গ্রিন ইউনিভার্সিটিতে ‘এসটিআই ৪.০’ আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু শনিবার
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার শিক্ষাবিষয়ক ‘এসডিজি-৪’ অর্জনে কার্যকর কৌশল নির্ধারণের অংশ হিসেবে শনিবার (১৯ ডিসেম্বর) থেকে শুরু হচ্ছে ‘সাসটেইনেবল টেকনোলজিস ফর ইন্ডাস্ট্রি (এসটিআই) ৪.০’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলন।
গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদ কর্তৃক আয়োজিত দুই দিনব্যাপী এ সম্মেলন উদ্বোধন করবেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। সমাপনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
চলমান মহামারি থেকে সুরক্ষা ও নিরাপত্তার লক্ষ্যে সম্মেলনে সরাসরি অংশগ্রহণের পাশাপাশি ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মেও বিশ্বের ২৯টি দেশ থেকে কয়েক শতাধিক শিক্ষক-গবেষক যুক্ত থাকবেন। সম্মেলনটি স্পন্সর করেছে আইইইই কম্পিউটার সোসাইটি গ্লোবাল।
এতে বাংলাদেশ ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ইন্ডিয়া, জার্মানি, চায়না, সৌদি আরব ও মালয়েশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন গবেষকরা অংশ নেবেন। সংশ্লিষ্টদের প্রত্যাশা আন্তর্জাতিক পর্যায়ের এই অনুষ্ঠান চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের অঙ্গণে প্রথম সারির সম্মেলন হিসেবে রূপ পাবে।
আয়োজক কমিটি জানান, সম্মেলনে মূলত তিনটি পৃথক ট্র্যাক প্রাধান্য পাবে। এর মধ্যে রয়েছে ইন্টেলিজেন্ট কম্পিউটিং, নেটওয়ার্ক অ্যান্ড সিকিউরিটি সিস্টেমস; এনার্জি, রোবটিক্স, ইলেক্ট্রনিক্স, সেন্সরস অ্যান্ড কমিউনিকেশন এবং টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং।
এর আগে সম্মেলনে উপস্থাপনের জন্যে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২৯১টি গবেষণা প্রবন্ধ জমা পড়ে; যা থেকে ৯১টি প্রবন্ধ এবং ১২টি পোস্টার পেপার প্রেজেন্টশন উপস্থাপনের জন্য নির্বাচিত হয়। সম্মেলনে উপস্থাপিত মোট ৩টি প্রবন্ধ ও পোস্টার পেপার প্রেজেন্টেশন ‘বেস্ট পেপার’ হিসেবে নির্বাচিত হবে এবং বাছাইকৃত প্রবন্ধগুলো আইইইই এক্সপ্লোর ডিজিটাল লাইব্রেরিতে স্থান পাবে।
সম্মেলনের জেনারেল চেয়ার ও গ্রিন ইউনিভার্সিটির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক জানান, এসটিআই সম্মেলনের লক্ষ্য হলো শিল্প বিপ্লবের বিভিন্ন ক্ষেত্রে গবেষক ও অনুশীলনকারীদের মধ্যে নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করা। যেখানে গবেষণাপত্র উপস্থাপন, নতুন আইডিয়া তৈরি, সাসটেইনেবল টেকলোজির চ্যালেঞ্জ গ্রহণ ও তা বাস্তবায়নের উপায় সংক্রান্ত নানা দিক নিয়ে আলোচনা হবে। যা মূলত চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করবে।
সম্মেলনে উদীয়মান আইআর ৪.০ বিশেষজ্ঞ এবং কানাডার ইউনিভার্সিটি অব ওটার লু’র আইইইই ফেলো ক্লাউডিও এ কেনিজারেজ স্মার্ট গ্রিড সিস্টেমের ওপর বক্তৃতা করবেন। এছাড়া অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব মেলবোর্নের আইইইই ফেলো রাজকুমার বুঁইয়া; কানাডার ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলোম্বিয়ার আইইইই ফেলো ভিনসেন্ট ওয়াং, অস্ট্রোলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব নিউ সাউথ ওয়েলসের অধ্যাপক হুসেইন আব্বাস, ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসটিক্যাল ইনস্টিটিউটের সুস্মিতা মিত্রা, জার্মানির ফ্রনোফার’র থ্রোস্টন হেনকেল, ইউনিভার্সিটি কেবাংসান মালয়েশিয়ার প্রফেসর এম তরিকুল ইসলাম, জার্মানী হাইডেলবার্গের ইউরোপিয়ান মলিকিউলার বায়োলজি ল্যাবরেটরি (ইএমবিএল)’র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এম জুলিয়াস হোসেন, গুগলের আইইইই (এল-৭) ইঞ্জিনিয়ারিং ম্যানেজার মনিরুল ইসলাম শরিফ, অস্ট্রোলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব ওলংগং থেকে মনিরুল ইসলাম, ব্রাক ইউনিভার্সিটির মঞ্জুর আহমেদ এবং রবি আজিয়াটা লিমিটেডের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা ড. আসিফ নাইমুর রহমান প্রবন্ধ পাঠ করবেন।
এদিকে রাজধানীর ট্রাফিক দূরীকরণে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এআই-বেসড প্রজেক্ট কাজ করছে। যা ইতিমধ্যেই ইউরোপের জনপ্রিয় ম্যাগাজিনে বিশ্বের ৯ম চ্যালেঞ্জ হিসেবে স্থান পেয়েছে।
এলসেভিয়ার দ্বারা অর্থায়িত প্রজেক্টটি সম্মেলনে সাসটেইনেবল টেকনোলজিস ফর ইন্ডাস্ট্রি অনুষ্ঠানের সহযোগী ইভেন্ট হিসেবে কাজ করছে। এর বাইরেও সম্মেলনে ‘এডুকেশন ৪.০- প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনীর সঙ্গে এগিয়ে যাওয়া’ শীর্ষক একটি টিউটোরিয়াল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার অফ এক্সিলেন্স ফর টিচিং অ্যান্ড লার্নিয়ের উদ্যোগে ‘এডুনিয়াস ৪.০-ফাইন্ডিং দ্যা বেটার সল্যুশন ফর এডুকেশন শীর্ষক প্রতিযোগিতা স্থান পাবে।
প্রসঙ্গত, এর আগে ২০১৯ সালে প্রথম এসটিআই সম্মেলনে বিশ্বের ২০টি দেশ থেকে ১২ জন স্পিকার, ২০০ লেখক, শতাধিক সিনিয়র গবেষক ও ৩০ জনেরও বেশি ইন্ডাস্ট্রি ব্যক্তিত্ব অংশ নেন।