'প্রধানমন্ত্রীর কথা রাখতেই রাজপথকে পড়ার টেবিল বানিয়েছি'

  • চবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া বাদ দিয়ে রাস্তায় আন্দোলন অযৌক্তিক, এই কথা আমাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ করেছে তাই আমরা ছাত্রসমাজ সিদ্ধান্ত নিয়েছি কোটা প্রথার যৌক্তিক সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত রাজপথই পড়ার টেবিল হবে বলে মন্তব্য করেছেন আন্দোলনরত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী ফয়সাল মাহমুদ জয়।

বুধবার (১০ জুলাই) পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বেলা এগারোটায় নগরীর দেওয়ানহাট ওভার ব্রিজের নিচে রেললাইনে অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা। পরে দুপুর একটায় নগরীর টাইগারপাস অবরোধ করেন তারা।

বিজ্ঞাপন

এসময় চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা ও কক্সবাজার রুটসহ সারাদেশের সাথে রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্নসহ সড়কপথে আগ্রাবাদ-বহদ্দারহাট ও নিউমার্কেটগামী সকল যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা।

আন্দোলনরত চবি শিক্ষার্থী ইয়াসির আরফিন জানান, সারাদেশের আন্দোলনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে আমরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থীরা মিলে চট্টগ্রামে রেল ও সড়ক অবরোধ করেছি। আমাদের এই কর্মসূচি সূর্যাস্ত পর্যন্ত চলতে থাকবে।

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম স্টেশনের মুখপাত্র জানান, বেলা ১১টা পর্যন্ত সকল ট্রেন সঠিক সময়ে গন্তব্যে ছেড়ে গেছে। কিন্তু এখন শিডিউল বিপর্যয় ঘটেছে। কোনো ট্রেন চট্টগ্রাম ছেড়ে যেতে পারছে না আবার চট্টগ্রামেও আসছে না।

রেললাইনে অবস্থান নিয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা, একাত্তরের পথ ধরো, বাংলা ব্লকেড সফল করো’, ব্লকেড ব্লকেড, বাংলা ব্লকেড’, ‘দফা এক দাবি এক, কোটা নট কাম ব্যাক’, ‘সংবিধানের/মুক্তিযুদ্ধের মূলকথা, সুযোগের সমতা’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ,’ ‘আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার”, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘কোটা প্রথা, বাতিল চাই বাতিল চাই’, ‘কোটা প্রথার বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাই নাই’- ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।

তবে বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল চেয়ে চার দফা দাবি থেকে সরে এসে এক দফা দাবি নিয়ে এখন আন্দোলন করছে শিক্ষার্থীরা। এক দফা দাবি হলো : "সরকারি চাকরির সকল গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লিখিত অনগ্রসর গোষ্ঠী ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের জন্য কোটাকে ন্যায্যতার ভিত্তিতে নূন্যতম পর্যায়ে এনে সংসদে আইন পাস করে কোটা পদ্ধতিকে সংস্কার করতে হবে।"

উল্লেখ্য, চলতি মাসের শুরু থেকেই কোটা ব্যবস্থা বাতিল ও ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালসহ চার দফা দাবিতে ক্যাম্পাসে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে কোনো আশ্বাস না পেয়ে ক্যাম্পাসের গণ্ডি পেরিয়ে রাজপথে গড়ায় এই আন্দোলন। শুরুর দিকে ক্ষুদ্র পরিসরে সড়ক অবরোধে সীমাবদ্ধ থাকলেও এবার বৃহৎ পরিসরে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে বৈষম্য বিরোধী শিক্ষার্থীরা।

এর আগে গত রোববার (৭ জুলাই) চার দফা দাবি থেকে সরে এসে এক দফা দাবি ঘোষণা করে কোটা বিরোধী আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ। পরদিন সোমবার (৮ জুলাই) 'বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’কে আরও গতিশীল করে 'সফল করার জন্য সারা দেশের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নিয়ে ২৩ জনকে সমন্বয়ক এবং ৪২ জনকে সহ-সমন্বয়ক হিসেবে পদায়ন করে সংগঠনটি। এতে চট্টগ্রাম অঞ্চলে চবি শিক্ষার্থী রাসেল আহমেদকে সমন্বয়ক ও খান তালাত মাহমুদকে সহ-সমন্বয়ক করা হয়।