অবন্তিকার মৃত্যু: নতুন ৫ দাবি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় দ্রুততম সময়ে বিচারসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (২০ মার্চ) দুপুর দেড়টায় 'নিপীড়নের বিরুদ্ধে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়' এর ব্যানারের আয়োজিত প্রেস মিটে দাবিগুলো জানান শিক্ষার্থীরা।
দাবিসমূহ হলো:
১. ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা হত্যার সমস্ত প্রমাণ আমলে নিয়ে দ্রুততম সময়ে বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিশ্ববিদ্যালয় আইনে এবং রাষ্ট্রীয় আইনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
২. দ্রুত সময়ে সম্পূর্ণ প্রভাবমুক্ত যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেল কার্যকর করতে হবে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভয়মুক্ত গণতান্ত্রিক পরিবেশ নির্মাণ করতে হবে।
৩. অঙ্কন বিশ্বাসসহ পূর্বে দায়েরকৃত সকল অভিযোগের দ্রুত তদন্ত ও সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
৪. পূর্বতন প্রক্টরিয়াল বডির বিরুদ্ধে গ্রহণযোগ্য তদন্ত করতে হবে এবং দোষীদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
৫. ফাইরুজ অবন্তিকা এবং অঙ্কন বিশ্বাসের স্মৃতিতে ক্যাম্পাসে দুটি স্থায়ী ফলক নির্মাণ করতে হবে।
প্রেস মিটে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা বলেন, আপনারা অবগত আছেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ফাইরুজ অবন্তিকা গত ১৫ মার্চ ২০২৩ ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়ে আত্মহত্যা করেন। এই পোস্টে তিনি তার সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকী এবং সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে তার মৃত্যুর জন্য দায়ী করেন। তিনি বলেন, "আমি জানি এটা কোনো সলিউশন না কিন্তু আমাকে বাঁচতে দিচ্ছে না বিশ্বাস করেন। আমি ফাইটার মানুষ। আমি বাঁচতে চেয়েছিলাম!...এটা সুইসাইড না এটা মার্ডার। টেকনিক্যালি মার্ডার" এই ছিল তার শেষ কিছু কথা।
প্রায় দেড় বছর ধরে আম্মান সিদ্দিকী ও দ্বীন ইসলামের দ্বারা ফাইরুজ নানাভাবে নিপীড়নের শিকার হয় এবং এই নিয়ে অভিযোগপত্র দেয়া হলেও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গ্রহণ করা হয়নি। ফলশ্রুতিতে আজ এমন মর্মান্তিক ঘটনার সম্মুখীন হতে হলো আমাদের।
তারা আরো বলেন, আমরা জানতে চাই, বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো শিক্ষাঙ্গনে কী করে এরকম নিপীড়নের মতো পরিবেশ তৈরি হয়? ভবিষ্যতে এমন ঘটনা যে ঘটবে না তার নিশ্চয়তাও কীভাবে তৈরি হবে? শুধু অবন্তিকার হত্যার বিচার করলেই কী এই নিপীড়নের সংস্কৃতি রুখে দেয়া যাবে? বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনে একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ, শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মধ্যে যথার্থ মানবিক সম্পর্ক, শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার সংস্কার ছাড়া সামগ্রিকভাবে একটি বিকল্প সুস্থ পরিবেশ তৈরি করা সম্ভব নয় বলেই আমরা মনে করি।