১০১ পেরিয়ে ১০২-এ পদার্পণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের



আরিফ জাওয়াদ, ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
১০১ পেরিয়ে ১০২-এ পদার্পণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের

১০১ পেরিয়ে ১০২-এ পদার্পণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, নানা সংগ্রাম ও গৌরবময় কণ্টকাকীর্ণ ১০১ বছর পাড়ি দিয়ে আজকের এদিনে (১ জুলাই) ১০২তম বর্ষে পদার্পণ করল। ১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাপ্তি ঝুলি অপ্রাপ্তি তুলনায় ঢের বেশি। যেখানে রয়েছে গৌরব গাঁথা ফেলে আসা নানা গল্প। জাতির ক্লান্তি লগ্নে সর্বদাই এ বিশ্ববিদ্যালয় ছিল একমাত্র নিশানা।

দেশ ভাগের পর ৪৮ থেকে ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৬২’র শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬’র ছয় দফা, ৬৯’র গণঅভ্যুত্থান, ৭১’র স্বাধীনতা সংগ্রাম, ৯০’র স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনসহ বাংলাদেশের ইতিহাসের প্রতিটি পরতে পরতে এই নাম জড়িয়ে আছে দেশের এ বিদ্যাপিঠ। পৃথিবীর হয়তো অনেক নামী বিশ্ববিদ্যালয় খুঁজে পাওয়া সম্ভব হবে, তবে তো একটি রাষ্ট্র সৃষ্টি এবং রক্ষায় কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে না। সেখানে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত এ বিশ্ববিদ্যালয় এক বিরল ইতিহাস স্থাপন করেছে।

বঙ্গভঙ্গ রদের অল্প কিছুদিন পরেই ১৯১২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ঘোষণা আসে। তারই অংশ হিসেবে ওই বছরের ২৭ মে নাথান কমিশন গঠিত হয়। ১৯১৩ সালের ডিসেম্বর মাসে কমিশন ইতিবাচক রিপোর্ট দিলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পথ আরো এক ধাপ এগিয়ে যায়। তবে এর পরই বিশ্বযুদ্ধের দামামা বেজে উঠলে সেই কার্যক্রম স্তিমিত হয়ে যায়। ১৯১৭ সালে স্যাডলার কমিশন পুনরায় ইতিবাচক রিপোর্ট দিলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা চূড়ান্ত হয়। অবশেষে ১৯২০ সালের ১৩ মার্চ ভারতীয় আইনসভায় দ্য ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যাক্ট ১৯২০ পাস হয়। ২৩ মার্চ গভর্নর জেনারেল এই বিলে সম্মতি প্রদান করেন। এর ফলে ১৯২১ সালের ১ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

প্রতিষ্ঠাকালীন তিনটি অনুষদ ও ১২টি বিভাগ নিয়ে একটি আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে যাত্রা শুরু হয়। প্রথম শিক্ষাবর্ষে বিভিন্ন বিভাগে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ছিল ৮৭৭ জন এবং শিক্ষক সংখ্যা ছিল ৬০ জন। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৩টি অনুষদ, ১৩টি ইনস্টিটিউট, ৮৪টি বিভাগ, ৬০টি ব্যুরো ও গবেষণা কেন্দ্র এবং ছাত্রছাত্রীদের ১৯টি আবাসিক হল, ৪টি হোস্টেল ও ১৩৮টি উপাদানকল্প কলেজ ও ইনস্টিটিউট রয়েছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ৪৬ হাজার ১৫০ জন। পাঠদান ও গবেষণায় নিয়োজিত রয়েছেন প্রায় ২ হাজার ৮ শিক্ষক।

 

বাংলাদেশ জাতিরাষ্ট্র গঠন কিংবা স্বার্থ আদায়ে সংগ্রামের বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট গর্ব করার মত হলেও। বিশ্বের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাল মিলিয়ে চলতে অনেকাংশেই ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। গবেষণা শিক্ষকদের অনীহা, গবেষণাতে চৌর্যবৃত্তি, রাজনীতির নামে শিক্ষকদের মাঝে নোংরা সংস্কৃতি, নোংরা লেজুড়বৃত্তি ছাত্র রাজনীতি সহ নানা অভিযোগ হরহামেশাই গণমাধ্যমে উঠে আসে।

শিক্ষার্থী ও সচেতন মহলের প্রত্যাশা হয়তো লড়াই-সংগ্রাম ও অধিকার আদায়ের পাশাপাশি দক্ষ জনশক্তি বির্নিমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিরলসভাবে কাজ করে যাবে। হয়তো বিশ্বের অন্যতম প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত পাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

