এক যুগেও সেশনজটের অভিশাপ থেকে মুক্ত হতে পারেনি বেরোবি

  • আদিব হোসাইন, বেরোবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়

প্রতিষ্ঠার এক যুগ পেরিয়ে আজ (১২ অক্টোবর) ১৩ বছরে পদার্পণ করলো বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি)। প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ১২ বছর সম্পন্ন হলেও সেশনজটের অভিশাপ থেকে বের হতে পারেনি সবুজ-শ্যামলে ঘেরা ৭৫ একরের ক্যাম্পাসটি। করোনাকালীন সময়ে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালানোর নির্দেশনা থাকলেও সব বিভাগকে অনলাইনের আওতায় আনতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এতে করে আরও দীর্ঘ সেশনজটের শঙ্কায় ভুগছেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীনতা ও উদাসীনতাকেই দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে আবাসিক হল সংকট, ক্লাসরুম সংকট, শিক্ষক সংকট, লাইব্রেরিতে পর্যাপ্ত বইয়ের অভাব, মেডিকেলে পর্যাপ্ত জনবল ও আধুনিক যন্ত্রপাতির অভাবসহ শিক্ষার্থীদের মৌলিক চাহিদাগুলো মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। তবে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন মহলের দাবির প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য দৃষ্টিনন্দন প্রধান ফটকের নকশা চূড়ান্তকরণ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতির কাজ শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বিজ্ঞাপন

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬টি অনুষদের ২১টি বিভাগের অধিকাংশ বিভাগে ১ থেকে ৩ বছরের সেশনজট রয়েছে। করোনার প্রাদুর্ভাবে এ জট আরও দীর্ঘ হওয়ায় মানসিক দুশ্চিন্তায় ভুগছেন শিক্ষার্থীরা। সেশনজটের পেছনে শিক্ষকদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে যথাসময়ে ক্লাস না নেওয়া, ফলাফল দিতে বিলম্ব করা, শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত অনুযায়ী পর্যাপ্ত শিক্ষক না থাকা ও ক্লাসরুম সংকটকেই দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা।

তবে সেশনজটের বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বলেন, তিনি যোগদানের পর থেকে নতুন ব্যাচগুলোতে সেশনজট নেই বললেই চলে। বর্তমানে যা আছে তা উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া। তার আমলে বিভিন্ন বিভাগে নতুন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সেশনজট নিরসনে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দফতরে দীর্ঘদিন থেকে পরিচালকের ফাঁকা পদে নিয়োগ দিয়ে কাজকে গতিশীল করা হয়েছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়কে আধুনিকীকরণে বেশকিছু পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে এবং সে অনুযায়ী কাজ করা হচ্ছে বলেও জানান উপাচার্য।

বিজ্ঞাপন

উল্লেখ্য; রংপুরবাসীর দীর্ঘদিনের আন্দোলন-সংগ্রামের ফলস্বরূপ ২০০৮ সালের ১২ অক্টোবর প্রতিষ্ঠিত হয় রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠার কয়েক মাস পরই ২০০৯ সালের এপ্রিল মাসে গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকার রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে নাম দেন ‘বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর’।

এই ১২ বছরে প্রাপ্তির খাতায় ৪টি একাডেমিক ভবন, ৩টি আবাসিক হল, সেন্ট্রাল লাইব্রেরি, ক্যাফেটেরিয়া, শিক্ষক-কর্মকর্তাদের ৪টি ডরমেটরি, উপাচার্যের বাসভবন, প্রশাসনিক ভবন, স্বাধীনতা স্মারক, আনসারদের আবাসিক বাসভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া ১০ তলাবিশিষ্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে একটি ছাত্রী হল ও ড. ওয়াজেদ রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং ইনস্টিটিউট নির্মানাধীন রয়েছে।

১২ বছর পূর্বের বৃক্ষপল্লবহীন মরু ক্যাম্পাস সবুজায়নে বিভিন্ন সংগঠন ও বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদের প্রচেষ্টায় বিভিন্ন প্রজাতির ৩৪ হাজার বৃক্ষ রোপণ করা হয়েছে যা ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য বর্ধন করেই চলছে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ উপাচার্য হিসেবে আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ।