শাবিপ্রবির গবেষণায় করোনার জীবন রহস্য উন্মোচন
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক নভেল করোনাভাইরাসের জিন বিন্যাস (জিনোম সিকোয়েন্স) উন্মোচন করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বায়োটেকনোলজি (জিইবি) বিভাগের গবেষণায় দুইটি ভাইরাসের জিনোমে নতুন একটি মিউটেশন (Genome: 27862 : Del : ATCAT) পাওয়া গেছে যা বিশ্বের অন্যান্য স্থানের ভাইরাসের মিউটেশন থেকে একেবারে ভিন্ন।
মঙ্গলবার (৫ জানুয়ারি) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাকক্ষে ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ফরিদ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে আনুষ্ঠানিকভাবে জিইবি বিভাগের গবেষণা দলের পক্ষ থেকে এ তথ্য উপস্থাপন করা হয়।
জিইবি বিভাগের প্রভাষক নূর নবী আজাদ জুয়েল স্লাইডের মাধ্যমে গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করেন।
গবেষণায় ভাইরাসের জিনোম কাঠামোতে মোট ৭৯টি মিউটেশেন পাওয়া যায়। প্রোটিন লেভেলে পাওয়া যায় মোট ৪৭টি মিউটেশন যাতে ১টির সাথে একমাত্র যুক্তরাজ্যের (ইউকে) মিউটেন্টের মিল রয়েছে। তবে তা বর্তমানে ইউকের আলোচিত মিউটেন্টের সাথে কোনো মিল নেই।
গবেষণা দলটি গত নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে সিলেটের চারটি জেলা থেকে ভাইরাসের নমুনা সংগ্রহ করে জিন বিন্যাস (জিনোম সিকোয়েন্স) উন্মোচন করে। তন্মধ্যে ১০টি নমুনা (সুনামগঞ্জ-৫ এবং হবিগঞ্জ-৫) সম্প্রতি গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জা ডাটাবেইজে জমা দেওয়া হয় এবং সংস্থাটি তা গত ৩১ ডিসেম্বর প্রকাশ করে।
গবেষণা দলটি জানায়, ভাইরাসটি প্রতিনিয়ত মিউটেশনের মাধ্যমে ধরণ পরিবর্তনের ফলে টিকা কতটুকু কার্যকর হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। এ ভাইরাসের গবেষণা অব্যাহত থাকবে বলে শাবিপ্রবির এ গবেষণা দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
এসময় ভিসি প্রফেসর ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, শিক্ষকদের এ গবেষণায় আমরা গর্বিত। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের শুরু থেকে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় এ অঞ্চলের মানুষের পাশে ছিল এবং আমাদের কাজ অব্যাহত থাকবে। করোনা সনাক্তকরণ কার্যক্রমে যাতে ব্যঘাত না হয় সেজন্য আরও একটি মেশিন ক্রয় করা হয়েছে এবং জিনোম সিকোয়েন্সের জন্য নতুন মেশিন ক্রয়ের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
ভাইস চ্যান্সেলর আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ শুধু শিক্ষা দান নয়; বরং গবেষণার মাধ্যমে মানবতার কল্যাণে কাজ করা আমাদের দায়িত্ব। এসব বিষয় লক্ষ্য রেখেই গবেষণা খাতে এবার ৭ গুণের বেশি বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম, স্কুল অব লাইফ সায়েন্সেসের ডিন প্রফেসর ড. এসএম আবু সায়েম এবং জিইবি বিভাগের প্রধান প্রফেসর ড. মো. শামসুল হক প্রধান বক্তব্য রাখেন।