জেলহত্যা দিবসে জাবি ছাত্রলীগের মোমবাতি প্রজ্বলন
জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে জাতীয় চার নেতার প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। বুধবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এই মোমবাতি প্রজ্জ্বলন কর্মসূচি পালিত হয়।
মোমবাতি প্রজ্বলন কর্মসূচির শুরুতে ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর নিহত জাতীয় চার নেতার স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন উপস্থিত নেতাকর্মীরা।
এসময় উপস্থিত ছিলেন সদ্য বিলুপ্ত জাবি শাখা ছাত্রলীগের পাঠাগার বিষয়ক সম্পাদক মাহবুবুল হক রাফা, উপ- শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক শাহরুখ শাহরিয়ার সৌমিক, উপ-স্কুল ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক আরিফুল আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক আকলিমা আক্তার এশা, নাট্য ও বিতর্ক বিষয়ক সম্পাদক রতন বিশ্বাস, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক আলম শেখ, উপ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ইসমাইল হোসেন, সহ-সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল আজিম সৈকত, হাবিবুর রহমান লিটন, তানজিলুল ইসলাম, রাকিবুল হাসান শাওন সহ বিভিন্ন হল ইউনিটের প্রায় দুই শতাধিক নেতাকর্মী।
জাবি শাখা ছাত্রলীগের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির উপ-স্কুল ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক আরিফুল আলম বলেন, জেলখানায় জঘন্য হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে এদেশের ঘাতক-দালাল ও রাজাকারেরা বঙ্গবন্ধু ও তার ঘনিষ্ঠ সহচর জাতীয় চার নেতার নাম চিরতরে মুছে দেওয়ার ব্যর্থ চেষ্টা করেছে।
কিন্তু বাংলাদেশের নামের সাথে তাঁদের নাম আজীবন জড়িয়ে থাকবে। বাংলাদেশের মানুষ তাদেরকে আজীবন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে। একইসাথে বাংলাদেশে যেন কখনও ঘাতক-দালালেরা মাথা চারা দিয়ে উঠতে না পারে সে বিষয়ে জাবি ছাত্রলীগ সবসময় সোচ্চার থাকবে।
সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আকলিমা আক্তার এশা বলেন, বঙ্গবন্ধুর সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ এবং মুক্তিযুদ্ধে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখা চার নেতাকে হত্যার মাধ্যমে বাংলাদেশের উন্নতির অপার সম্ভাবনাকে হত্যা করতে চেয়েছিল স্বাধীনতা বিরোধী চক্র। বাংলাদেশ আজ যে অবস্থানে আছে, জাতীয় চার নেতা বেঁচে থাকলে আরও আগেই সেই অবস্থায় আসতে পারতো। মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে তাঁদেরকে আমরা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি।
উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর ৩ নভেম্বর বঙ্গবন্ধুর আজীবন রাজনৈতিক সহযোদ্ধা ও মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমেদ, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী ও এএইচএম কামারুজ্জামানকে কারাগারে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করে ঘাতকচক্র।
কারাগারের নিরাপদ আশ্রয়ে জঘন্য ও বর্বরোচিত এই হত্যাকাণ্ড পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। তৎকালীন স্বঘোষিত রাষ্ট্রপতি খন্দকার মোস্তাক আহমদের প্ররোচনায় এক শ্রেণীর উচ্চাভিলাসী মধ্যম সারির জুনিয়র সেনা কর্মকর্তারা এ নির্মম হত্যাকাণ্ড চালায়। রাষ্ট্রের হেফাজতে হত্যাকাণ্ডের এই ঘটনাটি বাংলাদেশে পালিত হয়ে আসছে 'জেলহত্যা দিবস' হিসেবে। এ হত্যাকাণ্ড বাঙালি জাতির ইতিহাসে কলঙ্কজনক ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে।