শহর কলকাতার উত্থানপর্ব

সুতানুটি থেকে কলকাতা



ড. মাহফুজ পারভেজ কন্ট্রিবিউটিং এডিটর বার্তা২৪.কম
কলকাতা শহরের উত্থানপর্ব/ ছবি: সংগৃহীত

কলকাতা শহরের উত্থানপর্ব/ ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কলকাতার গোড়াপত্তনের ইতিহাস জানার আগে বাংলায় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কার্যক্রম সম্পর্কে জানা জরুরি। তাহলে বোঝা যাবে, কেন কোম্পানি বাংলায় একটি শক্তিশালী অবস্থান গড়তে উৎসাহী হয়েছিল।

ব্যবসা-বাণিজ্য শুরুর পর থেকেই বাংলায় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি সব সময়ই ছিল নবাবের চাপের অধীনে কোণঠাসা। ইংরেজদের তাদের নানা অপকর্মের জন্য বাংলার প্রায়-সকল নবাবই বাধ্য হয়ে ইংরেজদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে সচেষ্ট হন। কিন্তু বাংলার নবাবের চাপ ও নিয়ন্ত্রণ থাকলেও সুচতুর ইংরেজ উপমহাদেশের ক্ষমতার মূলকেন্দ্র দিল্লির সঙ্গে ভালো সম্পর্ক তৈরি করতে সক্ষম হয়।

সুরাটের ইংরেজ কুঠির অধ্যক্ষ স্যার জন চাইল্ডের প্রচেষ্টায় মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব ইংরেজদের প্রতি প্রসন্ন হন। ১৬৯০ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি সম্রাট ইংরেজদের বাণিজ্যের জন্য নতুন এক ফরমান জারি করেন। ইতোমধ্যে বাংলার ক্ষমতায় অপেক্ষাকৃত দুর্বল ইব্রাহিম খাঁর আগমন ঘটে।

ইব্রাহিম খাঁ ইংরেজদেরকে পুনরায় বাংলায় আহ্বান জানালে জব চার্নক কালবিলম্ব না করে মাদ্রাজ থেকে সপরিবারে কাউন্সিলের সদস্যবর্গ ও ফ্যাক্টরদের সঙ্গে ৩০ জনের এক সৈন্যদল নিয়ে ১৬৯০ সালের ২৪ আগস্ট তৃতীয় ও শেষবারের মতো কলকাতার সুতানুটিতে আগমন করেন। মাত্র ৩০ জন সৈন্যের অতি সামান্য ক্ষমতাধর চার্নকের দল যে দ্রুতই সমগ্র বাংলা তথা উপমহাদেশ দখল করবে, তখন তা কে জানতো!

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Apr/28/1556427340721.gif
ইতিহাসের সুতানুটি থেকে আজকের কলকাতা/ ছবি: সংগৃহীত

 

অতঃপর জব চার্নক কলকাতার অন্তর্গত সুতানুটি গ্রামে কুঠি স্থাপনে তৎপর হন। এর আগে তিনি উলুবেড়িয়া, হুগলি ও হিজলিতে কুঠি স্থাপন করে নির্বিবাদে ব্যবসা-বাণিজ্য চালাতে চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তিনটি স্থানেই তার উদ্যোগের ফলাফল ব্যর্থ হয়। হুগলিতে মুঘলদের দোর্দণ্ড প্রতাপ, উলুবেড়িয়াতে আন্তঃবাণিজ্যের অসুবিধা আর হিজলিতে প্রচণ্ড ম্যালেরিয়ার কারণে এই তিনটি স্থানই তাকে পরিত্যাগ করতে হয়। ফলে সুতানুটিতে ঘাঁটি গড়েন চার্নক।

বর্তমানে কলকাতার আদি এলাকা সুতানুটিকে নির্বাচন করার কারণ হলো, এর উপকণ্ঠে ছিল বাদা অঞ্চল ও খাল-বিল, ধারেই ছিল প্রচণ্ড বেগবতী হুগলি নদী। এখানে কুঠি স্থাপন করলে মুঘল বা মারাঠা, কেউই তরঙ্গ-সঙ্কুল হুগলি নদী অতিক্রম করে ইংরেজ কুঠির ওপর আক্রমণ করতে পারবে না।

