পূর্বাচলে কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাসের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন

  • নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

পূর্বাচলে কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাসের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন

পূর্বাচলে কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাসের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন

রাজধানীর পূর্বাচলে নিজস্ব স্থায়ী ক্যাম্পাসের নির্মাণকাজ শুরু করল দেশের প্রথম সারির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ (সিইউবি)।

পূর্বাচলের ৯ নম্বর সেক্টরে শনিবার (২৩ অক্টোবর) বেলা ৩টায় বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে স্থায়ী ক্যাম্পাসের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন ঢাকায় কানাডার হাইকমিশনার বেনোয়া প্রিফন্টেইন।

বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা এবং বোর্ড অফ ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ড. চৌধুরী নাফিজ সরাফাত।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে কানাডিয়ান হাইকমিশনার বেনোয়া প্রিফন্টেইন বলেন, আমি যখন প্রথম চৌধুরী নাফিজ সরাফাতের সঙ্গে দেখা করি, তখন তিনি আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস নিয়ে পরিকল্পনার কথা বলেছিলেন। কখনোই ভাবিনি, আমিই সেটির ভিত্তি উদ্বোধনে থাকব। ঢাকায় আমার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। আর এ জন্য সাড়ে চার বছর আগে তার সঙ্গে প্রথম দেখা করার পর আজ এখানে এই অনুষ্ঠানে এসে খুব ভালো অনুভব করছি।

বিজ্ঞাপন

‘নাফিজ সরাফাত আমাকে তার কিছু স্বপ্নের কথা বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, এই ক্যাম্পাস ঢাকায় সব সময় কানাডার একটি ছোট অংশ হবে। আমি এখানে এসেও তাই দেখছি। চারপাশে সবুজ মাঠ। যখন এই ক্যাম্পাস তৈরি হয়ে যাবে, তখন এখানে প্রতিদিন হাজার হাজার শিক্ষার্থী থাকবে। পড়াশোনার পাশাপাশি তারা আরও অনেক কিছু করবে। সেসব অভিজ্ঞতা তারা এখানে অর্জন করবে, যা শুধু বিশ্ববিদ্যালয়েই পাওয়া যায়।’

তিনি বলেন, আমি এখন থেকে ১৫ বছর পরের কথা ভাবছি, যখন নতুন নতুন কোম্পানি আসবে আর এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সেগুলো পরিচালনা করবে। এর মাধ্যমে তারা মেধা ও প্রযুক্তি দিয়ে এই শহর ও দেশকে উন্নত করবে।

কানাডিয়ান হাইকমিশনার বলেন, ‘বাংলাদেশ ও কানাডার সম্পর্ক খুব ভালো। আমি স্বপ্ন দেখি যে এই ভালো সম্পর্ক আরও বহু দূর যাবে। আমি বিশ্বাস করি, কানাডার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে কাজ করবে। কানাডার শিক্ষার্থীরা এখানে আসবে। তারা এশিয়া সম্পর্কে জানবে। বাংলাদেশের শিক্ষার্থী ও অধ্যাপকরা কানাডা যাবেন।

অনুষ্ঠানে কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা এবং বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ড. চৌধুরী নাফিজ সরাফাত বলেন, আজকের দিনটি আমাদের জন্য এক বিশেষ মাইলফলক। কারণ আমরা কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের স্থায়ী ক্যাম্পাসের ভিত স্থাপন করেছি। এটি এমন একটি প্রতিষ্ঠান যা শিক্ষার্থীদের তাদের নিজস্ব দিগন্তের বাইরে অন্বেষণ করতে, সহনশীল হতে ও সংস্কৃতি, জাতি, ধর্ম বা প্রেক্ষাপটের বিভেদকে অতিক্রম করে পারস্পরিক বন্ধন আবিষ্কারে অনুপ্রাণিত করে।

