রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কালো মেঘের ছায়া



সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

  • Font increase
  • Font Decrease

আলোর দিশারী সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। যেখান থেকে লেখাপড়া শিখে আলোকিত মানুষ হয়ে দেশ সেবায় আত্মনিয়োগ করেছেন হাজারো শিক্ষার্থী। দেশের গন্ডি পেরিয়ে দূর দেশেও আলো ছড়াচ্ছেন তারা। সেই বিশ্ববিদ্যালয় নানা সময় নানা নেতিবাচক ঘটনায় নিজের গৌরব হারিয়ে ফেলছে। আলোর দিশারী থেকে অন্ধকারে চলে যাচ্ছে নানা বিতর্কিত কাণ্ডে। খোদ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য জড়িয়েছেন নানা বিতর্কে।

৭ মে ২০১৭ থেকে ৬ মে ২০২১। এই সময়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন অধ্যাপক ড. আবদুস সোবহান। উপাচার্য আবদুস সোবহানের এই সময়টাকে বলা হচ্ছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি কালো অধ্যায়। এ সময় নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি করেন তিনি। যা নিয়ে দেশব্যাপী ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। উপাচার্য আব্দুস সোবহানের বিদায়ের পর দেশজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ছিল- কে হচ্ছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরবর্তী উপাচার্য। তিন মাস ধরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদটি শূন্য থাকলেও আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই সেই পদে নিয়োগ পেতে যাচ্ছে নতুন উপাচার্য। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ পদটিতে আবারও নিয়োগ পেতে যাচ্ছেন সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সোবহানের অনুসারীরাই।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, উপাচার্য পদে নিয়োগের জন্য গত ২৮ জুলাই তিনজনের নাম তারা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠিয়েছেন। সেই তিনজনের মধ্যে এক নম্বরে নাম রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের আহ্বায়ক অধ্যাপক হাবিবুর রহমানের নাম। দুই নম্বরে রয়েছেন ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক গোলাম সাত্তার তাপু ও তিন নম্বরে রয়েছেন সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক জান্নাতুল ফেরদৌস। এই তিনজনের মধ্য থেকে যে কোন একজনের নাম প্রধানমন্ত্রী সুপারিশ করে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাবেন। তারপর রাষ্ট্রপতির নির্দেশক্রমে শিক্ষা মন্ত্রণালয় গেজেট প্রকাশ করে উপাচার্য নিয়োগ দেবেন।

তবে অধ্যাপক হাবিবুর রহমানই উপাচার্য পদে নিয়োগ পেতে যাচ্ছেন বলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিমধ্যে খবর চাউর হয়েছে। যা নিয়ে বিব্রত ও শঙ্কা প্রকাশ করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দাবি, অধ্যাপক হাবিবুর রহমান সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সোবহানের অনুসারী ছিলেন। সাবেক উপাচার্যের সমর্থনেই তিনি প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের আহ্বায়ক পদে নির্বাচিত হন। প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের অন্যান্য সদস্যরা সাবেক উপাচার্যের দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকলেও আহ্বায়ক অধ্যাপক হাবিবুর রহমান নীরবে সেই দুর্নীতিকে সমর্থন করেন।

এ বিষয়ে প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমাদের আহ্বায়ক মহোদয় সাবেক উপাচার্যের দুর্নীতিতে নানানভাবে সহায়তা করেছেন। আমরা সাবেক উপাচার্যের দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বললেও আহ্বায়ক মহোদয় নীরব থেকেছেন। তিনি আমাদের দলের মধ্যে ভাঙন ধরিয়েছেন। আমাদের দল সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করছেন না। এমন একজন ব্যক্তি যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হন, তাহলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আরও একটি কলো অধ্যায় রচিত হবে। কেননা তিনি দায়িত্ব নিলেই সাবেক উপাচার্যের সকল অন্যায় অনিয়মকে ধামাচাপা দিবেন। পার পেয়ে যাবেন সাবেক উপাচার্য।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক সদস্য বলেন, ইতিমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ে খবর প্রচার হয়েছে অধ্যাপক হাবিবুর রহমান উপাচার্য হচ্ছেন। সাবেক উপাচার্যপন্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে মহড়া দেওয়া শুরু করেছে। মিষ্টি বিতরণের খবরও পেয়েছি। তাছাড়া আমরা যারা সাবেক ভিসির দুর্নীতি নিয়ে কথা বলেছি, তাদেরকেও দেখে নেওয়া হবে বলে নানা রকম কথা ছড়াচ্ছে। যদি অধ্যাপক হাবিবুর রহমান উপাচার্য হন তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আরেকটি কালো অধ্যায়ের অপেক্ষা করছে।

