শাবিপ্রবিতে ঢাবির ভর্তি পরীক্ষা, শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি লাঘব

  • শাবিপ্রবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘ সাড়ে ১৮ মাস যাবৎ শাহাজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিরাজ করছে প্রাণশূন্যতা। যাদের জন্য এ ক্যাম্পাস, তাদের নেই পদচারণা। কিন্তু অতিথিদের দ্বারা বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখা দিয়েছিলো সাময়িক সময়ের মুখরিত পরিবেশ। যে পরিবেশটা দেখা যেতো মহামারির আগে, যখন ক্যাম্পাস মুখরিত থাকতো ১০ হাজারেরও অধিক শিক্ষার্থীদের মিলনমেলায়।

গত শুক্রবার (১ অক্টোবর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (২০২০-২০২১ সেশন) 'ক' ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা এবং পরের দিন (২ অক্টোবর) 'খ' ইউনিটের পরীক্ষার সুবাদে শাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে আগমণ ঘটেছিলো স্বপ্ন লালন করা একঝাঁক তারুণ্যের। পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে আগতদের মাঝে দেখা গিয়েছিলো আশা ও স্বপ্নের বীজ। যা রোপণ করতে এসেছিলো শাবিপ্রবি ক্যাম্পাসের সাহাচার্যে।

বিজ্ঞাপন

করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ১ম বর্ষের (২০২০-২০২১ সেশন) ভর্তি পরীক্ষা রাজধানীর বাহিরে ৭টি বিভাগীয় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তারই ধারাবাহিকতায় শাহাজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সিলেট বিভাগের ৪ জেলার ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের কেন্দ্র নির্ধারিত হয়। এর ফলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ভোগান্তির লাঘব হয়েছে বলে জানা যায়।

শাবিপ্রবিতে পরীক্ষা দিতে আসা এমন কয়েকজন ভর্তিযুদ্ধার সাথে কথা হয় বার্তা২৪.কমের। সুনামগঞ্জ থেকে 'ক' ইউনিটের পরীক্ষা দিতে আসা সুমাইয়া জান্নাত প্রীতিও ছিলেন তাদের মধ্যে একজন। নিজ বিভাগের পাবিলিক বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পরীক্ষা দিতে পারায় তার মধ্যে বিরাজ করছিলো স্বস্তি।

বিজ্ঞাপন

প্রীতি জানায়, নিজ জেলার পাশেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা দিতে পেরেছি এটা আমার জন্য একটা মহাসুযোগ ও সুবিধার ছিলো। কারণ যদি ঢাকায় পরীক্ষা দিতে হতো তাহলে অতিরিক্ত গাড়ি ভাড়া, আবাসন সমস্যা তারপর নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে হতো। পাশাপাশি পরীক্ষা দেওয়া নিয়েও থাকতো অনিশ্চয়তা। আমরা আমাদের সিনিয়র আপু ও ভাইদের এ সমস্যার সম্মুখীন হতে দেখেছি। পরীক্ষার কেন্দ্র কাছে হওয়ায় আমাদেরকে সেই ভোগান্তির সম্মুখীন হতে হয়নি।

হবিগঞ্জ থেকে শাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে পরীক্ষা দিতে এসেছিলেন মুনতাসীর মামুন। ' ক' ইউনিটের পরীক্ষায় ভালো হয়েছে বলে তার মানসিক অবস্থা ছিলো ফুরফুরা। কথা হলে সে জানায়, নিজের বিভাগীয় শহরে ঢাবির পরীক্ষা হওয়ায় ভোগান্তির অবসান হয়েছে। কারণ ঢাকায় গিয়ে পরীক্ষা দিয়ে আসা যাওয়া খুবই কষ্ট। তাছাড়া ঢাবির পরীক্ষার সময় ঢাকা শহরে সৃষ্টি হয় অনেক যানজট। এতে অনেকই পরীক্ষার কেন্দ্র উপস্থিত হতে পারে না যথা সময়ে।

মৌলভীবাজার থেকে বাবার সাথে এসেছিলেন ফাহমিদা জন্নাত। 'খ' ইউনিটের পরীক্ষা ভালো হয়েছে জানিয়ে সে বলে, শাবিপ্রবিতে পরীক্ষা হওয়ায় আমাদের মতো প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা শিক্ষার্থীদের জন্য সুবিধা হয়েছে। কোনো ভোগান্তির সম্মুখীন হতে হয়নি।

ফাহমিদার পিতা মাহবুবুল আলম বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় বিভাগীয় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে নেওয়ার সিদ্ধান্ত যথার্থ ছিলো। আশা করি শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি লাঘবে এই ব্যবস্থা সরকারিভাবে ভবিষ্যতেও চালু রাখা হবে।

প্রসঙ্গত, গত ১ অক্টোবর ঢাবির 'ক' ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় শাবিপ্রবিতে সিলেট বিভাগ থেকে আবেদনকারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিলো ৩ হাজার ৩০৫ জন। পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীর শতকরা হার ছিলো ৭৭.৩৪ শতাংশ। পরের দিন (২ অক্টোবর) ' খ ' ইউনিটের আবেদনকারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিলো ৯২১ জন। উপস্থিতির শতকরা হার ছিলো ৮৪.০৪ শতাংশ।

এছাড়া আগামী ৯ অক্টোবর 'চ' ইউনিটে ২৬২ জন, ২২ অক্টোবর 'গ' ইউনিটে ৪২৮ জন এবং ২৩ অক্টোবর 'ঘ' ইউনিটে ২১৮৩ জন পরীক্ষার্থী শাবিপ্রবি কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন।