'পুলিশ দিয়ে আমাদের আটকানো যাবে না'
কোটা সংস্কারের ১ দফা দাবিতে চলমান 'বাংলা ব্লকেড' কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ-সমাবেশ করার প্রায় ৩ ঘণ্টা পর মহসড়ক থেকে অবরোধ কর্মসূচি তুলে নিয়েছে আন্দোলনকারীরা৷ 'আমরা মেধাবীরা কোটা সংস্কারের মতো একটা মহান দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছি। দায়িত্ব অপূর্ণ রেখে আমরা পড়ার টেবিলে ফিরতে পারি না। পুলিশ দিয়ে আমাদের আটকানো যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক জাহিদুল ইসলাম ইমন৷
তিনি আরও বলেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর ন্যাক্কারজনক পুলিশি হামলার নিন্দা জানাই। এই মূহুর্তে পুলিশের উচিত হবে লাখ লাখ মানুষের দাবির প্রতি সম্মান জানিয়ে সব ধরনের হামলা-মামলা থেকে বিরত থাকা। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন জারি থাকবে। নির্বাহী বিভাগ থেকে সুনির্দিষ্ট কোন সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত আমরা কর্মসূচি চালিয়ে যাব।
বৃহস্পতিবার (১১জুলাই) সন্ধ্যা পৌনে ৭টায় প্রায় ৩ ঘন্টার অবরোধ শেষে মহাসড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেন তারা৷
এসময় আপীল বিভাগের শুনানিতে স্থিতাবস্থা ঘোষণাকে প্রহসনমূলক আখ্যা দিয়ে সরকারি চাকরির সকল গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করা, সংবিধানে উল্লিখিত অনগ্রসর গোষ্ঠী ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের জন্য কোটাকে ন্যায্যতার ভিত্তিতে ৫ শতাংশে এনে সংসদে আইন পাশ করে কোটা পদ্ধতিকে সংস্কারের এক দফা দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত অবরোধের ঘোষণা দেন কোটা ইস্যুতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা৷
এসময় বিক্ষোভ থেকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলার নিন্দা জানিয়ে আন্দোলনকারীরা পুলিশকে জনগণের দাবির সাথে সংহতি জানিয়ে হামলা-মামলা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান। আন্দোলনকারীরা জানান, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা এই আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
এসময় আন্দোলনকারীদের একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আহসান লাবিব বলেন, আমাদের চাওয়া একটাই। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, অনগ্রসর জনগোষ্ঠী এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের জন্য সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ কোটা রেখে কোটা ব্যবস্থার সংস্কার করা হোক৷
এর আগে দুপুর ২:৫০ মিনিট থেকে পূর্বঘোষণা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। পরে পৌনে ৪টার দিকে সেখান থেকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে আসলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক আলমগীর কবীর শিক্ষার্থীদের শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ থেকে বিরত থেকে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করেন৷ এসময় শিক্ষার্থীদের ভুয়া-ভুয়া সম্বোধন করে প্রধান ফটকের তালা ভেঙ্গে মহাসড়কে অবস্থান নেয়ার উদ্দেশ্যে অগ্রসর হতে গেলে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে তারা। এসময় পুলিশের কর্মকর্তারা শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করলেও শিক্ষার্থীরা পুলিশের অনুরোধ ও বাধা উপেক্ষা করে স্লোগান দিতে দিতে মহাসড়কে নেমে সড়কের উভয় পাশ ব্লক করে অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন৷ এসময় মহাসড়কে অনেকটা মুখোমুখি অবস্থান নেয় পুলিশ ও শিক্ষার্থীরা।