জাবিতে চান্স পেয়েও টাকার অভাবে ভর্তি হতে পারেনি সাইফুল!
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজিতে (আইআইটি) ভর্তি পরীক্ষায় দশম হয়েও টাকার অভাবে ভর্তি হতে পারেনি কৃষক বাবার ছেলে সাইফুল ইসলাম। ভর্তি পরীক্ষায় দশম হয়ে বাবা-মায়ের মুখ আলোকিত করেন সাইফুল। তবে সে আলো ফিকে হতে খুব বেশি সময় লাগেনি। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় এমন চমকপ্রদ ফলাফল যেনো দিবাস্বপ্ন হয়ে অন্ধকার করে ফেলছে সাইফুলের চারপাশ।
সাইফুলের গ্রামের বাড়ি শরিয়তপুর সদরে। বাবার নাম ইলিয়াছ খান। পেশায় তিনি কৃষক। গত ১২ নভেম্বর প্রকাশিত হয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজির (আইআইটি) ফলাফল। ইনস্টিটিউটটিতে প্রতি আসনের বিপরীতে ৪১১ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। সেখানে অদম্য মেধাবী সাইফুল দশম স্থান অধিকার করে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজি থেকে পাওয়া তথ্য মতে, প্রথম মেধা তালিকা থেকে ভর্তির জন্য টাকা জমাদানের নির্ধারিত তারিখ ছিলো ৬ ডিসেম্বর থেকে ১২ ডিসেম্বর। এ ছাড়া সব কাগজপত্র জমাসহ ভর্তির নির্ধারিত তারিখ ছিলো ১৫ ডিসেম্বর।
তবে ভর্তির নির্ধারিত তারিখের মধ্যে টাকার ব্যবস্থা করতে না পারায় ভর্তি হতে পারেননি সাইফুল। এ ছাড়া স্মার্ট ফোন না থাকার কারণে ভর্তির নির্ধারিত তারিখ সম্পর্কেও অবগত ছিলেন না তিনি। তবে ১৪ ডিসেম্বর ভর্তির তারিখ সম্পর্কে অবগত হওয়ার পরেই ইনস্টিটিউট পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করে সাইফুল। তবে ইনস্টিটিউট থেকে ভর্তির তারিখ শেষ হয়ে গেছে বলে জানানো হয়।
এদিকে সময় পার হওয়ার প্রেক্ষিতে মানবিক বিবেচনা করে ভর্তির অনুরোধ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর আবেদন করেন সাইফুল। যা কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষার কমিটিতে আলোচনা হয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যদের আপত্তির মুখে সেটি বাতিল হয় বলে জানান আইআইটির পরিচালক অধ্যাপক শামীম কায়সার।
শামীম কায়সার বলেন, ছেলেটি নির্ধারিত তারিখের মধ্যে টাকা জমা দিতে পারেনি। টাকা জমার তারিখ শেষ হওয়ার পরে আমাদেরকে অবগত করে। তবে সে মুহুর্তে আমাদের কিছু করার ছিল না। আমি পরবর্তীতে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর আবেদন করতে বলি। সে আবেদন করে, কিন্তু ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্রীয় কমিটি এ ব্যাপারে আপত্তি তোলেন। কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় তার একটি মাত্র আবেদন নিয়ে আলোচনা হয়। কিন্তু বিভিন্ন অনুষদের ডিনরা বলেন এ আবেদন গ্রহণ করলে আরও অনেকের আবেদন গ্রহণ করতে হবে। ফলে আমরা তার জন্য আর কিছু করতে পারিনি।
এ বিষয়ে সাইফুল ইসলাম বলেন, অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় আমি টাকা পরিশোধ করতে পারিনি। কিন্তু আমার ভর্তির তারিখের মধ্যে বিভাগে যোগাযোগ করি। আমার কাছ থেকে বিভাগ দরখাস্ত নেন এবং তা ভিসির কাছে পাঠিয়েছেন। কিন্তু এখন তারা আমাকে বলেছে যে, আমাকে ভর্তি নেওয়া সম্ভব না। আমি দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে এখানে চান্স পাই। টাকার অভাবে আর কোথাও পরীক্ষা দেইনি। এখন কী করব বুঝতে পারছি না।