বৃষ্টি উপেক্ষা করে কোটা বিরোধী আন্দোলনে ঢাবি শিক্ষার্থীরা



ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
কোটা সংস্কারে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা, ছবি: বার্তা২৪.কম

কোটা সংস্কারে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে চতুর্থ দিনের মতো সমবেত হচ্ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সকাল থেকে বৃষ্টি থাকলেও নির্ধারিত সময়ে সমবেত হতে দেখা যায় ঢাবি শিক্ষার্থীদের।

বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে ঢাবির কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’–এর ব্যানারে মিছিল নিয়ে সংগঠিত হন শিক্ষার্থীরা এবং এখান থেকে তারা পদযাত্রা শুরু করবেন বলে জানান।

এর আগে ৫ জুন সরকারি দফতর, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন করপোরেশনের চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে (৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড) মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন উচ্চ আদালত। ওই দিন থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী আন্দোলনে নামেন। এ অবস্থায় আদালতের ওই রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে। আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে আবেদনটির ওপর শুনানির জন্য আজ ৪ জুলাই দিন নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে আবেদনটির ওপর শুনানি হয়, আপাতত আগের মতোই বহাল থাকছে মুক্তিযোদ্ধা কোটা। তাই পূর্ব ঘোষিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আজও হচ্ছে কোটা সংস্কার আন্দোলন।

প্রসঙ্গত, এ সময় 'কোটা না মেধা? মেধা মেধা',জেগেছে রে জেগেছে ছাত্র সমাজ জেগেছে, লেগেছে রে লেগেছে রক্তে আগুন লেগেছে, কোটা না মেধা মেধা মেধা, সারা বাংলায় খবর দে কোটা প্রথার কবর দে সহ শিক্ষার্থীদের নানা স্লোগানে মুখরিত হুচ্ছে ঢাবির কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার এলাকা।

কোটা বাতিলের দাবিতে কুবিতে মশাল মিছিল



কুবি করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে এবং কোটা পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে মশাল হাতে বিক্ষোভ করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (৬ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে শুরু করে ক্যাম্পাস সংলগ্ন দক্ষিণ মোড় পর্যন্ত প্রদক্ষিণ করে আবার ক্যাম্পাসের ভিতরে প্রবেশ করে শহীদ মিনারে এসে তাদের মশাল মিছিল শেষ হয়।

এ সময় তারা বঙ্গবন্ধুর বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই, গরীব দুঃখীর বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই, মেধা না কোটা মেধা মেধা, সারা বাংলা খবর দে কোটা প্রথার কবর দে, গর্জে উঠো আরেকবার একাত্তরের হাতিয়ার, কোটা প্রথার বিরুদ্ধে আগুন জ্বালো একসাথে বলে স্লোগান দিতে থাকে।

আন্দোলন সমন্বয়কারীদের একজন আইন বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সাকিব হোসাইন বলেন, 'মুক্তিযুদ্ধের এতো বছর পরে কোটা প্রথাটা বৈষম্যমূলক। বাংলাদেশে বর্তমানে ২৫৮টি কোটার প্রচলন রয়েছে আমরা সবগুলো কোটার বিলোপ চাই শুধুমাত্র প্রতিবন্ধী এবং উপজাতি কোটা ছাড়া। এটা শুধু আমাদের দাবি না সারা বাংলাদেশের সকল শিক্ষার্থীদের দাবি।'

বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী নাফিসা আক্তার নীড়া বলেন, 'আমি একজন নারী শিক্ষার্থী হিসেবে কোটা বিরোধী আন্দোলনে দাঁড়িয়েছি। নারী হিসেবে আমি কোনো কোটা চাই না, আমি আমার মেধা দিয়ে আমার যোগ্যতার প্রমাণ রাখতে চাই। কোটা প্রথার ফলে দেখা যায় যোগ্য ব্যক্তিরাও চাকরি পাচ্ছে না। আমরা চাই প্রকৃত মেধাবীরা যাচাই হোক। নারী শিক্ষার্থী হিসেবে বলতে চাই নারীদের জন্য যে কোটা রয়েছে সেই কোটাও যেনো না থাকে।'

এর আগে ৪ জুলাই কোটা বাতিলের দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক তিনঘণ্টা অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেছিলো কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

;

ইবিতে কোটাবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষকদের সমর্থন, একাত্মতা প্রকাশ



ইবি করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সরকারি চাকরিতে ২০১৮ সালের পরিপত্র বাতিল করে কোটা পদ্ধতি পুনর্বহাল সংক্রান্ত উচ্চ আদালতের রায়ের প্রতিবাদ জানিয়ে এবং সকল চাকরিতে বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে মেধা ভিত্তিক নিয়োগের দাবিতে দেশব্যাপী সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন চলমান রয়েছে। তার অংশ হিসেবে গত তিনদিন ধরে মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা।

