আমার দেখা জাতির পিতা
বঙ্গবন্ধুর ছবি তুলব বলে রাতে ঠিকমতো ঘুম হলো না। ১৯৭২ সালের এপ্রিল মাসের কথা। আমি সদ্য ১৬ পেরিয়েছি। পারিবারিক ফটোগ্রাফার থেকে সদ্য স্ট্রিট ফটোগ্রাফারের পর প্রেস ফটোগ্রাফিতে পা রেখেছি। বাবার শখের জাপানিজ মিনোলটা টুইন লেন্স রিফ্লেক্স ক্যামেরা আমার ছবি তোলার একমাত্র ক্যামেরা। এরই মধ্যে ছবি তোলাটা আমার নেশা হয়ে উঠেছে। মা ভীষণ বিরক্ত, ‘ছেলে আমার উচ্ছন্নে গেল, সারাদিন ক্যামেরা নিয়ে দৌড়াদৌড়ি।’ বলবেন না বা না কেন? স্কুল থেকেই তো ছুটছি ক্যামেরা হাতে!
এরই মাঝে জড়িয়েছি বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের মুখপাত্র সাপ্তাহিক ‘জয়ধ্বনি’তে। ‘দৈনিক বাংলা’র সাহিত্য পাতায় কবি আহসান হাবিব আর মহিলা পাতায় কবি মাফরুহা চৌধুরীর পাতায় আমার ছবি ছাপা হচ্ছে পাভেল নামে। আমি তখনও পাভেল রহমান হয়ে উঠিনি।
আজ আমার অ্যাসাইনমেন্ট ‘বঙ্গবন্ধু’। ছবি তুলব ‘জয়ধ্বনি’র জন্য। সেই সময়ে ছাত্র ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম আমাকে বঙ্গবন্ধুর ছবি তোলার সুযোগ করে দিলেন। সহযোগিতার হাত বাড়ালেন ‘জয়ধ্বনি’র সম্পাদক অজয় দাস গুপ্ত আর শহর প্রেসিডেন্ট কামরুল ইসলাম খান।
আমি সেই সকালে ছুটলাম সোজা নিউ মার্কেটে, মোল্লার ছোট্ট টং দোকানে। এফডিসি থেকে আনা কাট ফিল্মের ২টা সাদাকালো ফিল্ম কিনে ফেললাম ১০ টাকায়। ঐ ফিল্মগুলি সবসময় খুবই রিস্কি। ক্যাসেটে লোড করার সময় প্রায়শই ফিল্মগুলিতে আঙ্গুলের ছাপ পড়ে। কখনো আবার আলো পাস করে ফিল্ম জুড়ে। কিন্তু ঐ ৫ টাকার ফিল্ম কেনাও তো ঝক্কি। ফুজি, কোডাক, ইলফরড পাওয়া যায় কিন্তু ৩৫ মিলিমিটারের ১টি ফিল্ম দাম ৩৫ টাকা। পাঁচ টাকাই যেখানে হাতে পাওয়া মুশকিল সেখানে ৩৫ তো অনেক টাকা। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর ছবি তুলব ঐ লাইট আর আঙ্গুলের ছাপ লাগানো ফিল্মে? মন না মানলেও যে পকেটে কুলোয় না! অগত্যা কী আর করা, দুইটা কিনে ছুটলাম।
আমার কোনো অভিজ্ঞতা নেই রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানের, তারপরও কিশোর জীবনে এই প্রথম আমি ছবি তুলতে দাঁড়িয়েছি দেশের বিখ্যাত সব প্রেস ফটোগ্রাফারদের সাথে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ছবি তুলব বলে। সেইদিন সেখানে ছবি তুলতে এসেছিলেন আলোকচিত্রী রশিদ তালুকদার, গোলাম মওলা, মোহাম্মদ আলম, জহিরুল হক আরো নাম না জানা অনেকে!