তা ছাড়া জায়গাটি বন-জঙ্গলে ঘেরা এবং খরা ও অস্বাস্থ্যকর হওয়ায় সহসা মুঘলদেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করবে না। তদুপরি, সুতানুটির অভ্যন্তরে একটি চওড়া রাস্তা উত্তর থেকে দক্ষিণ দিকে প্রসারিত হওয়াতে বিভিন্ন স্থানে যোগাযোগের বিশেষ সুবিধা করে দিয়েছিল।বিচক্ষণ চার্নক সব দিক বিবেচনা করে এবং ভবিষ্যত গুরুত্বকে মাথায় রেখে এমনই একটি অজ পাড়ায় আস্তানা তৈরি করতে থাকেন।

সে সময় সুতানুটি ও তার চারপাশের গ্রামগুলো সাবর্ণ চৌধুরী নামের এক হিন্দু ব্রাহ্মণ জমিদারের অধীনস্থ ছিল। ইংরেজদের পক্ষে প্রয়োজনে গ্রামগুলো বা অংশবিশেষ সুবিধামত দরে বন্দোবস্ত করার সুযোগ ছিল। ইংরেজদের আগমনকালে সুতানুটিতে তখন একটি মাত্র কুঠিবাড়ি ছিল। এই বাড়িতে প্রয়োজন অনুযায়ী কোম্পানির কর্মচারীদের রেখে কাজ চালানোও ছিল অপেক্ষাকৃত সুবিধাজনক।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Apr/28/1556427504516.gif
জব চার্নক/ ছবি: সংগৃহীত

 

সুতানটির ধারে হুগলি নদী ছিল অতি গভীর ও খরস্রোতা। চার্নক বুঝতে পেরেছিলেন যে এখানে বড় বড় জাহাজ সহজে এসে নোঙর করতে এবং মাল ওঠাতে-নামাতে পারবে। উপরন্তু, মুঘল শাসকদের সঙ্গে কোনও বিরোধ বা হাঙ্গামা হলে কোম্পানির পক্ষে সাবধান হওয়ার ও আত্মরক্ষা করার যথেষ্ট সময় ও সুযোগ পাওয়াও এখানে সম্ভব হবে।

স্থান নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিবেচনার আরেকটি বিষয় হলো, হুগলির তুলনায় সুতানুটি সমুদ্রের অনেক নিকটবর্তী ছিল। সুতানুটি থেকে সমুদ্রসঙ্গম, মোহনা ও হুগলির কুঠিগুলোও বেশি দূরে নয়। এখানে থেকে হুগলি ও অন্যান্য স্থানের খবরাখবর দ্রুত পাওয়া সম্ভব ছিল। বিপদ এলে অতি তাড়াতাড়ি জাহাজে চড়ে গভীর সাগরের দিকে পালিয়ে গিয়ে আত্মরক্ষা করাও ছিল ইংরেজদের জন্য সুবিধাজনক।

সুতানুটিতে অনেক আগে থেকেই শেঠ ও বসাকরা হাট-বাজার স্থাপন করেছিলেন। এ কারণে রপ্তানিযোগ্য পণ্যও হাতের নাগালের মধ্যেই সহজলভ্য ছিল। গ্রামীণ সামগ্রী ও খাদ্য-দ্রব্যের সরবরাহও ছিল সেখানে প্রচুর। সব দিক বিবেচনা করে খুবই অল্প খরচে সেখানে আস্তানা বানিয়ে বসতে পেরেছিলেন জব চার্নক।

সুতানুটি গ্রামটিতেই ইংরেজদের বাণিজ্য কুঠি বানানোর পেছনে এসব নানাবিধ কারণ কাজ করেছিল। চার্নক সুতানুটি এলে দলভারী হচ্ছে দেখে হুগলি ও আশেপাশের ইংরেজরা সাদরে বরণ করেছিলেন। অখ্যাত সুতানুটি গ্রামকে কেন্দ্র করে বৃহত্তর কলকাতাকে ভিত্তি করে বাংলায় ইংরেজ বাণিজ্যের প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো রচনা করেন জব চার্নক।

আরও পড়ুন: চট্টগ্রামের বদলে ইংরেজদের কাছে গুরুত্ব পায় কলকাতা

   

৫০ বছর আগে মহাকাশ থেকে তোলা পৃথিবীর ছবি আজও শ্রেষ্ঠ



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সালটা ১৯৬৮। বিশ্বব্যাপী মানুষ মেতে উঠেছিল বড়দিনের আনন্দে। তখনো জানতো না, বড়দিন উপলক্ষে তারা একটি বিশেষ উপহার পেতে চলেছে। পৃথিবী থেকে আমরা হরহামেশাই চাঁদ দেখি। অমাবস্যা-পূর্ণিমা, এমনকি পক্ষের মাঝামাঝি সময়ের বদৌলতে নানা দৃষ্টিকোণে নানা আকারের চাঁদ দেখতে পাই। তবে চাঁদ থেকে পৃথিবী দেখতে কেমন? এরকমটা হয়তো অনেকেই ভাবেন।

