দ্বিতীয় দিনেও সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা
অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত পেনশন সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন 'প্রত্যয় স্কিম’ প্রত্যাহারসহ তিন দাবিতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন এর আয়োজনে মঙ্গলবার (২ জুলাই) দ্বিতীয় দিন সারা দেশের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে সর্বাত্মক কর্মবিরতি।
সোমবার (১ জুলাই) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের প্রধান ফটকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঢাবি শিক্ষকগণ প্রথমদিনের মতোই বেলা ১২টা থেকে ১ টা অব্দি এক ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবিতে কলা ভবনের মূল ফটকে উপস্থিত ছিলেন
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ।
সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জিনাত হুদা অবস্থান বলেন, এ আন্দোলন শিক্ষার্থীদের জন্যেই। ভবিষ্যতে তারাই শিক্ষক হবেন। অনেক ধরণের অপপ্রচার চলছে এ আন্দোলন নিয়ে। বলা হচ্ছে, শিক্ষার্থীদের জিম্নি করে এ আন্দোলন করা হচ্ছে। মূলত, শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের জন্যেই এ আন্দোলন করছে। আর, প্রত্যয় স্কিমের মাধ্যমে পুরো বাংলাদেশের শিক্ষকদেরই মূলত জিন্মি করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, উন্নত বিশ্বের কথা বাদই দিলাম যেহেতু সবকিছুই বাদ দিচ্ছি। এই উপমহাদেশের দিকে তাকান, ভারত, শ্রীলঙ্কা এমনকি পাকিস্তানেও শিক্ষকদের বেতন অনেক বেশি। যাদের বিরুদ্ধে আমরা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন করেছিলাম তাদের দেশেও শিক্ষকদের বেতন অনেক বেশি।
এসময় ঢাবি শিক্ষক সমিতির সাবেক সহ সভাপতি ও ঢাবি সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফুর রহমান বলেন, এই পেনশন স্কিমটি শিক্ষকদের মান সম্মানের ব্যাপার। যারা পেনশন স্কিমের পক্ষে কথা বলছে তারা তাদের নিজস্ব অবস্থান বজায় রাখার জন্য এসব বলছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছাত্ররা সব সময় আন্দোলনের সংগ্রামের মাধ্যমে এই জাতিকে দিক নির্দেশনা দিয়েছে। তাই আমি মনে করি এই আন্দোলন শিক্ষার্থীদেরও আন্দোলন। আমরা মনে করি আমাদের যে আন্দোলন সেই আন্দোলনে দেশের অন্যান্য জনগণও অংশগ্রহণ করবেন যদি সরকার এই স্কিম বাতিলে আরও কালক্ষেপণ করেন। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের আদর্শের ভিন্নতা থাকলেও এই আন্দোলনে আমাদের কোনো মত পার্থক্য নেই। সকল দল মত নির্বিশেষে আমরা এই আন্দোলনের সাথে একমত।
প্রসঙ্গত, এদিকে মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পাশাপাশি কর্মবিরতি পালন করেছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও। এ আন্দোলনে তাদের দাবি প্রত্যয় স্কিমের প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তন। আর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাবি শুধু প্রত্যয় স্কিমের প্রজ্ঞাপন বাতিল।