বঙ্গবন্ধু এলেন নূতন একটি নীল গাড়ি চড়ে। পরে শুনেছি ঐ গাড়িটি ছিল বাংলাদেশ বিমানের কেনা নূতন ১০টি গাড়ির একটি, যা প্রধানমন্ত্রী মটর পুল্-কে ধার দেওয়া হয়েছিল ব্যবহারের জন্য। সাড়ে তিন বছরের শাসনামলে ঐ একটিই নূতন গাড়ি ব্যবহার করেছিলেন আমাদের জাতির জনক।
বঙ্গবন্ধুর নিরাপত্তার জন্য সেই দিন পুলিশের দায়িত্ব ছিল। যদিও বিশাল সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ঘেরাও না করে শুধু অনুষ্ঠান এলাকাটি প্রোটেকশনের ব্যবস্থা হয়েছিল। ডেলিগেট কিংবা অনুষ্ঠানে আগতদের কোনো প্রকার নিরাপত্তা তল্লাশি ছিল না। সেই সময় মূল প্রোটেকশনের কাজ তদারকি করেন স্পেশাল ব্রাঞ্চ। তাদের সাপোর্ট দিয়েছিল ড্রেস পুলিশ। তখনও মেট্রো পুলিশ হয়নি ঢাকা শহরে। তখনও এনএসআই হয়নি। ছিল না কোনো মেটাল ডিটেক্টর, ছিল না আর্চ ডোর, ছিল না ডগ স্কোয়াড, ছিল না কোনো অত্যাধুনিক ডিভাইস; যা দিয়ে অনায়াশেই শত্রু চিহ্নিত করা যায়!
বঙ্গবন্ধু অনুষ্ঠানস্থলে এলে তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তায় নিয়োজিত মহসীন ভাই গাড়ির দরজা খুলে দেন। সফেদ পায়জামা পাঞ্জাবির ওপরে কালো মুজিব কোট পরিহিত বঙ্গবন্ধুকে একটি খোলা মঞ্চে নিয়ে যাওয়া হলো । সেই মঞ্চ ঘিরে ছিল বিশ্বের নানা দেশের রাষ্ট্রদূতগণ। আরো ছিলেন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মঞ্চে ছিলেন মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, যিনি ডাকসুর ভাইস প্রেসিডেন্ট, মাহবুব জামান ডাকসুর জিএস, আব্দুল কাইয়ুম মুকুল আর নূহ আলম লেলিন। সংক্ষিপ্ত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের জন্য অতিথিদের কোনো বসার চেয়ার দেওয়া হয়নি মঞ্চে। মঞ্চে বঙ্গবন্ধু দাঁড়িয়ে অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেছিলেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ছাত্র ইউনিয়নের সংগীত পরিবেশন করা হয়। কবি লেখক আক্তার হুসেনের লেখা সেই গানটি ছিল ‘আমরা তো সৈনিক, শান্তির সৈনিক’ পরিবেশন করা হয় সমবেত কণ্ঠে। শান্তির প্রতীক কবুতর উড়িয়ে দেন বঙ্গবন্ধু। তারপরে তিনি জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে।
আমি সেইদিন অনুষ্ঠানের ছবি তুলি দেশের বিখ্যাত প্রেস ফটোগ্রাফারদের পাশে দাঁড়িয়ে। আমি খেয়াল করলাম সবার মাঝে ছোট বলে বঙ্গবন্ধু আমার ছবি তোলা লক্ষ্য করছেন মঞ্চে দাঁড়িয়ে!
উদ্বোধনের পর বঙ্গবন্ধু মূল মঞ্চে ঢোকার পথে স্বাক্ষর দিয়ে পোস্টার প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন। বঙ্গবন্ধুকে শামিয়ানার ভিতরে পোস্টার প্রদর্শনীতে নিয়ে আসেন মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। শামিয়ানার ভিতরে স্বল্প পরিসরে ১০/১২ জন আলোকচিত্রী, বয়োজ্যেষ্ঠ আর সবাই বিখ্যাত। তাঁদের ফাঁকফোকর গলিয়ে আমি আমার ক্যামেরায় ছবি তোলার প্রাণপণ চেষ্টা করেছি। তারা আমাকে জায়গা না দিলেও হাসিমুখে বিনয় দেখাচ্ছি। আমি বঙ্গবন্ধুর এতটাই কাছে যে হাত বাড়ালেই ছুঁয়ে দিতে পারি। এমন সময় দারুণ এক ছবি উঠে আসে আমার ক্যামেরায়। বঙ্গবন্ধু যখন সমাজতান্ত্রিক বিশ্বের পোস্টার দেখছিলেন। দেখছিলেন চিলির বিপ্লবী ডাক্তার সাল্ভেদর আলেন্দের পোস্টার, দেখছিলেন কিউবার বিপ্লবী ফিদেল ক্যাস্ট্রোকে, দেখছিলেন বিপ্লবী চে গুয়েভারাকে।
ঠিক তখন দেখি ৮/ ১০ বছরের দুই টোকাই দারুণ কৌতূহল আর আগ্রহ নিয়ে বঙ্গবন্ধুর পায়ের কাছে পোস্টার প্রদর্শনীর পর্দা তুলে উৎফুল্লভাবে বঙ্গবন্ধুকে দেখছে!