নাসার মহাকাশচারীরা অ্যাপোলো ৪ এ করে তখন চাঁদের চারপাশে টহল দিচ্ছে। সেখান থেকে তারা চাঁদের বাসকারীদের দৃষ্টিতে পৃথিবী কেমন হবে তার এক নমুনা জোগাড় করেন। ক্রিসমাসের কিছুদিন আগে ক্রুরা চাঁদকে প্রদক্ষিণ করার সময় ব্যারেন লুনার হরিজোন থেকে একটি ছবি তোলে। সেখানে সুদূর মহাকাশ থেকে পৃথিবীর একটি সুন্দর দৃশ্য ধারণ করা হয়। চমৎকার সেই রঙিন ছবিটি সবকিছু পরিবর্তন করতে চলেছিল।

ছবিটি তুলেছিলেন মার্কিন নভোচারী বিল অ্যান্ডার্স এবং জিম লাভেল। ছবিটি ধারণ করার পর মহাকাশ বিজ্ঞানীরা অবাক হয়ে যান। অর্ধ শতাব্দী পার হয়ে যাওয়ার পরও এটিকে প্রকৃতির সবচেয়ে আইকনিক ছবি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কারণ, এটিই মহাকাশ থেকে তোলা প্রথম রঙিন এবং উচ্চ রেজুলেশনের ছবি।

১৯৭০ সালে পরিবেশ সচেতনতা এবং এই ব্যাপারে সক্রিয়তা বাড়ানোর উদ্দেশে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে পৃথিবী দিবস প্রচারিত হওয়ার কারণে ছবিটিকে বিশেষ কৃতিত্ব দেওয়া হয়।

যুক্তরাজ্যের রয়্যাল ফটোগ্রাফিক সোসাইটির প্রোগ্রাম ডিরেক্টর মাইকেল প্রিচার্ড ছবিটিকে নিখুঁত দাবি করেন। তিনি বলেন, এই ছবিটি পৃথিবীর এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করেছিল, যা আগে কোনো ছবি করতে পারেনি। প্রকাণ্ড মহাবিশ্বে পৃথিবীর অস্তিত্ব কতটা ক্ষুদ্র গ্রহ, তা যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় ছবিটি।

১৯৬০ সালের পরই পৃথিবী নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে শুরু করে। ষাটের দশকের শেষভাগে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের মানুষ অনুধাবন করে পৃথিবীকে আজীবন একইভাবে ব্যবহার করা যাবে না। গ্রহের প্রতি আমাদের আরও অনুরাগী হতে হবে। সেই উদ্দেশে ১৯৬৯, ‘৭০ ও ‘৭১ সালে ‘ফ্রেন্ডস অব দ্য আর্থ’, মার্কিন প্রতিষ্ঠান ‘এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সি’ এবং ‘গ্রিনপিস’ প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই ছবিটি প্রকাশের ১৮ মাস পর ২০ মিলিয়ন মার্কিন নাগরিক পৃথিবী রক্ষার আন্দোলনে রাস্তায় নামে।

পৃথিবী রক্ষা করার জন্য মানুষদের উৎসাহিত করার বেলায় ছবিটি অনেক বেশি প্রভাব ফেলে। এখনো অবদি মহাকাশ থেকে পৃথিবীর পাঠানো ছবিগুলোর মধ্যে ১৯৬৮ সালে বড়দিনের আগে তোলা সেই ছবিটিকে শ্রেষ্ঠ বিবেচনা করা হয়।

;

মাঝরাতে আইসক্রিম, পিৎজা খাওয়া নিষিদ্ধ করল মিলান!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: স্কাই নিউজ

ছবি: স্কাই নিউজ

  • Font increase
  • Font Decrease

আইসক্রিম, পিৎজা অনেকের কাছেই ভীষণ পছন্দের খাবার। তবে ইউরোপসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে মাঝরাতে এসব মুখরোচক খাবার ও পানীয় খাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। ইতালিতে জেলাটিনের তৈরি আইসক্রিম খুব বিখ্যাত। এজন্য ইতালিতে 'জেলাটো সংস্কৃতি' নামে একটা কালচার গড়ে উঠেছে। সম্প্রতি ইতালির মিলানের বাসিন্দাদের জন্য একটি নতুন আইন প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিবেদন- স্কাই নিউজ।