এদিকে, নতুন উপ উপাচার্য দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে তাকে কোনোভাবেই সহায়তা করছেন না প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের আহ্বায়ক অধ্যাপক হাবিবুর রহমান। বরং নানা ক্ষেত্রে বর্তমান উপ উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান উল ইসলামের বিরোধীতা করছেন তিনি। ইতিমধ্যে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বর্তমান উপ উপাচার্যের বিরুদ্ধে বক্তব্যও দিয়েছেন অধ্যাপক হাবিবুর রহমান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ অধ্যাপকরা বলছেন, উপাচার্য প্রার্থী হাবিবুর রহমান ও বর্তমান উপ উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান উল ইসলাম দুজনেই পরস্পরের বিরুদ্ধে প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের আহ্বায়ক পদে নির্বাচন করেছেন। সুতরাং তাদের মধ্যে একটা পূর্ব দ্বন্দ্ব আছে। এই দুজনই যদি উপাচার্য ও উপ উপাচার্য হন, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাজেও দ্বন্দ্ব চলমান থাকবে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হবে না। এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অশনিসংকেত।

   

মধ্যরাতে জবির ছাত্রী হলে আগুন, ভয়ে অসুস্থ ১



জবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র ছাত্রী হল বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে হঠাৎ গ্যাস লিকেজ থেকে গ্যাসের চুলায় আগুন ধরে যায়। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পুরো হলে। তবে দ্রুতই আগুন নেভাতে সক্ষম হয় ছাত্রীরা।

শুক্রবার (০৩ মে) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা না ঘটলেও ভয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে এক ছাত্রী। তবে প্রাথমিকভাবে ওই ছাত্রীর নাম পরিচয় জানা যায়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রী হলের এক শিক্ষার্থী জানান, হলের অধিকাংশ অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র নষ্ট অথবা মেয়াদোত্তীর্ণ। আগুনের ঘটনায় সবাই আতঙ্কে ছোটাছুটি শুরু করে। অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র না থাকায় ভেজা কাথা দিয়ে আগুন নেভানো হয়।

ওই ছাত্রী আরও জানান, আজ হলের কোনো ফ্লোরেই কোনো হাউজ টিউটর নেই। যে ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েছে তাকে ট্রিটমেন্ট দেওয়ার মতোও পরিস্থিতি নাই। হলের ম্যাক্সিমাম গ্যাস লাইনে লিকেজ আছে। লাল টেপ দিয়ে লিকেজ বন্ধ করে রাখা হয়েছে। এগুলো ঠিক না করলে যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। 

;

জাবিতে খাবার হোটেলে দাম বেশি রাখার অভিযোগ: ১৫ হাজার টাকা জরিমানা



মাহমুদুল হাসান, বার্তা২৪.কম, জাবি করেসপন্ডেন্ট
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) বটতলাস্থ ‘রাঁধুনী’ হোটেলের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপকের কাছ থেকে খাবারের দাম বেশি রাখার অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও কনজ্যুমার ইয়ুথ বাংলাদেশ (সিওয়াইবি)।

শুক্রবার (৩ মে) বটতলায় এবং সালাম-বরকত হল সংলগ্ন খাবারের দোকানগুলোতে খাবারের মান নিয়ন্ত্রণ, মূল্য তালিকা পর্যবেক্ষণ ও হোটেল মালিকদের স্বাস্থ্যসম্মত খাবার পরিবেশনে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এ অভিযান পরিচালিত হয়।

অভিযানে নেতৃত্ব দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ও কনজ্যুমার ইয়ুথ বাংলাদেশ (সিওয়াইবি) জাবি শাখার উপদেষ্টা ইখতিয়ার উদ্দিন ভূঁইয়া।

