বেরোবি ভিসির লুকোচুরি, দেখা পায়নি ইউজিসির তদন্ত কমিটি

  • আমিনুল ইসলাম জুয়েল, বার্তা২৪.কম, রংপুর
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ভিসির সঙ্গে দেখা করতে তার বাংলোর সামনে অবস্থান নেয় শিক্ষকেরা

ভিসির সঙ্গে দেখা করতে তার বাংলোর সামনে অবস্থান নেয় শিক্ষকেরা

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর বিরুদ্ধে উত্থাপিত ১০৮টি অভিযোগের তদন্তে নেমেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।

রোববার (১৭ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত রংপুরে বেরোবি ক্যাম্পাস ও প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেছে ইউজিসির তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি।

বিজ্ঞাপন

তবে তদন্ত কমিটির সদস্যরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও দেখা পায়নি উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর। ভিসি এ দিন রংপুরে উপস্থিত থেকেও তদন্ত কমিটিকে দেখা দেননি।

ইউজিসি ভিসির বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে কুয়েটের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়াকে প্রধান করে তিন সদস্যেরর তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটির সদস্যরা হলেন- ড. ফেরদৌস জামান ও দুর্গা রাণী দাস।

বিজ্ঞাপন

তদন্তকারী দল প্রথমে অভিযোগ ওঠা ড. এম এ ওয়াজেদ রিসার্চ ইনস্টিটিউট, শেখ হাসিনা ছাত্রী হল ও স্বাধীনতা স্মারক প্রকল্প পরিদর্শন করেন। এসময় শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা।

পরিদর্শনকালে তদন্ত কমিটির প্রধান আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া সাংবাদিকদের জানান, বেরোবিতে প্রকল্পগুলোর ডিপিতে যেভাবে উল্লেখ ছিলো, কার্যাদেশ দেওয়ার পর তার ব্যত্যয় ঘটেছে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ইউজিসিকে সরেজমিনে দেখতে বলেছে। আমরা সরেজমিনে দেখলাম কি হওয়ার কথা ছিল আর কি ঘটেছে। আমরা আমাদের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরবো।

এ সময় নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার নামে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থা দেখে হতাশা প্রকাশ করে একে দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেন কমিটির সদস্য ড. ফেরদৌস জামান।

তিনি বলেন, নিয়োগের শর্ত অনুযায়ী তার (কলিমুল্লাহ) সার্বক্ষণিক উপস্থিতির বিষয়টি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা যেমন চান, তেমনি ইউজিসিও চান। আমরা তদন্তে যা পেয়েছি, দেখছি এবং শুনেছি, তা আমাদের পর্যবেক্ষণে তুলে ধরবো।

এদিকে ইউজিসির তদন্ত কমিটি আসলেও ভিসি কলিমউল্লাহ এদিনও ক্যাম্পাসে আসেননি। তার সঙ্গে কথা না বলেই তদন্ত কমিটি সন্ধ্যা ৬টার দিকে ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সংগঠন অধিকার সুরক্ষা পরিষদের নেতারা ভিসির বিরুদ্ধে ওঠা ১০৮টি অভিযোগ এবং এর প্রমাণে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তদন্ত কমিটির কাছে হস্তান্তর করেন। এদিন তারা ভিসির সঙ্গে দেখা করতে ক্যাম্পাসে সন্ধ্যা পর্যন্ত অবস্থান করেন।

এ ব্যাপারে অধিকার সুরক্ষা পরিষদের সভাপতি ড. মতিউর রহমান বলেন, ভিসির রংপুরে অবস্থান আমরা নিশ্চিত হয়েছি। আমাদের একজন সদস্যের সঙ্গে ভিসির দেখাও হয়েছে। তিনি রংপুরে থেকেও ইউজিসির তদন্ত কমিটির সঙ্গে দেখা করেননি।

শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, ১৩০০ দিনের মধ্যে ১১০০ দিনই ভিসি অনুপস্থিত। একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি এভাবে তার কর্মস্থলে না আসলে বিশ্ববিদ্যালয়টা চলে কীভাবে, প্রশ্ন রাখেন তিনি।

এদিকে এক বছরের বেশি সময় পর গত ১৬ জানুয়ারি ক্যাম্পাসে এসেছিলেন ভিসি ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ। কিন্তু কাউকে দেখা না দিয়ে গোপনে পেছনের দরজা দিয়ে ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে যান তিনি।

এ বিষয়ে জানতে উপাচার্য প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহর সঙ্গে বেশ কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।