অবিস্মরণীয় ঐ ছবিটি স্বনামধন্যদের মাঝে আমার কাছে ধরা দিল। আজ সেই ছবিটি বঙ্গবন্ধুর নিরাপত্তাহীনতার এক ঐতিহাসিক দলিল সম।
১৯৭৫ সালের ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর শেষ জন্মদিন! বঙ্গবন্ধুকে ফুলের শুভেচ্ছা জানালেন শেখ কামাল ভাই। দারুণ এক ছবি পেলাম আমি। বাপ বেটার হাসি।
সেই সন্ধ্যায় গণভবনে অবিশ্বাস্য একটা ঘটনা ঘটে গেল আমার জীবনে! আবাহনীর ফটোগ্রাফার হিসাবেই বঙ্গবন্ধুর সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন কামাল ভাই। দেশের বিখ্যাত সব খেলোয়াড়দের নিয়ে আবাহনীর কর্মকর্তারা বঙ্গবন্ধুকে শুভেচ্ছা জানাতে গণভবনে। প্রথমেই কামাল ভাই ফুলের মালা পরিয়ে দিলেন পিতা বঙ্গবন্ধুকে। আমার ক্যামেরায় সেই সন্ধ্যায় দারুণ এক ছবি উঠে এলো। উৎফুল্ল বাবা আর বেটার হাস্যোজ্জ্বল সেই মুখ। এরই মাঝে শুভেচ্ছা জানাতে শুরু করেছেন দেশের স্টার ফুটবলার সালাউদ্দিন অমলেশ দাদা, শামছূ ভাই, আশরাফ ভাই, হারুন ভাই, তারেক ভাই আরো অনেকে। এরই মাঝে কামাল ভাই ডাকলেন শুনলাম। পাভেল পাভেল। আমি তাঁর সামনে আসতেই তিনি আমাকে কোনো কিছু ন বলে বঙ্গবন্ধুর দিকে আমাকে আগিয়ে দিতে দিতে বললেন, ‘আব্বা, ও হচ্ছে আমাদের আবাহনীর ফটোগ্রাফার!’ বঙ্গবন্ধুর দিকে আমাকে এগিয়ে দিতেই আমি নার্ভাস হয়ে যাই! আমি বুঝতে পারি না আমাকে কেন এগিয়ে দিচ্ছেন। আর তখনই কামাল ভাই বঙ্গবন্ধুর উদ্দেশ্যে বলতে থাকেন, ‘আব্বা ও হচ্ছে আবাহনীর ফটোগ্রাফার।’ আবাহনীর ফটোগ্রাফার শুনেই বঙ্গবন্ধু নড়েচড়ে বসলেন, মনে হলো তিনি কামাল ভাইয়ের কথায় বিস্মিত! অবাক হয়ে তাকালেন আমার দিকে। আমার দিকে বিস্ময়ে তাকিয়ে দেখেন আবাহনীর ফটোগ্রাফারকে। আমার তখন গলায় ঝুলছে বাবার সেই মিনোলটা ক্যামেরাটা। আমার মাথায় তখন ঝাঁকড়া চুলগুলি এলোমেলো। ছিলাম না পরিপাটি কিছু। অন্তত জাতির পিতার সম্মুখে দাঁড়াবার মতো মোটেও নয়। তাছাড়া আমার পরিচয় দেবার মতো তখনও কেউ হয়ে উঠিনি আমি! বঙ্গবন্ধুর কৌতুক ভরা চোখে আমাকে দেখছেন আর তাতেই আমি দারুণ এক অস্বস্তিতে পড়ে যাই। আর তখনই তিনি কামাল ভাইয়ের উদ্দেশ্যে বলে উঠলেন ‘কি, তোদের আবাহনীতে আবার ফটোগ্রাফারও আছে নাকি?’ বঙ্গবন্ধুর কথায় এবার আমি সত্যি লজ্জিত হয়ে উঠি। এমনিতেই এত এত সুপারস্টারদের মাঝে আমি পুচকে এক ফটোগ্রাফার, আমার সাথে কি বঙ্গবন্ধুর পরিচয় হতে পারে? তাতেই আমি নার্ভাস, তাঁর ওপর বঙ্গবন্ধু যখন আমাকে আবাহনীর ফটোগ্রাফার হিসেবে আপদামস্তক দেখে বলে উঠলেন, ‘কি তোদের আবার ফটোগ্রাফারও আছে নাকি’—ঐ কথায় আরো বেশি নার্ভাস হয়ে যাই আমি। কামাল ভাই তখন সহাস্যে বলে উঠলেন, ‘হা আব্বা আছে তো, আর ওর নাম হচ্ছে পাভেল।’ পাভেল নামটা শুনে বঙ্গবন্ধু উৎফুল্ল দৃষ্টিতে স্মিতহাস্যে আমার হাত ধরে তাঁর সম্মুখে টেনে নিলেন। বঙ্গবন্ধু ততক্ষণে আমার বাম গালে তাঁর ডান হাত বুলাতে বুলাতে বলে উঠলেন, ‘পাভেল! বাহ, কি চমৎকার নাম তোমার!’
