‘বাংলা ব্লকেড’র প্রভাব ইবিতেও, দুই ঘণ্টা ধরে মহাসড়ক অবরুদ্ধ

  • ইবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

দেশে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর সরকারি চাকুরিতে চলছে মেধার ডেরায় কোটার ভয়াবহ থাবা। শিক্ষার্থী সমাজ এর ভয়াবহতা বুঝতে পেরে কোটা বৈষম্যের বিরুদ্ধে এবং এর যথাযথ সংস্কারের দাবিতে রক্ষাকবচ হিসেবে বেছে নিয়েছে দেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক মহাসড়কগুলোকে। পালন করছে লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচি।

রোববার (৭ জুলাই) ক্যাম্পাসের মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব ম্যুরালের পাদদেশে কয়েকশ' শিক্ষার্থী নিয়ে বেলা ১১টার দিকে শুরু হয় আন্দোলন। পরে বাংলা ব্লকেড (দেশের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধ) কার্যক্রম এর অংশ হিসেবে বেলা ১১টা ৩৫ এর দিকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রধান ফটক সংলগ্ন কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক আটকে ১১৮ মিনিট আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা।

বিজ্ঞাপন

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীও একই দাবি নিয়ে টানা তৃতীয় দিন ও চতুর্থবারের মতো চলমান বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে যাচ্ছে। ‘কখনো মহাসড়ক অবরোধ কখনো বা শিক্ষার্থীদের সুবিশাল পদযাত্রা’ আন্দোলনের ধরন যেমনই হোক কোটা সংস্কারের অভিন্ন দাবিতে এক ছাতার নিচে এসব শিক্ষার্থী।

কারণ হিসেবে ‘বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে ৫৬ শতাংশ, ১ম ও ২য় শ্রেণী নন ক্যাডার জবে ৬১ শতাংশ কিংবা প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে ৯৬ শতাংশ কোটা বিরাজমান’ এতে প্রকৃত মেধা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে দাবি তাদের।

বিজ্ঞাপন

প্রায় দু’ঘণ্টাব্যাপী এই অবরুদ্ধ মহাসড়কে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ‘আমরা পড়ার টেবিলে বসতে চাই, রাস্তায় না’, ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘কোটা না মেধা? মেধা মেধা’, ‘আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘আপস না সংগ্রাম? সংগ্রাম সংগ্রাম’ এসব স্লোগানে মহাসড়ক প্রাঙ্গন মাতিয়ে রাখেন। এছাড়াও কোটা বৈষম্যের সংস্কার, ২০১৮ এর পরিপত্র বহাল ও মেধা ভিত্তিক নিয়োগ এর জোড়ালো দাবি আসে সকল এর মধ্য থেকে। এদিকে দাবি আদায়ের আগ পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুশিয়ার দেন এসব শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বক্তব্যে আইন বিভাগের শিক্ষার্থী শাওয়ানা শামিম বলেন, 'আমি নারী হয়ে অনগ্রসর নই তাহলে ঐসব গোষ্ঠী কেমনে বলে তারা এখনো অনগ্রসর। অনগ্রসর বলতে বুঝায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা মূল স্রোতের বাইরে থাকে। আমরা তাদেরকে স্পেশাল সুবিধা দিয়ে থাকি। মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি- নাতনিরা এখনো একিভূত হয়নি তা কিভাবে সম্ভব।'

ছাত্র মৈত্রী'র সাধারণ সম্পাদক ইয়াসিরুল বলেন, 'আমাদের একটাই দাবি কোটা সংস্কার, আমরা কিন্তু বাতিলের কথা বলিনি। যৌক্তিক কোটা সংস্কারের মাধ্যমে মেধাবীদেরকে প্রধান্য দেওয়া হলে কিন্তু বিভিন্ন সরকারি অফিসে আদালত থেকে শুরু করে প্রশাসন পর্যায়ে লালফিতার দৌরাত্ম্য হ্রাস পাবে। এক্ষেত্রে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরি করার যে পরিকল্পনা সেটা মেধাবীদের দ্বারা পূরণ করা সম্ভব। যদি সরকার দাবি মেনে না নেয় তাহলে শিক্ষার্থীরা রাজপথে থাকবে।'

এবিষয়ে ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং ছাত্র ইউনিয়ন ইবি শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুইট বলেন, 'আমরা মূলত এই কোটার সংস্কার চাই। আমাদের একটি মূল বক্তব্য কোটা বাতিল না করে একটা যৌক্তিক সংস্কার।'

তিনি আরও বলেন, 'আমরা চাই যারা এসব দেখভাল করছে শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, আইনজীবী এবং শিক্ষার্থীসহ সবাই বসে একটি সুষ্ঠু সমাধান করে কোটার এই ভয়ানক ধাবা থেকে আমাদের পরিত্রাণ করুক।'