অভিযান পরিচালনাকালে ইখতিয়ার উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ‘রাঁধুনী’ হোটেলের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা অভিযান পরিচালনা করেছি এবং যথোপযুক্ত জরিমানা করেছি। প্রত্যেক দোকানে খাবারের মান ঠিক রাখতে সতর্ক করা হয়েছে। নিয়মিত আমাদের এই অভিযান চলবে। ভবিষ্যতে পচা-বাসি খাবার খাওয়ানোর কিংবা দাম বেশি রাখার অভিযোগ পেলে দোকান বন্ধ করে দেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, এর আগে গত বুধবার (১ মে) দর্শন বিভাগের এক অধ্যাপক ‘রাঁধুনী’ হোটেলে খাবার খেতে গেলে খাবার মূল দামের দ্বিগুণ রাখেন হোটেল মালিক রিপন মিয়া।

ভাউচারে দেখা যায়, ৩০ টাকা মূল্যের তিন প্লেট ভাতের দাম রাখা হয়েছে ৯০ টাকা। ৩৫ টাকা মূল্যের দইয়ের দাম রাখা হয়েছে ১০০ টাকা। ৬০ টাকা মূল্যের টেংরা মাছের দাম রাখা হয়েছে ৮০ টাকা। শাক ও কচুর লতির দাম ৮০ টাকা হলেও রাখা হয়েছে ৩শ ৪০ টাকা। ১শ টাকা মূল্যের দুই পিস রুই মাছের দাম রাখা হয়েছে ৩শ টাকা।

;

চাকরির বয়স ৩৫ বছর করার দাবিতে ১১ মে ঢাবিতে সমাবেশ



ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর চেয়ে আন্দোলন জোরদার করতে আগামী ১১ মে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে সমাবেশের ডাক দিয়েছে ‘চাকরিতে ৩৫ প্রত্যাশী সাধারণ শিক্ষার্থী সমম্বয় পরিষদ’।

শুক্রবার (৩ মে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পরিষদের মুখপাত্র শরিফুল হাসান শুভ এ ঘোষণা দেন।

শরিফুল হাসান শুভ বলেন, চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা স্থায়ীভাবে বৃদ্ধি চাই। অর্থাৎ আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, ৩৫ বছর চাই। তারই ধারাবাহিকতায় ২০২৩ সালের ৩০ আগস্ট থেকে লাগাতার কর্মসূচির অংশ হিসেবে দাবি বাস্তবায়নের জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে শিক্ষামন্ত্রী মহোদয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বরাবর ডিও লেটার প্রদান, জাতীয় পার্টির মহাসচিব অ্যাডভোকেট মো. মুজিবুল হক চুন্ন, এমপি জোর সুপারিশ করেছেন এবং সেই সঙ্গে দাবি বাস্তবায়নে ৩৫ জন স্থানীয় সংসদ সদস্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে নীতিগত সমর্থন করে জোর সুপারিশ করেন।

সেই সঙ্গে দাবি বাস্তবায়নে ৫ জন পেশাজীবী সংগঠন ও ৩ জন ছাত্র সংগঠনের লিখিত সুপারিশের ভিত্তিতে দ্রুত প্রজ্ঞাপন চেয়ে আগামী ১১ মে শিক্ষার্থী সমাগম পর্যন্ত আলটিমেটাম দেওয়া হলো।

তিনি আরো বলেন, চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা স্থায়ীভাবে বাড়াতে হবে অর্থাৎ আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী এটা নির্ধারণ করতে হবে। এ দাবি নিয়ে আমরা অনেকদিন ধরে লাগাতার কর্মসূচি পালন করে আসছি। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি।

উল্লেখ্য, এ সময় তিনি চাকরির বয়স ৩৫ বছর চাওয়ার নানাবিধ যৌক্তিকতা ও উপকারিতা উপস্থাপন করেন।

;

জবি শিক্ষককে দেখে নেয়ার হুমকি, সতর্ক করেই দায় সেরেছে প্রশাসন



জবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহ মো. নিস্তার জাহান কবিরকে প্রকাশ্য হেনস্থা ও হুমকির ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থী সাঈদুল ইসলাম সাঈদকে সতর্ক করেই দায় সেরেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এ নিয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে বিরূপ প্রতিক্রিয়া। তাদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দীর্ঘদিনের দায়সারা কাজের ফলশ্রুতিতেই এখন শিক্ষককেও হেনস্তার শিকার হতে হচ্ছে। এভাবে অপরাধ করেও পার পেয়ে যাওয়ার ফলে অপরাধ প্রবণতা আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিচারহীনতার সংস্কতির ফলে ভবিষ্যতে কোনো শিক্ষক মারধরের শিকার হলেও সেটিতে কেউ অবাক হবে না।