মিলানে বসবাসকারীদের অধিকাংশই মাঝরাতে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে আইসক্রিম, পিৎজা, ফাষ্টফুড জাতীয় খাবার ও পানীয় পান করে থাকে। এতে করে সেখানকার এলাকাবাসীদের রাতের ঘুম বিঘ্নিত হয়। নতুন প্রস্তাবিত আইনে শহরবাসীর রাতের ঘুম নির্বিঘ্ন করতে মধ্যরাতের পর পিৎজা ও পানীয়সহ সব ধরনের টেকওয়ে খাবার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তবে মধ্যরাতের পর আইসক্রিম নিষিদ্ধ করার চেষ্টা এবারই প্রথম নয়। ২০১৩ সালে, তৎকালীন মেয়র গিউলিয়ানো পিসাপিয়া অনুরূপ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু 'অকুপাই জেলাটো' আন্দোলনসহ তীব্র প্রতিক্রিয়ার পরে তিনি এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।

এরপর আবারও মিলানে এ আইনটি প্রস্তাব করেছেন ডেপুটি মেয়র মার্কো গ্রানেল্লি। দেশটির ১২টি জেলা এই প্রস্তাবের আওতাভুক্ত হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে মিলানের মেয়র গ্রানেল্লি বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিকতা ও বিনোদন এবং বাসিন্দাদের শান্তি ও প্রশান্তির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা।

প্রস্তাবটি নিম্নলিখিত এলাকাগুলোতে প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ: নোলো, লাজারেটো, মেলজো, ইসোলা, সারপি, ভায়া সিজারিয়ানো, আরকো ডেলা পেস, কোমো-গাইআউলেন্টি, পোর্টা গ্যারিবল্ডি, ব্রেরা, টিসিনিজ এবং দারসেনা-নাভিগলি।

জানা যায়, প্রস্তাবটি মে মাসের মাঝামাঝি থেকে কার্যকর থাকবে এবং নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। এটি প্রতিদিন রাত ১২.৩০ টায় এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিন এবং সরকারী ছুটির দিনে রাত ১.৩০ টা থেকে প্রয়োগ করা হবে। তবে এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে নাগরিকদের মে মাসের শুরু পর্যন্ত আপিল করার এবং আইন পরিবর্তনের পরামর্শ দেওয়ার সময় রয়েছে।

 

 

 

;

অস্ট্রেলিয়ায় নিখোঁজ কুকুর ফিরলো যুক্তরাজ্যের মালিকের কাছে



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অস্ট্রেলিয়ায় ঘুরতে এসে নিখোঁজ হয় যুক্তরাজ্যের এক দম্পতির পালিত কুকুর। যুক্তরাজ্যে আসার ১৭ দিন পর মিলো নামের কুকুরটিকে ফিরে পেয়েছেন জেসন হোয়াটনাল নিক রোল্যান্ডস দম্পতি।

হোয়াটনাল এবং তার সঙ্গী নিক সম্প্রতি তাদের কুকুর মিলোকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া পরিদর্শনে যান। তারা যখন সোয়ানসিতে বাড়িতে যাচ্ছিলেন তখন মেলবোর্ন বিমানবন্দরে তার হ্যান্ডলার থেকে কুকুরটি পালিয়ে যায়।

সাড়ে পাঁচ বছর বয়সী কুকুরটিকে অবশেষে মেলবোর্নের শহরতলিতে ১৭ দিন পর খুঁজে পাওয়া যায়।


হোয়াটনাল স্কাই নিউজকে বলেন, ‘মিলোকে ফিরে পাওয়াটা খুবই আশ্চর্যজনক ছিল আমার জন্য। যখন আমি আমার প্রিয় মিলোর (কুকুর) সাথে পুনরায় মিলিত হয়েছিলাম, তখন আমি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলাম। আমার কান্না দেখে অন্যরাও কেঁদেছিল। এটি সত্যিই আবেগপ্রবণ ছিল।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বের অন্য প্রান্তে থেকে মিলোর কথা চিন্তা করে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। আমরা জানতাম না মিলো কোথায় আছে। এটি বেশ হতাশাজনক ছিল আমাদের জন্য, কিছুটা আশা হারিয়ে ফেলেছিলাম। তাকে ফিরে পাবো ভাবিনি।

মিলোকে পাওয়ার জন্য সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছিলাম, তখন স্বেচ্ছাসেবকদের কাছ থেকে সাহায্য আসে, তারা মিলোর সন্ধান দেয়। মিলোকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের ধন্যবাদ।

;

আমার হাতের পাখা যেন তাদের আরাম দিচ্ছে!



