নারী শিক্ষার্থীকে 'শিবির' আখ্যা দিলেন কুবি মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি
কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নেওয়া কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) এক নারী শিক্ষার্থীকে 'শিবির' বলে আখ্যা দিয়েছেন কুবির মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি আমিনুর বিশ্বাস। শুক্রবার (১২ জুলাই) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজ অ্যাকাউন্ট থেকে একটি পোস্টে একথা বলেন তিনি।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) কোটাবিরোধী অন্দোলনরত কুবি শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলার ঘটনায় প্রায় সাত ঘণ্টা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন তারা। এ সময় বিক্ষোভকারীরে সঙ্গে সামনের সারিতে ছিলেন জহুরা মিম নামের ওই শিক্ষার্থী।
কুবির মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি আমিনুর বিশ্বাস ফেসবুক পোস্টে লিখেন, 'সাধারণ শিক্ষার্থীদের যে কোন যৌক্তিক আন্দোলনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সমর্থন থাকে, তেমনি কোটা আন্দোলনে যৌক্তিক সমাধান চায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ক্ষুদ্র কর্মী হিসেবে আমিও চাই কোটা আন্দোলনের যৌক্তিক সমাধান। কিন্তু জামাত বিএনপি পরিবারের সন্তানেরা, ছাত্রদল ও শিবিরের লোকজন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে অনুপ্রবেশ করে আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে। তার ধারাবাহিকতায় কুবির জহুরা মিম ( ওই নারী শিক্ষার্থীর ফেসবুক আইডি উল্লেখ করেন তিনি) নামের এই মেয়েটি ছাত্রশিবিরের একনিষ্ঠ কর্মী। সে এই আন্দোলনে ঢুকে আন্দোলনটাকে ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে।'
এবিষয়ে নৃবিজ্ঞান ২০১৯-২০ বর্ষের জহুরা মিম বলেন, 'গতকাল শিক্ষার্থীদের ওপর যে পুলিশি হামলা হয়েছে আমি সেটার জন্য আন্দোলনে দাঁড়িয়েছি। একটা যৌক্তিক দাবিতে আমি আন্দোলনে দাঁড়িয়েছি। কিন্তু আমিনুর বিশ্বাস আমাকে এবং আমার পরিবার নিয়ে যেভাবে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে তার জন্য আমি আমিনুর বিশ্বাসের বিচার চাই। সে আমার চরিত্র নিয়েও কথা বলেছে এটির বিচার আমি চাই। আমি বিভাগের চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত দিব, বিভাগ থেকে আমাকে আশ্বস্ত করলে আমি সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টে মামলাও করবো।'
ফেসবুক পোস্টের বিষয়ে জানতে আমিনুর বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি বিস্তারিত পোস্টে বলেছি। সেটিই আমার বক্তব্য।'
উল্লেখ্য, গতকাল (১১ জুলাই) বিকাল তিনটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন আনসার ক্যাম্পের সামনে শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠি চার্জ করে পুলিশ। এর জবাবে শিক্ষার্থীরাও ইট-পাথর নিক্ষেপ করেন। পরবর্তীতে পুলিশ কাঁদুনে গ্যাস, টিয়ারশেল, ফাঁকা গুলি ছুড়েন। ফলে তিন সাংবাদিক সহ অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থী আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পরবর্তীতে বিকাল সাড়ে চারটা থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা৷