এ বছর গবেষণা-উদ্ভাবনেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বেশ জোর দেবে। যা দেশের এ সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, প্রিয় এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কোভিড-১৯ মহামারিসহ বৈশ্বিক নানামুখী অভিঘাত মোকাবিলা করে আমরা চতুর্থ শিল্পবিপ্লব উপযোগী বিশ্ববিদ্যালয় বিনির্মাণের পথে এগিয়ে চলেছি। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টিতে কার্যকর ভূমিকা রাখা আমাদের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। যুগ ও সমাজের চাহিদা অনুযায়ী গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা, নতুন নতুন উদ্ভাবন, অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা, মুক্তচিন্তার উন্মেষ ও বিকাশ, সৃজনশীলতার চর্চা এবং নতুন ও মৌলিক জ্ঞান সৃষ্টির উদ্দেশ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কাজ করে যাচ্ছে। কারিকুলাম ও পাঠক্রমের আধুনিকায়ন এবং মৌলিক ও প্রায়োগিক গবেষণার প্রতি আমরা বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছি। গবেষণার সুফল সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

এর অংশ হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো ‘গবেষণা-প্রকাশনা মেলা’ আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান ও উদ্যোক্তাদের যোগসূত্র স্থাপিত হবে বলে আশা করছি। অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠন এবং বিশ্বমানের গ্র্যাজুয়েট তৈরিতে আমি শিক্ষক, গবেষকসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সদয় সহযোগিতা ও সমর্থন প্রত্যাশা করি। প্রকৃতি ও পরিবেশের উন্নয়ন ঘটিয়ে অবারিত জ্ঞান চর্চা এবং নতুন উদ্ভাবনের মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠে পরিণত হবে- এ আমার বিশ্বাস। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই।

এদিকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দিনব্যাপী কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান সকাল ১০টায় শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রের খেলার মাঠে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের বিভিন্ন কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন।

কর্মসূচি অনুযায়ী সকাল ১০টার আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল হল ও হোস্টেল থেকে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা শোভাযাত্রা সহকারে শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রের খেলার মাঠে সমবেত হবেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জাতীয় পতাকা এবং বিশ্ববিদ্যালয় ও হলগুলোর পতাকা উত্তোলন, পায়রা উড়ানো, কেক কাটা এবং সংগীত বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে থিম সং পরিবেশিত হবে।

সকাল ১১টায় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে ‘গবেষণা ও উদ্ভাবন : ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া সহযোগিতা’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ ।

   

শেকৃবির নবাব হলে মাদকসহ আটক ৫



শেকৃবি করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শেকৃবি) চার বহিরাগতসহ এক সাবেক শিক্ষার্থীকে মাদকসহ আটক করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টোরিয়াল টিম এবং হল প্রশাসন।

মঙ্গলবার (৭ মে) বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব সিরাজউদ্দৌলা হলের ছাদ এবং হল গেট থেকে মাদকসহ তাদের আটক করা হয়।

আটককৃতরা হলেন রায়হান হুসাইন, আতিকুর রহমান, আমিরুল ইসলাম শান্ত, শামীম আহম্মেদ এবং শুভ। এদের মধ্যে রায়হান এবং শান্ত উভয় খুলনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। শামীম ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, আতিকুর রহমান স্টেট ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের সিএস‌ই ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থী এবং শুভ শেকৃবি থেকে ড্রপ আউট হ‌ওয়া শিক্ষার্থী।

জানা যায় নবাব সিরাজউদ্দৌলা হলের এ ব্লকের ৩১১ নাম্বার রুমে সোমবার রাতে এসে উঠেন আতিকুর রহমান। বাকি তিনজন বহিরাগত হলে এসে ভিন্ন রুমে ছিলেন। বিকালে রায়হান, শুভ, শামীম এবং শান্ত মিলে হলের ছাদে মাদক সেবনের সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং হল প্রশাসনের হাতে আটক হন অন্যদিকে আতিকুর রহমানকে মাদকসহ হল গেট থেকে আটক করা হয়।

পরে তাদের ৫ জনকেই পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়।

এ বিষয়ে নবাব সিরাজউদ্দৌলা হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড.শেখ মোহাম্মদ মাসুম বলেন, আমি আসলে লজ্জিত আমার হলে এই রকম একটা ঘটনা ঘটায়। অনেক ভালো ভালো পরিবারের ছেলে মেয়েরা মাদকের সাথে জড়িয়ে পড়ছে এই বিষয়ে সচেতন থাকা উচিত। মাদকাসক্তদের রিহ্যাবে পাঠিয়ে বা মোটিভেশন দিয়ে ঠিক পথে নিয়ে আসা উচিত।

বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদক নিয়ে আটকের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. হারুন -উর - রশিদ বলেন, আমরা মাদকের বিষয়ে জিরো টলারেন্স। যারা মাদক বহন করবে , মাদক খাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট করবে তাদের ক্ষেত্রে আমরা শক্ত অবস্থানে। কোন ক্রমেই তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।

;

যৌন হয়রানির অভিযোগে অধ্যাপক নাদিরকে অব্যাহতি



ঢাবি করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও মানসিক নিপীড়নের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ সেলে অধিকতর তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে এবং তদন্ত শেষ হওয়া পর্যন্ত অধ্যাপক নাদিরকে সকল প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট।

মঙ্গলবার (৭ মে) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট বৈঠকে তদন্ত কমিটির এ প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। প্রতিবেদনে তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও মানসিক নিপীড়নের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গিয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে একাধিক সিন্ডিকেট সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

সিন্ডিকেট সূত্র জানায়, অধ্যাপক নাদিরের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও মানসিক নিপীড়নের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ তদন্তে গঠিত ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। সেখানে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গিয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বিষয়টি আরও অধিকতর তদন্তের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ সেলে পাঠানো হয়েছে। এই তদন্তে শেষ হওয়া পর্যন্ত অধ্যাপক নাদিরকে সকল একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে এবং যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ সেলকে তদন্ত করতে দুই মাস সময় দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত সোমবার সকালে প্রেস ব্রিফিং করে এমসিজের শিক্ষার্থীরা অধ্যাপক নাদিরের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের তদন্তের অগ্রগতি জানাতে বিশ্ববিদ্যালয়কে তিন দিনের আলটিমেটাম দেয়। সিন্ডিকেট সূত্র জানায়, 'শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সিন্ডিকেটকে চাপ প্রয়োগ করতে প্রেস ব্রিফিংয় করছে উল্লেখ করে অধ্যাপক নাদির জুনাইদ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) বরারব চিঠি দিয়েছিলেন।'

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি বিভাগের এক নারী শিক্ষার্থী অধ্যাপক নাদিরের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও মানসিক নিপীড়নের অভিযোগ করেন। ১১ ফেব্রুয়ারি বিভাগের আরেক নারী শিক্ষার্থী তার বিরুদ্ধে মৌখিক যৌন হয়রানির ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ করেন। ২৮ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নারী শিক্ষার্থীও তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও মানসিক নিপীড়নের অভিযোগ করে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট গত ৩ মার্চ ফলাফল ধসে দেওয়ার অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি ও যৌন হয়রানির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তিন সদস্য বিশিষ্ট ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি গঠন করে দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলেন। এছাড়াও চলতি বছরের গত ৭ ফেব্রুয়ারি অধ্যাপক নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রোশে ফলে ধস নামিয়ে দেওয়ার অভিযোগ করেন বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা।

;

ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপে পড়ানোর দাবি জাবি ছাত্র ইউনিয়নের



জাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীদের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) পূর্ণাঙ্গ স্কলারশিপে পড়ার সুযোগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদ।

মঙ্গলবার (৭ মে) সংগঠনটির দফতর সম্পাদক সীমান্ত বর্ধন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।

এতে বলা হয়, ফিলিস্তিনের সংগ্রামী জনতার পাশে দাঁড়ানো এবং আন্তর্জাতিক সংহতি গড়ে তোলার দায়িত্ব পৃথিবীর প্রতিটি সচেতন নাগরিকের। এটি কোনো যুদ্ধ নয়, এটি গণহত্যা। প্রতিটি যৌক্তিক আন্দোলন-সংগ্রামে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন শিক্ষার্থীরা বরাবরই সংহতি গড়ে তুলেছে। ফিলিস্তিনের বীর জনতার ওপর ইসরায়েলের চলমান গণহত্যা এবং অব্যাহত নৃশংসতায় সাম্রাজ্যবাদী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি সহযোগিতার বিরুদ্ধে ছাত্র ইউনিয়ন দেশজুড়ে সংহতি গড়ে তোলার কাজে শুরু থেকে নিযুক্ত।

আরও বলা হয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ বাংলাদেশের প্রতিটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীদের পূর্ণাঙ্গ স্কলারশিপে পাঠ গ্রহণের সুযোগ দেওয়া হোক।