মৃত্যুঞ্জয় রায়, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাতক্ষীরা
ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

  • Font increase
  • Font Decrease

আবু বক্কর (৬২)। বয়সের ভারে অসুস্থ হয়ে তিনি এখন পাকা বিক্রেতা। প্রচণ্ড তাপদাহে মানুষ যখন ঠান্ডা বাতাসের প্রশান্তি খুঁজছে, তখন তিনি গ্রামে গ্রামে গিয়ে তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন।

আবু বক্কর বার্তা২৪.কমকে বলেন, স্ত্রীসহ ছয় মেয়ে নিয়ে আমার সংসার। তবে মেয়েদের বিয়ে দিতে পেরেছি। কিন্তু বয়সের ভারে ঠিকই আমরা একা থেকে গেলাম। শেষ বয়সে গ্রামে গ্রামে তালপাতা পাখা বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছি। শুধু সংসার না, এই টাকায় আমার পায়ের শিরার ব্যথার ওষুধও কিনতে হয়। একবেলা ওষুধ না খেলে চলতে পারি না।

এদিকে, পুরনো ব্যবসার ঋণের বোঝা আর অন্যদিকে অসুস্থ হয়ে ওষুধসহ সংসারের খরচ। শেষ বয়সে তালপাতার পাখাই আমার একমাত্র জীবনসঙ্গী বলেন আবু বক্কর।

তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন আবু বক্কর, ছবি- বার্তা২৪.কম

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার কলাগাছি গ্রামের কবিগানের অনুষ্ঠানে সরেজমিন দেখা যায়, একপাশে তালপাতার পাখা বিক্রি করতে ব্যস্ত ছোট্ট পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ। এই গরমে যখন তার ঘরে থাকার কথা, তখন সে নানা-নানীর সঙ্গে এসে তালপাতার পাখা বিক্রি করছে। কবিগানে বসে থাকা সব শ্রোতার কাছে গিয়ে বলছে, পাখা লাগবে, পাখা! কথা বলতে চাইলেও এ পাশ ওপাশ দিয়ে চলে যাচ্ছে, ক্রেতার কাছে।

এক ফাঁকে তাকে কাছে পেয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়, এই বয়সে পাখা বিক্রি করছো কেন! এ প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে মাহমুদুল্লাহ বলে, প্রচণ্ড গরমে স্কুল ছুটি। তাই, নানা-নানীর সঙ্গে চলে এসেছি মেলায় পাখা বিক্রি করতে। মানুষজন আমার কাছ থেকে যেন বেশি পাখা কেনে (ক্রয়), তাই আমি মেলায় তাদের সঙ্গে এসেছি।

অনেক উৎসাহের সঙ্গে সে বলে, গরমে আমার হাতের পাখায় যেন তাদের আরাম দিচ্ছে! মেলা হলে আমি সেখানে চলে যাই পাখা বিক্রি করতে। ঘোরাঘুরিও হয় আর টাকা ইনকামও হয়। টাকার জন্য বের হয়ে পড়েছি। আমরা পাখা বিক্রি করে পেট চালাই। নানা-নানী বুড়ো হয়ে গেছে। তাই, আমি সঙ্গে এসে তাদের কষ্টটাকে একটু ভাগাভাগি করে নিচ্ছি।

যেখানে প্রচণ্ড তাপে মানুষজন নাজেহাল, সেখানে ছোট্ট মাহমুদুল্লাহ ছুটে চলেছে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে পাখা বিক্রি করতে। ছোট্ট শিশু হলেও গরম যেন তার কাছে কিছু না, পেটের তাগিদে!

আরেক পাখা বিক্রেতা তালা উপজেলার হরিণখোলা গ্রামের বাসিন্দা ভদ্রকান্ত সরকার (৭০)। ১২-১৪ বছর ধরে এই পেশায় আছেন তিনি।

চলছে তালপাতার পাখার বিকিকিনি, ছবি- বার্তা২৪.কম

শেষ বয়সে পাখা কেন বিক্রি করছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে ভদ্রকান্ত বলেন, চাল কিনে খেতে হয়। খুব কষ্টের সংসার! ছেলে-মেয়ে আছে। তারা তাদের মতো কাজ করে খায়। মা বাবার বয়স হয়ে গেলে ছেলে আর আমাদের থাকে না। আমরা বৃদ্ধ বয়সে কেমন আছি, সেটা জানার সুযোগ তাদের থাকে না। শেষজীবনটা এভাবে পাখা বিক্রি করে কাটিয়ে দেবো। কী আর করবো! কপালে যা আছে, শেষপর্যন্ত তাই হবে। কপালে ছিল, এমন বৃদ্ধ বয়সে গ্রামে গ্রামে পাখা বিক্রি করতে হবে!

;