এদিকে শিক্ষার্থীদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশক'জন শিক্ষক তাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেছেন। এর আগে শনিবার (৬ জুলাই) আন্দোলন সূচনার আগেই একাত্মতা প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ এবং ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. বাকী বিল্লাহ বিকুল।

শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি এবং অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. দেবাশীষ শর্মা বলেন, “১ম ও ২য় শ্রেণির চাকরিতে কোন ধরণের কোটা থাকা উচিত নয়, এক্ষেত্রে পরিপূর্ণ মেধার অধিকার থাকা উচিত। কোটা একধরনের সুবিধা, সুবিধারও মাত্রাজ্ঞান থাকতে হবে। জাতির সূর্যসন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নির্ধারিত পদের (সকল শ্রেণির চাকরিতে) অতিরিক্ত ১০% বা যুক্তিসঙ্গত পদ সংরক্ষিত রাখা যেতে পারে। অন্যান্য পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীসহ প্রতিবন্ধীদের জন্য ৩য় বা ৪র্থ শ্রেণির চাকরির কোটা রাখা যায়। কারণ ১ম ও ২য় শ্রেণির চাকরি মেধার ভিত্তিতে সকলের জন্য উন্মুক্ত।”

ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের প্রভাষক মিঠুন বৈরাগী নিজের ভুক্তভোগীর কথা শেয়ার করে বলেন, “মেধাভিত্তিক নিয়োগ নিশ্চিত করতে কোটা পদ্ধতি বাতিল অথবা কোটা সংস্কার (সর্বোচ্চ ১০%) করা অতীব জরুরি। ব্যক্তিগত অভিমত- শিক্ষার্থীদের আন্দোলন যৌক্তিক। ৩৮তম বিসিএস পরীক্ষায় কোটা পদ্ধতির জন্য আমি নিজেও ভুক্তভোগী ছিলাম!”

পোস্টে মন্তব্য করেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, “এখন যেহেতু বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান চাকরির পরীক্ষায় প্রায় পাওয়ায় যায় না। সেক্ষেত্রে প্রস্তাবিত ১০% কোটা থাকাই শ্রেয়।”

এতে মন্তব্য করে সহমত পোষন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরিন।

এদিকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসী বিভাগের প্রভাষক রেহেনুমা তানজিম ফেসবুক পোস্টে বলেন, “স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর চাকুরিতে মেধার পরিবর্তে কোটা ব্যবহার সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য। যারা ভবিষ্যতে দেশের কাণ্ডারি হবে তাদের যথাযথ যোগ্যতা ও আত্মসম্মান না থাকলে দেশ কিভাবে চলবে তা সহজেই অনুমেয়। ২০১৮ সালে সরাসরি কোটা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছি। তখন দাবি আদায় হলেও আবার একই কারণে ছেলেমেয়েদের রাস্তায় নামতে দেখা সত্যি দুঃখজনক!”

ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রভাষক মোঃ ইয়ামিন মাসুম বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলব, আপনারা মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধা, এবং মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের নিয়ে কটুক্তি করবেন না। আশা করি, মহামান্য আদালত এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষ আপনাদের মতামতকে বিবেচনা করবেন। আমি ছাত্রদের অভিভাবক হিসেবে ব্যক্তিগত ভাবে কোটা প্রথা বাতিল নয় তবে কোটা সংস্কারের পক্ষে। মুক্তিযোদ্ধা কোটা কমিয়ে ১০% এবং অন্যান্য কোটা ৫% রাখা যেতে পারে। হোক পরিবর্তন।”

ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি ড. আবু শিবলী মোঃ ফতেহ তার মতামত ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, “গণতান্ত্রিক দেশের যেকোনো ধরনের আন্দোলন এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা গণতান্ত্রিক চেতনার সাথে যায় না। আমিও গণমানুষের চাওয়ার প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমার মতে, কোটা যদি সরকার রাখতেই চায়, তাহলে মুক্তিযোদ্ধা কোটা সহ সব ধরনের কোটা মিলে তা অবশ্যই মোট পদের ১০ শতাংশের বেশি হওয়া উচিত নয়। এ আমার একান্তই ব্যক্তিগত অভিমত। এরসাথে সবাইকেই একমত পোষণ করতে হবে এমন নয়। সতত শুভ কামনা সকলের জন্য!”

বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবু হেনা মোস্তফা বিশ্লেষণী মন্তব্য করে বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় সমুহ ২ টি কারণে অচল এক কোটাপদ্ধতির বিরুদ্ধে আন্দোলন আর অন্যটি হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের পেনশন স্কিম নিয়ে। এই ২টিই হচ্ছে অপরিকল্পিত ও তাড়াহুড়ো করে নেওয়া সিদ্ধান্তের কারণে। প্রথমত সংক্ষেপে আলোচনা করি কোটা পদ্ধতি নিয়ে। সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি নিয়ে আন্দোলনের মুখে সরকার ১ম শ্রেণির চাকুরিতে কোটা সম্পূর্ণ বাতিল করে দেন। এটা একটু সময় নিয়ে জনজরিপ করে সকলের অধিকার বা সংবিধানের আলোকে করা উচিত ছিল। আর এই কোটা ত্রুটিপূর্ণ এই কারণে যে মোট পদের বড় অংশ চলে যায় কোটায়, কারো কারো হিসেবে সেটা ৭০%। এটা কিভাবে সম্ভব? এটা আগে ঠিক করতে হবে। মোট চাকুরির সর্বোচ্চ ১৫% কোটা হতে পারে আমার মতে সেটা ১০% হওয়া উচিত। এই ১০% এর মধ্যে যারা কোটা পাবার যোগ্য তাদের মধ্যে দিতে হবে। যেমন ধরুন মোট আসন ১০০টি, এর মধ্যে ১০টি থাকবে কোটায়, এই ১০টির ৩০%। মানে ৩টি এক কোটায়, ২০% মানে ২টি আর এক কোটায় থকতে পারে। আর একটি বিষয় একজন মুক্তিযোদ্ধার মেধাবী, প্রতিষ্ঠিত ও যোগ্য সন্তান হিসেবে বলতে চাই, কোনভাবেই এই কোটা আন্দোলনে জাতির শ্রেষ্ট সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যেন অসম্মান করা না হয়।”

ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো: হাফিজুল ইসলাম দাবি করেন, “স্মার্ট রাষ্ট্র ও সমাজ বিনির্মাণে প্রশাসনিক সংস্কারের মতো কোটা ব্যবস্থায় সংস্কার আনা অতীব জরুরী।”

ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন জাহিদ বলেন, “চাকুরিপ্রার্থী শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বিবেচনায় মুক্তিযোদ্ধা, নৃগোষ্ঠী, প্রতিবন্ধী, নারী ইত্যাদি মিলিয়ে চাকুরিতে সর্বোচ্চ ১০% কোটা থাকতে পারে, এর বেশি না।”

ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আহসানুল হক বলেন, “লক্ষ কোটি বেকার যুবকের স্বপ্নকে বাঁচতে দিন। মেধাবীরাই দেশকে সবচেয়ে ভালো সেবা দিতে পারবে। এদেরকে বঞ্চিত করে কি স্মার্ট বাংলাদেশ গড়া সম্ভব? আপনার কি মনে হয়?”

এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে প্রস্তাবিত ৪ দাবিতেই অচল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দাবি-সমুহ:

১. ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকুরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখতে হবে।

২. ১৮' এর পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকুরিতে (সকল গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে এবং কোটাকে ন্যূনতম পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে। সেক্ষেত্রে সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে।

৩. সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে।

৪. দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

;

কোটা আন্দোলন করায় শিক্ষার্থীকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার



ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়/ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়/ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কোটা সংস্কার আন্দোলনে যুক্ত থাকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) সমাজবিজ্ঞান বিভাগের বিতর্ক ক্লাবের সাধারণ সম্পাদককে তার পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে সংগঠনটির মডারেটর ও বিভাগের অধ্যাপক ড. আ ক ম জামাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে।

শুক্রবার (৫ জুলাই) রাতে তাকে সংগঠনটি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। সমাজবিজ্ঞান বিভাগের বিতর্ক ক্লাবের একাধিক সদস্য অব্যাহতির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

অব্যাহতিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীর নাম মোশাররফ হোসাঈন। তিনি বিভাগটির চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক ছাত্র। তিনি হল ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদকের পদেও রয়েছেন।

সমাজবিজ্ঞান বিতর্ক ক্লাবের মেসেঞ্জার গ্রুপে ড. আ ক ম জামাল উদ্দিনের অব্যাহতি দেওয়া সংক্রান্ত একাধিক বার্তা সংবলিত স্ক্রিনশট পাওয়া গিয়েছে। যে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে অব্যাহতির মেসেজ দেওয়া হয় তা অধ্যাপক জামাল উদ্দিনের নিজের ফেসবুক আইডি বলে নিশ্চিত করেছেন বিভাগের একাধিক শিক্ষার্থী।