তিনি বলেন, আমাদের ফ্যাকাল্টি, কর্মকর্তা, শিক্ষার্থী, অ্যালামনাইসহ সিইউবি-সংশ্লিষ্ট সবার কাছে আমি কৃতজ্ঞ। শুরুর দিন থেকে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কে সাহায্য ও দিকনির্দেশনা দেওয়ায় আমি আন্তরিকভাবে বেনোয়া প্রিফন্টেইন ও কানাডিয়ান হাইকমিশনের কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানাই।

‘আমাদের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের কাজ আজ শুরু হলো। আমার বিশ্বাস, কাজ শেষ হলে ক্যাম্পাসটি ঢাকা শহর ও দেশের শিক্ষা খাতে একটি উল্লেখযোগ্য সংযোজন হবে।’

স্থায়ী ক্যাম্পাসের বিভিন্ন দিক বর্ণনা করে ড. চৌধুরী নাফিজ সরাফাত বলেন, আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয় ভবন, দৃষ্টিনন্দন লেক এবং বিশাল খেলার মাঠ থাকছে আমাদের ক্যাম্পাসে। তার চেয়েও বড় কথা, এটি হতে যাচ্ছে সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব একটি ক্যাম্পাস।

‘সর্বাধুনিক ল্যাব, স্টুডিও, লাইব্রেরি, থিয়েটার, স্টাডি জোনের সঙ্গে থাকছে শিক্ষার্থী লাউঞ্জ, অবসর কাটানোর জায়গা, জিম, ফুড লাউঞ্জসহ বিভিন্ন সুবিধা। শিক্ষার্থীদের মনে রাখার মতো একটি অভিজ্ঞতা দিতেই ক্যাম্পাসটি গড়ে তোলা হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা সব সময় পর্বতশীর্ষের চাকচিক্য দেখে মুগ্ধ হই। কিন্তু আমার কাছে পর্বতের ভিত্তিপ্রস্তরটির গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। এ কারণেই আজকের দিনটি এতটা তাৎপর্যপূর্ণ।

কানাডিয়ান হাইকমিশনের কাউন্সিলর এবং সিনিয়র কমিশনার এঞ্জেলা ডার্ক,স্ট্রাটেজিক ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড-এর চেয়ারম্যান আঞ্জুমান আরা সাহিদ, কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশেরট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য রাহিব চৌধুরী এবং আব্দুল মুমেন গ্রুপের সিইও মাইনুদ্দিন মুনেম অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের নির্বাহী চেয়ারম্যান শাহানুল হাসান খানএবংট্রাস্টি বোর্ডের সিনিয়র উপদেষ্টা প্রফেসর ড. এইচ এম জহিরুল হক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

পূর্বাচলে ১২ বিঘা জমিতে গড়ে তোলা হচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির সুবিশাল ক্যাম্পাস। সেখানে নির্মাণ করা হবে অ্যাকাডেমিক ভবন, প্রশাসনিক ভবন, ল্যাব বিল্ডিং, বিনোদন, অডিটোরিয়াম, লাইব্রেরি ও প্রার্থনাকক্ষ।

বিশ্বমানের স্থাপত্য নকশায় গড়ে তোলা হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়টির নান্দনিক স্থায়ী ক্যাম্পাস।

কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশে রয়েছে আধুনিক সময়ের উপযোগী বিভিন্ন বিভাগ। শিক্ষার্থীদের উৎসাহ দিতে রয়েছে বৃত্তির সুযোগ। ইনফরমেশন সিস্টেমস অডিট অ্যান্ড কন্ট্রোল অ্যাসোসিয়েশনসহ বিভিন্ন ব্যবসায়িক ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ততা আছে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের।

এ ছাড়া কানাডাসহ বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত আছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সংগতি রেখে সাজানো হয়েছে পাঠ্যক্রম।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা সর্বোত্তম মানের শিক্ষা নিশ্চিতে বদ্ধপরিকর। দেশের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব গঠনে প্রায়োগিক জ্ঞানের ওপর জোর দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।