গত সোমবার (২৯ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত বছরের ২৮ আগস্ট, সোমবার বিকাল ৩টা ৫০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধ ভাস্কর্যের সামনে শিক্ষকদের বাস ছাড়ার পূর্ব মুহূর্তে আপনি (সাঈদুল ইসলাম সাঈদ) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শাহ মোঃ নিসতার জাহান কবিরের সঙ্গে চরম ধৃষ্টতামূলক আচরণ করেন। এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির মতামত অনুসারে আপনাকে ভবিষ্যতে এ ধরণের কর্মকান্ড না করার এবং করলে কঠিনতম শাস্তি প্রদান করা হবে মর্মে সর্তক করা হলো।

এই ঘটনায় গত বছর ৩১ আগস্ট তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক ড. অশোক কুমার সাহা, সদস্য হিসেবে সাবেক সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও ডেপুটি রেজিস্ট্রার হেদায়েতুল্লা তুর্কিকে মনোনীত করা হয়।

এভাবে প্রকাশ্যে একজন শিক্ষককে হেনস্তা ও হুমকির ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছিল। এ ঘটনায় জড়িত শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী সাঈদুল ইসলাম সাঈদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের দাবি জানিয়েছিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। এছাড়া সাঈদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপাচার্য বরাবর আলাদা লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছিল। পরে সাঈদের বিরুদ্ধে মানববন্ধনের ডাক দিলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আশ্বাসে মানববন্ধন স্থগিত করে বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. অশোক কুমার সাহা বলেন, তদন্ত কমিটি প্রত্যক্ষদর্শীদের জবানি নিয়ে একটি লিখিত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। সেই অনুযায়ী কিছু সুপারিশমালা দেওয়া হয়েছে৷ এখন প্রশাসন এটাকে কীভাবে নিষ্পত্তি করবে সেটা তাদের ওপর নির্ভর করছে। এখন বাকী দায়িত্ব প্রশাসনের ওপর, তদন্ত কমিটির না। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন তাদের পছন্দ না হলে তদন্ত আবার করতে পারে। তদন্ত একাধিক বার হতে পারে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম বলেন, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন ও সুপারিশের সাপেক্ষে উপাচার্যের নির্দেশে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে৷ অপরাধের ধরনের উপর ভিত্তি করেই তাকে প্রাথমিকভাবে সতর্ক করা হয়েছে। ভুক্তভোগী শিক্ষক যদি এই বিচারে সন্তুষ্ট না হোন তবে পুনরায় তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষক ড. শাহ মো. নিসতার জাহান কবির বলেন, সন্তুষ্টি-অসন্তুষ্টির বিষয়ে কিছু বলবো না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সকল সিদ্ধান্তকে আমি সম্মান করি। তবে মতামত প্রকাশ বা সমালোচনার অধিকার সকলেরই রয়েছে। প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তে ইতিবাচক কিছুই হয় নি। এর ফলে অন্যায়কারীরা আরও শক্তিশালী হবে, তারা আরও সাহস পাবে। তারা ভাববে অন্যায় করে কিছু হয় না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তো কিছু করতে পারে না, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ক্ষমতা নেই।

তিনি আরও বলেন, ছেলেটি আমাদের বিভাগের এসে বিভাগের সিদ্ধান্তকে পরিবর্তন করার চেষ্টা করেছে। বিভাগের সিদ্ধান্তকে পরিবর্তন করার ক্ষমতা বা শক্তির উৎস কোথায় সেটি খুঁজে বের করা উচিত ছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের।

জানা যায়, ডিবেটিং সোসাইটির নির্বাচনের জন্য সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে অভিযুক্ত সাঈদুল ইসলাম সাঈদ তার পছন্দের ২ জনকে ভোটার করার জন্য অধ্যাপক শাহ নিস্তারকে অনুরোধ করেন। এ সময় অধ্যাপক নিস্তার বলেন, প্রতিনিধি মনোনয়নের জন্য আলাদা শিক্ষক রয়েছেন। তারা বাছাই করে তা নির্ধারণ করেন। তবে সাঈদ অধ্যাপক নিস্তারকে নিজের পছন্দের লোককে ভোটার করার জন্য চাপ দিতে থাকেন। পরে তিনি অস্বীকৃতি জানালে প্রকাশ্যে 'দেখে নেয়ার' হুমকি দেন।

;