সৈয়দ শামসুল হকের জন্মদিন আজ

  • নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

'পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়' লিখে বাংলার মানুষের সামনে মুক্তিযুদ্ধের চাওয়া-পাওয়ার প্রসঙ্গ জাগিয়ে তুলেছিলেন তিনি। 'হায় রে মানুষ রঙিন ফানুসের' মতো গান রচনার মধ্য দিয়ে তিনি হয়ে ওঠেন নিরক্ষর মানুষেরও পরানের সঙ্গী। তার 'নিষিদ্ধ লোবান' ও 'নীল দংশন' উপন্যাসের মধ্যে পাঠক খুঁজে পেয়েছিল আত্মানুসন্ধানের পদযাত্রা। এই সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের ৮৭তম জন্মদিন আজ ২৭ ডিসেম্বর।

বাংলা সাহিত্যের প্রখ্যাত এই সাহিত্যিক ১৯৩৫ সালের আজকের এই দিনে জন্ম নেন কুড়িগ্রামে। আট ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়। তার মা হালিমা খাতুন ছিলেন গৃহিণী। বাবা সৈয়দ সিদ্দিক হুসাইন ছিলেন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক।

বিজ্ঞাপন

কবিতা, উপন্যাস, নাটক, ছোটগল্প, অনুবাদ তথা সাহিত্যের সকল শাখায় সাবলীল পদচারণার জন্য তাকে 'সব্যসাচী লেখক' বলা হয়। তার লেখকজীবন প্রায় ৬২ বছর ব্যাপী বিস্তৃত।

সৈয়দ হক স্কুলজীবন শেষ করেন কুড়িগ্রামে। ১৯৫০ সালে তিনি ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ভর্তির বিষয়ে বাবার সঙ্গে মতবিরোধ দেখা দেওয়ার পর তিনি ১৯৫১ সালে মুম্বাইতে গিয়ে কিছুদিন একটি চলচ্চিত্র প্রযোজনা সংস্থায় কাজ করেন। একই বছর 'অগত্যা' পত্রিকায় তার প্রথম গল্প প্রকাশ পায়। পরে জগন্নাথ কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হন। তবে লেখাপড়া শেষ না করেই পুরোদমে লেখালেখি শুরু করেন।

বিজ্ঞাপন

২০১৬ সালের ১৫ এপ্রিল ফুসফুসের সমস্যা দেখা দিলে তাকে লন্ডন নিয়ে যাওয়া হয়। লন্ডনের রয়্যাল মার্সডেন হাসপাতালে পরীক্ষায় তার ফুসফুসে ক্যান্সার ধরা পড়ে। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে কেমোথেরাপি ও রেডিওথেরাপি দেয়। চার মাস চিকিৎসার পর ২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। পরদিন ২৮ সেপ্টেম্বর বুধবার চ্যানেল আই টেলিভিশনের তেজগাঁও চত্বরে সকাল ১০টায় প্রথম দফা জানাজা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে দুপুর ২টায় দ্বিতীয় দফা জানাজা এবং অপরাহ্নে কুড়িগ্রামে তৃতীয় দফা জানাজা শেষে তার মরদেহ কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের পাশে দাফন করা হয়।

বাংলা সাহিত্যে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি পেয়েছেন একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, আদমজী সাহিত্য পুরস্কারসহ বিভিন্ন স্বীকৃতি। পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, চিত্রনাট্যকার, সংলাপ রচয়িতা, আলাওল সাহিত্য পুরস্কার, কবিতালাপ পুরস্কার, লেখিকা সংঘ সাহিত্য পদক, জেবুন্নেসা-মাহবুবউল্লাহ স্বর্ণপদক, পদাবলী কবিতা পুরস্কার, নাসিরুদ্দীন স্বর্ণপদক, টেনাশিনাস পদক, ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কার।