প্রসঙ্গত, মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে ছাত্র ইউনিয়নের লড়াইয়ের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। ১৯৭৩ সালের ১ জানুয়ারি ঢাকায় ডাকসু ও ছাত্র ইউনিয়ন ঘোষিত ‘ভিয়েতনাম দিবসের’ সংহতি মিছিল মার্কিন দূতাবাসে স্মারকলিপি দিতে গেলে পুলিশের গুলিতে ছাত্র ইউনিয়ন কর্মী মতিউল ইসলাম ও মির্জা কাদেরুল ইসলাম শহীদ হন। ২০০২ সালে মির্জা কাদেরুল ইসলাম ও মতিউল ইসলামকে ভিয়েতনামের জাতীয় বীরের মর্যাদা দেয় দেশটির সরকার। পাশাপাশি ভিয়েতনামের দু’টি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার নামকরণও করা হয় এ দুই বীরের নামে।

;

ছাত্রদল নেতাকে পিস্তল দেখিয়ে গুলি করার হুমকি রাবি ছাত্রলীগের



রাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নিজের কক্ষে তিন ঘণ্টা আটকে রেখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রদলের এক নেতা ও তার বন্ধুকে নির্যাতনের পাশাপাশি পিস্তল দেখিয়ে পায়ে গুলি করার হুমকির অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিবসহ তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে।

সোমবার (৬ মে) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখ্শ হলের ২১৫ নম্বর কক্ষে এই ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী হলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য নাফিউল ইসলাম জীবন ও তার বন্ধু ইউনুস খান। নাফিউল বর্তমানে শাখা ছাত্রদলের দফতর সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন। তারা দুজনই বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

অপরদিকে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতারা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব, সহ-সভাপতি মনু মোহন বাপ্পা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদিকুল ইসলাম সাদিক এবং সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদ হাসান সোহাগ।

জানতে চাইলে ভুক্তভোগী নাফিউল ইসলাম বলেন, সোমবার রাতে আমি ও আমার বন্ধু মিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের তাপসী রাবেয়া হলের সামনে বাইক নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম। এসময় ছাত্রলীগের তিনজন নেতা শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মনু মোহন বাপ্পা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদিকুল ইসলাম সাদিক এবং সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদ হাসান সোহাগ আমাদের পেছনে এসে দাঁড়ায়। তাদের দেখে আমরা ক্যাম্পাস থেকে বাইক নিয়ে চলে আসছিলাম। আসার পথে বিশ্ববিদ্যালয়ের পশ্চিম পাড়া আবাসিক এলাকায় তারা আমাদের পথ রোধ করে তাদের বাইকে আমাকে তুলে নেয়। এরপর তারা আমাকে মাদার বখ্শ হলের ২১৫ নম্বর কক্ষে নিয়ে যায়।

তিনি বলেন, আমাকে নিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব ওই কক্ষে আসেন। এসময় সে আমাকে দলীয় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং এক পর্যায়ে সে আমাকে এলোপাতাড়িভাবে চড়-থাপ্পর ও মাথায় কিল-ঘুষি মারে। এরপর সে একটা পিস্তল বের করে। পিস্তলে তিনটা গুলি লোড-আনলোড করতে করতে বলে, ‘তোর কোন পায়ে গুলি করব, ডান পায়ে না বাম পায়ে’। এমন করতে করতে সে একবার শুট করে। তবে গুলি তখন আনলোড করা ছিল। পরবর্তীতে রাত ১টার দিকে তারা আমাকে সহকারী প্রক্টরের হাতে তুলে দেন।

অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব বলেন, ‘ওই ছেলেকে কোনো ধরনের মারধর, হুমকি কিংবা মানসিক নির্যাতন করা হয়নি। ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা এর আগে ক্যাম্পাসের একাডেমিক ভবনগুলোতে তালা লাগিয়ে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা করেছে। আমরা তাই সন্দেহজনকভাবে তাকে নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। পরে তাকে প্রক্টরিয়াল টিমের কাছে হস্তান্তর করেছি।

পিস্তল দেখিয়ে পায়ে গুলি করার হুমকি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটা পুরোপুরি ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। কারণ অস্ত্রের রাজনীতি ছাত্রদল করে, এটা ছাত্রলীগ করে না। ছাত্রলীগের হাতে কলম থাকবে, অস্ত্র না।’

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, ফোন পেয়ে আমি ওই হলে দুজন সহকারী প্রক্টরকে পাঠাই। তারা সেখান থেকে তাদেরকে উদ্ধার করে বিনোদপুরে পৌঁছে দেয়। এ ঘটনায় মারধর কিংবা নির্যাতনের কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। মারধরের ঘটনার প্রমাণ সাপেক্ষে অভিযোগ করলে বিষয়টি দেখব।

;