আবাসন নিশ্চিত না করে পরীক্ষা, ভোগান্তিতে জবি শিক্ষার্থীরা

  • জবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

পরিবহন ও আবাসন সুবিধা নিশ্চিত না করেই চূড়ান্ত পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে দেশের একমাত্র অনাবাসিক জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা।

গত ১৭ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মাসুদ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অনুষ্ঠিতব্য অনার্স ৪র্থ বর্ষের শেষ সেমিস্টার এবং মাস্টার্স শেষ সেমিস্টার পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীদের নিজ দায়িত্বে আসা যাওয়া করে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরীক্ষার্থীদের জন্য করোনার কারণে পরিবহন সুবিধা দেওয়া হবে না। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের নিয়মিত যাতায়াতের জন্য পরিবহন ব্যবস্থা রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

গত ১৬ মার্চ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের পর থেকে বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই তাদের মেস-বাসা ছেড়ে দিয়ে নিজ এলাকায় অবস্থান করছিলো। দীর্ঘ লকডাউনে অর্থনৈতিক সংকটের মুখে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বাসা ও মেস ছেড়ে দিয়ে গ্রামের বাড়িতে চলে যান। বন্ধের আগে অনেকেই পার্টটাইম চাকরি ও টিউশনি করে খরচ বহন করতো। করোনায় এসব বন্ধ হয়ে যায়। অনেকেই বাসা ভাড়া নিয়ে ঝামেলায় পড়েছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা ও বাড়িওয়ালাদের আন্তরিকতায় সমস্যা কিছুটা মিটলেও এখন আবার সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে ছাত্রীদের একটি হল উদ্বোধন করার খবরে অধিকাংশ নারী শিক্ষার্থী নতুন করে মেস-বাসা নেয়নি। হঠাৎ পরীক্ষার রুটিন দেওয়ায় নতুন করে বাসা খোঁজা শুরু করেছেন। নতুন বাসায় উঠতে মোটা অঙ্কের টাকার প্রয়োজন। এদিকে পরীক্ষার রুটিন দেওয়ায় পরীক্ষা ফি বাবদ টাকা দেওয়ার জন্যও নোটিশ দিয়েছে। এই দুঃসময়ে নতুন বাসা ও পরীক্ষার ফি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা ফি মওকুফে উপাচার্যের নিকট লিখিত দাবি জানিয়ে আসলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

এছাড়াও ভুক্তভোগী একাধিক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, আমাদের সেমিস্টার ভর্তি পরীক্ষার ফরম ফিলাপের জন্য টাকা প্রয়োজন। আমাদের বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর পারিবারিক অবস্থা ভালো না। তারা টিউশনি করে তাদের খরচ চালাতো। এই ডিসেম্বরে কারো টিউশনি নাই। ফলে তারা অনেক বড় সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। এমতাবস্থায় যদি প্রশাসন আমাদের ফরম ফিলাপের টাকা মওকুফ বা বিকল্প ব্যবস্থা করে দিতো তাহলে সবার জন্য অনেক ভালো হতো।

বিজ্ঞাপন

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একাধিক শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অনেকে ঢাকায় অবস্থানরত মেস-বাসা ছেড়ে দিয়েছে। এ মুহূর্তে ঢাকায় এসে মেস-বাসা ঠিক করে পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব নয়। অনেকের টিউশন, পার্টটাইম জব কোনোটাই নেই। যার ফলে অনেক শিক্ষার্থী বাসা ভাড়া, টিউশন ফি দিতে প্রস্তুত না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী শামীম হোসেন বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে আমাদের অবস্থা খুবই নাজুক। করোনা শুরুর দিকে প্রশাসনের আর্থিক প্রণোদনা, অনলাইনে ক্লাস করার সুবিধার্থে মোবাইল ক্রয়ের লোনের বিষয় আলোচনায় আসে। পরবর্তীতে আর অগ্রগতি দেখা যায়নি। এতে অধিকাংশ শিক্ষার্থী অনলাইনে ক্লাস করতে পারেনি। এরকম পরিস্থিতিতে ঢাকায় এসে বাসা নিতে ঝামেলা পোহাতে হবে।

সার্বিক বিষয় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান বলেন, ডিনস কমিটির সভায় যে সিদ্ধান্ত হয়েছে সেটাই বাস্তবায়ন হচ্ছে। কি কারণে শিক্ষার্থীদের পরিবহন সুবিধা ও টিউশন ফি মওকুফ হচ্ছে না সেটা আমি বলতে পারব না। এটাতো অফিসিয়াল বিষয় আনঅফিশিয়ালি আমি বলতে পারব না। আমার নিজের মত দেওয়া যাবে না। আমি শুধু ডিনস কমিটি সভার সিদ্ধান্তটা বলতে পারব।