৭ কোটি টাকা পাওনা আছে। কিন্তু মালিকপক্ষ এই পাওনা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। তবে সাবেক ও বর্তমান কর্মীরা প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ৯০টি মামলা করেছেন। মামলায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আসামি করা হয়।
কর্মীদের অভিযোগ, মামলার তুলে নিতে তাদের চাপ দেওয়া হচ্ছে। না হলে কর্তৃপক্ষ তাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা করবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে।
এসব বিষয়ে গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আশরাফুল হাসানের পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির মহাব্যবস্থাপক জে এম নাজমুল ইসলাম বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘আমরা একটু ব্যস্ত আছি। তাছাড়া আমাদের প্রতিষ্ঠান বেশি স্বনামধন্য। এখানে কর্মীদের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়। তারপরও তারা মামলা করেছেন। এখন মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কিছুই বলা যাচ্ছে না।’
তবে গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ মাহমুদ হাসান বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘যৌথ দর কষাকষির মাধ্যমে আইনি প্রক্রিয়ায় দাবি আদায়ের বিধান আছে। গ্রামীণ টেলিকম কর্তৃপক্ষকে দু’বার বৈঠকে বসার আহ্বান জানানো হলেও তারা সেটা অগ্রাহ্য করেছেন ও আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছেন। শ্রম অধিদফতর যদি গ্রামীণ টেলিকমকে বৈঠকে বসাতে ব্যর্থ হয় তাহলে তারা আমাদের ব্যর্থতার সার্টিফিকেট দেবে। পরে আমরা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবো।’
এ বিষয়ে জানতে শ্রম অধিদফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর মিৎশু সাওলীনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।