ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে অচলাবস্থা, সূর্যাস্ত পর্যন্ত চলবে অবরোধ

  • জাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

সকল গ্রেডে বৈষম্য ও অযৌক্তিকতার ভিত্তিতে যে কোটা প্রথা চলমান তা সম্পূর্ণভাবে বাতিল করে সংবিধানমতে অনগ্রসর এবং বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের জন্য নূন্যতম পর্যায়ে কোটা বহাল রেখে সংস্কারের এক দফা দাবিতে টানা পঞ্চম দিনের মতো 'বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন' এর ব্যানারে 'বাংলা ব্লকেড' এর অংশ হিসেবে গান-কবিতা-স্লোগানে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে প্রায় পৌনে ২ ঘণ্টা ধরে অবস্থান নিয়ে অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (৮ জুলাই) বিকাল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে (ডেইরি গেইট) সমবেত হতে শুরু করেন জাবির আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে ১ দফা দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত অবস্থান নিয়ে অবরোধ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা। সর্বশেষ তথ্যমতে প্রায় দেড় ঘণ্টা যাবৎ মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলন চলমান।

বিজ্ঞাপন

অবরোধকালে শিক্ষার্থীদের 'বায়ান্নোর হাতিয়ার গর্জে ওঠো আরেকবার; একাত্তরের হাতিয়ার গর্জে ওঠো আরেক বার; সারা বাংলা খবর দে, কোটা প্রথা কবর দে; কোটা প্রথা বাতিল চাই মেধা ছাড়া চাকরি নাই; মেধাবীদের মেরে ফেলেন নয়তো কোটা বাতিল করেন; নিপাত যাক, নিপাত যাক, কোটা প্রথা নিপাত যাক; বৈষম্যের ঠাই নাই লাখো শহীদের বাংলায়; মেধা নাকি কোটা? মেধা, মেধা; মানতে হবে মানতে হবে, আমাদের দাবি মানতে হবে; জেগেছে রে জেগেছে, জাবি জেগেছে-লেগেছে রে লেগেছে রক্তে আগুন লেগেছে; মেধাবীদের কান্না আর না, আর না" ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।

আন্দোলনকারীরা জানান, একই সাথে নিয়মিত কর্মসূচির অংশ হিসেব সারা দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাস পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি চলবে। চার দফা দাবিতে টানা আন্দোলনের পর 'বাংলা ব্লকেড' কর্মসূচির পর সরকারি চাকরিতে সকল গ্রেডে সকল প্রকার 'কোটা বাতিল' করে আইন পাশের এক দফা দাবিতে মাঠে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা।

এসময় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে উভয় পাশে যানবাহনের দীর্ঘ সারি সৃষ্টি হয়। যাত্রীদের যানবাহন থেকে নেমে পায়ে হেঁটেই গন্তব্যের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছেন। ধামরাই এলাকার অধিবাসী শিক্ষানবিশ আইনজীবী হাবিবুর রহমান বলেন, ঢাকায় একটা কাজে গিয়েছিলাম। ফেরার পথে শিক্ষার্থীদের অবরোধের মধ্যে পড়লাম। সামজিক যোগাযোগমাধ্যম ও পত্রিকায় জানতে পেরেছি কোটাব্যবস্থার প্রতিবাদে ছাত্ররা মাঠে নেমেছে। মন থেকে এ আন্দোলনের প্রতি আমার সমর্থন রয়েছে। চলাচলের কষ্ট হলেও আমি তা মেনে নিয়েছি। ছাত্রদের দাবি আদায় হোক। কোটা প্রথার মতো বৈষম্যমূলক ব্যবস্থার বিলুপ্ত হোক।

বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আহসান লাবিব বলেন, সর্বস্তরের শিক্ষার্থীরা আমাদের ক্লাস বর্জন কর্মসূচিতে সাড়া দিয়ে রাস্তায় নেমে এসেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা ভালো সাড়া দিয়েছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছেড়ে যাব না।

ইনস্টিটিউট অভ বিজনেস এডমিনিস্ট্রেশনের শিক্ষার্থী ফারিনা বার্তা২৪.কমকে বলেন, আজ একদফা দাবিকে সামনে রেখে এ আন্দোলনকে আরও বেগমান করতে আমরা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ আন্দোলনে নেমেছি। আমরা আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব। আমরা জানি আদালত মানুষের জন্য আর মানুষের কল্যাণের জন্যই আদালতের সৃষ্টি। আমরা আশা করবো মহামান্য হাইকোর্ট আমাদের এ আন্দোলনের সাথে একাত্মতা পোষণ করবে এবং মহাসড়কে এসে যৌক্তিক দাবি আদায়ের জন্য যাতে অবরোধ করতে না হয় সে বিষয়ে খেয়াল রেখে রায় প্রদান করবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদুল ইসলাম ইমন বলেন, আমাদের এ আন্দোলনে সর্বস্তরের শিক্ষার্থীরা সমর্থন জানিয়েছেন। বৈষম্যমূলক এ কোটা প্রথার অবসান না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এ আন্দোলন চলমান থাকবে৷ দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছেড়ে যাব না। আজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত আমাদের এ অবরোধ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।