এত বছর পরও সন্ধ্যার সেই স্মৃতি আমাকে আপ্লুত করে। আমি বিস্মিত হই এই ভেবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামাল নগন্য এক ফটোগ্রাফার আমাকে কী করে এত সম্মানিত করেছিলেন। ঐ মুহূর্তে বঙ্গবন্ধুর পাশে ভিড় করে ছিলেন ক্রীড়া জগতের কতই না তারকারা। সামসু ভাই অমলেশ দা সালাউদ্দিন নান্নু। ঐ ভিড়ে সামান্য আমাকে শেখ কামাল কী কারণে পরিচয় করিয়েছিলেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালির সাথে!
১৫ই আগস্ট ১৯৭৫ সেই সকালে
সকালে বাবার ডিউটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে। পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের ডিএসপি বাবা—তার টিম নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর প্রেসিডেন্ট বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শনের সময়। আম্মা ভোর ছয়টায় নাস্তা রেডি করেছেন। আমি শুয়ে রেডিওর সকাল ৭টার খবর শোনার প্রতীক্ষায়। এমন সময় এক মেজরের কণ্ঠ ভেসে এলো। ‘আমি মেজর ডালিম বলছি, জালিম শেখ মুজিবর রহমানকে হত্যা করা হয়েছে।’ বাবা ততক্ষণে বেরিয়ে গেছেন। আমি আর আম্মা হুমড়ি খেয়ে রেডিওর টেবিলে। আমি কী শুনছি? নিজেই নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছি না। আমি আমাদের কালো ল্যান্ড ফোনটার রিসিভার তুলে ডায়াল করি কামাল ভাইয়ের রুমে। ধানমন্ডির বাসায় কামাল ভাইয়ের তিনতলা রুমে। ফোনটা বেজে চলে। রিং হয়ে যাচ্ছে রিং হয়ে যাচ্ছে। কেউ ধরল না। আমি লাইন কেটে দিয়ে নিচে রিসিপশনে ডায়াল করি। নাহ, ওখানেও কেউ ধরল না। আমি আবার কামাল ভাইয়ের নাম্বারে রিং করি। ফোন কেউ না ধরায় আমি কাঁদতে শুরু করি। তাহলে কি যা বলছে খুনিরা সবই সত্যি। আমার বাচ্চু ভাইয়ের কথা মনে পড়ল। বাচ্চু ভাইয়ের জাফরাবাদের বাসায় রিং করতে লাগলাম। অনেক পরে ফোন ধরল বাচ্চু ভাই। বাচ্চু ভাই বললেন, না, তু রেডিওতে যা শুনেছো সবই সত্যি। আমি বললাম বাচ্চু ভাই কেউ কি বেঁচে নাই? রাসেল? রাসেলও কি বেঁচে নাই? বাচ্চু ভাই বললেন, না কেউ বেঁচে নাই। বললেন আমরা বাসা থেকে চলে যাচ্ছি। তুমিও আপাতত চলে যাও। নিরাপদ কোনোখানে...
আমি কাউকে কিছু বলি না, বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসি আজিমপুর মোড়ে। লোকজনের জটলা। সবার মুখটা মলিন। ভাবলেশহীন সবাই তাকিয়ে আছে পলাশীর দিকে। ঢাকা মেডিকেলে নাকি অনেক লাশ...
আমি দাঁড়াই না আমি হাঁটতে থাকি নিউ মার্কেট, সায়েন্স ল্যাবরেটোরি। তারপর আর এগুতে পারিনি। ধানমন্ডির দিক থেকে খয়েরী পোশাকের সেনাবাহিনীর লোকরা হাতে মাইক নিয়ে সরে যেতে বলে।
আমি আবার ফিরে যাই বাসায়। আমার স্মৃতিতে তখন জ্বলজ্বল করে ওঠে বত্রিশের বাড়ি বঙ্গবন্ধুর দুষ্টুমি ভরা হাসি, প্রাণ চাঞ্চল্যে ভরা শেখ কামাল ভাইয়ের মুখ আর রাসেলের নিষ্পাপ মিষ্টি মুখখানি!