কর্মবিরতি আন্দোলন ব্যর্থ হলে মেধাবীরা শিক্ষকতায় আসবে না
সার্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিম বাতিল, শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল ও সুপারগ্রেড প্রণয়নের দাবিতে চলমান আন্দোলন ব্যর্থ হলে মেধাবী শিক্ষার্থীরা শিক্ষকতায় আসবেন না বলে জানিয়েছেন শিক্ষক নেতারা। এ সময় শিক্ষকদের আন্দোলন নিয়ে নানা বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে বলেও দাবি করেন তারা।
রোববার (৭ জুলাই) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কলাভবনের মূল ফটকে আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তারা এই কথা বলেন।
গত ১ জুলাই থেকে ৩ দাবি নিয়ে শিক্ষকরা কর্মবিরতি পালন করছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সর্বাত্মক কর্মবিরতিসহ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষকরা। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক আখতারুল ইসলাম বলেন, আমরা বারবার যুক্তি প্রদর্শন করছি। ৭ দিন থেকে কর্মবিরতি পালন করছি, তবু রাষ্ট্র থেকে একটি ফোন পর্যন্ত করা হয়নি। এটি শিক্ষাব্যবস্থা পুরোপুরি ধ্বংস করে দেওয়ার চেষ্টা।
ফেডারেশনের মহাসচিব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক নিজামুল হক ভূইয়া বলেন, সরকারের মধ্য ছোট একটি গ্রুপ রয়েছে। যারা ২০১৫ সালে ষড়যন্ত্র করেছে। সরকারের ভেতর থেকে রাজতন্ত্র চালাচ্ছে। ২০২৪ সালে তারা একই কায়দায় শিক্ষকদের প্রত্যয় স্কিম চাপিয়ে দিয়েছে।সুপারগ্রেড প্রণয়ন নতুন কোনো দাবি নয়। ২০১৫ সালে এ বিষয়ে কমিটি হয়েছিল। অথচ তার কোনো অগ্রগতি হয়নি।
সম্প্রতি সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বৈঠকটি হয়নি। তবে আমার সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীসহ অনেকের সাথে কথা হয়েছে। অচিরেই আমরা আলোচনা আশা করছি এবং তা হতে হবে।
ঢাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা বলেন, বিদেশের বিভিন্ন সুবিধা ছেড়ে এই পেশায় মেধাবীরা আসেন। তারপর বলা হবে 'না খেয়ে থাকেন'। শিক্ষকদের যে বেতন, তা থেকে ৫ হাজার টাকা কেটে রাখার পর তারা সংসার চালাবে কীভাবে? এই প্রত্যয় স্কিম আমাদের 'শূন্য সুবিধা' দিয়েছে।
এসময় শিক্ষক সমিতির নেতাদের সাথে সংহতি জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আবু সালেহ জানান, তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো শিক্ষক সমিতি নেই। তবে গতকাল অনুষ্ঠিত এক ডিন সভায় সকল শিক্ষক দাবির পক্ষে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন।
উল্লেখ্য, এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাবি শিক্ষক সমিতির নেতা আব্দুর রহিম, অধ্যাপক আ জ ম শফিউল আলম ভূইয়া, অধ্যাপক অহিদুজ্জামান, অধ্যাপক গোলাম রব্বানী, অধ্যাপক আবু সামাদসহ প্রমুখ।