এক স্ক্রিনশটে দেখা যায়, বিতর্ক ক্লাবের মেসেঞ্জার গ্রুপে অধ্যাপক জামাল লিখেছেন, বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকার জন্য ডিবেটিং সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে মোশররফকে অব্যাহতি দেওয়া হলো। নতুন সাধারণ সম্পাদক সারাফ আফ্রা মৌ।

গ্রুপে আরেক বার্তায় অধ্যাপক জামাল উদ্দিন লিখেছেন, যারাই সমাজবিজ্ঞান বিভাগে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত হবেন, তারা কখনই ছাত্র-ছাত্রীদের সার্বজনীন কমিটিসমূহের নেতৃত্বে আসতে পারবেন না। ক্লাস ক্যাপ্টেনসহ এ জাতীয় কোনো ধরনের নেতৃত্বে আসতে পারবেন না।

একই গ্রুপে আরেক মেসেজে তিনি লিখেছেন, যারা বাইরের ঘটনাকে নিয়ে বিভাগের সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ বিনষ্টের কারণ হবে, তারা অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অতীতেও এগুলো মোকাবিলা করা হয়েছে। আশা করি সংশ্লিষ্ট সকলের শুভবুদ্ধির উদয় হবে।

এছাড়া এমন ধরনের বার্তা অধ্যাপক জামাল উদ্দিনের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থবর্ষের '৪০৪ পলিটিক্যাল সোস্যালজি' নামক মেসেঞ্জার গ্রুপেও দেন।

অব্যাহতির বিষয়ে মোশাররফ জানান, কোটা আন্দোলনে যুক্ত থাকায় এবং ফেসবুকে কোটা আন্দোলন নিয়ে পোস্ট করায় জামাল উদ্দিন স্যার আমাকে সংগঠন থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন। তিনি একতরফাভাবে কোন নিয়মের তোয়াক্কা না করে সোশ্যালজি স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন নামে একটি ফেসবুক গ্রুপে যেখানে আমাদের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা রয়েছে—এমন গ্রুপে বহিষ্কারের নোটিশ প্রকাশ করেছে। প্রত্যেকটা ব্যাচের সি আর গ্রুপে মেসেজ দিয়ে বলেছেন। এছাড়া আদালত অবমাননার দায়ে মামলা দেওয়ার হুমকিও পর্যন্ত দিয়েছেন তিনি।

এ ব্যাপারে জানতে অধ্যাপক জামাল উদ্দিনকে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোনকল রিসিভ করেননি।

;

কোটা বাতিলের দাবিতে জাবির আবাসিক হলে গণসংযোগ



জাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
কোটা বাতিলের দাবিতে জাবির আবাসিক হলে গণসংযোগ, ছবি: বার্তা২৪.কম

কোটা বাতিলের দাবিতে জাবির আবাসিক হলে গণসংযোগ, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

সরকারি চাকরিতে ২০১৮ সালে ঘোষিত কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখাসহ ৪ দফা দাবিতে আবাসিক হলগুলোতে গণসংযোগ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (৬ জুলাই) বিকেল ৩ টায় চলমান কোটা বিরোধী আন্দোলনকে আরও বেগমান করতে 'বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন' এর ব্যানারে গণসংযোগ করা হয়।  

বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার প্রাঙ্গণ হতে একটি বিক্ষোভ-মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের আবাসিক হলগুলোতে গণসংযোগ শেষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

এসময় রোববার (৭ জুলাই) বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধের ঘোষণা দেন তারা।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হচ্ছে- ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে (সব গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে এবং সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করতে হবে। সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে। দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদুল হাসান ইমন বলেন, আজকে আমরা প্রায় সবগুলো আবাসিক হলে গণসংযোগ করেছি। আগামীকাল রোববার বিকেল তিনটা থেকে আমরা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করব৷ দাবি আদায় না হওয়া অবধি আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব৷ প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচির দিকে যাব, পুরো দেশ অচল করে দেয়া হবে।

রোববার ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধের ঘোষণা দিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য-সচিব মাহফুজ ইসলাম মেঘ বলেন, আমাদের আন্দোলন গণ-মানুষের আন্দোলন। এখানে কোনো নির্দিষ্ট দলের শিক্ষার্থীরা আসেনি। যারা এসেছেন তারা সবাই সাধারণ শিক্ষার্থী। এছাড়াও যারা আজকের প্রোগ্রামে আসতে পারেনি তাদেরকে এই যৌক্তিক আন্দোলনে যুক্ত হওয়ার জন্য আহ্বান করছি৷ আপনারা হলের রিডিং রুমে বসে না থেকে আন্দোলনে যুক্ত হোন। আগামীকাল পুনরায় আমরা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করব। দরকারে সমগ্র দেশ অচল করে দিব। আপনারা ক্ষান্ত হবেন না।

;