‘আমরা পরিপত্র পরিপত্র খেলা খেলতে চাই না’: ইবি শিক্ষার্থীরা
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে দেশব্যাপী চলমান কোটা আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। মিছিলে শিক্ষার্থীরা সরকারের উদ্দেশ্যে মন্তব্য করে বলেন, ‘আমরা পরিপত্র পরিপত্র খেলা খেলতে চাই না, এর সুষ্ঠু সমাধান চাই।’
শুক্রবার (১২ জুলাই) বিকেল ৪টা থেকে বটতলায় জড়ো হতে থাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পরবর্তী শতশত শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন তারা। এসময় মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল হল এবং একাডেমিক ভবনের সামনে দিয়ে প্রদক্ষিণ করে প্রধান ফটকে এসে সমবেত হয়।
এসময় শিক্ষার্থীরা 'ভুয়া প্রশাসন, ভুয়া ভুয়া। ভাইয়ের বুকে বুলেট কেনো? প্রশাসন জবাব চাই। বোনের উপর আঘাত কেনো? প্রশাসন জবাব চাই। কুবিতে গুলি কেনো? প্রশাসন জবাব চাই। দফা এক দাবি এক, কোটা নট কামব্যাক। জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে। লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে। আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম। মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই'- ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
পরবর্তীতে আন্দোলনকারীরা কোটা সংস্কারের দাবিতে বিভিন্ন প্রতিবাদমূলক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং ছাত্রসমাজের উদ্দেশ্যে বক্তব্য প্রদান করেন।
শিক্ষার্থীরা তখন বলেন, আজকে ছুটির দিন বলেই আমরা মহাসড়ক অবরোধ করছি না। সাধারণ মানুষের জনদুর্ভোগের কথা চিন্তা করে আজকে আমরা আমাদের কর্মসূচি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রেখেছি। যদি সরকার দাবি না মেনে নেয় তাহলে রোববার সকাল থেকে সারাদেশের ছাত্রসমাজ একসাথে জবাব দিবে। আজকে আমরা শোডাউন দিয়েছি শুধু।
আরও বলেন, সরকার তার প্রশাসন দিয়ে কেনো আমার ভাইয়ের উপর গুলি চালাবে? আমাদের একজন শিক্ষার্থীর উপর আঘাত করা হলে তার দাঁতভাঙা জবাব দিবে ছাত্রসমাজ। সরকারের কাছে অনুরোধ থাকবে যেনো খুব দ্রুত এই বৈষম্যের সমাধান করে এবং যারা হামলা করেছে তাদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসে।
শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা সাধারণ শিক্ষার্থী, আমাদের কাজ রাস্তায় নেমে আন্দোলন করা না। কিন্তু যখন আমাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হবে তখন ছাত্রসমাজ বসে থাকবে না। তার উপযুক্ত জবাব দিয়ে আমরা আমাদের দাবি আদায় করবোই।
তারা দাবি করেন, আমাদের দাবি সরকারের কাছে। আমাদের দাবি যত তাড়াতাড়ি সরকার মেনে নিবে তত তাড়াতাড়ি ক্লাসে ফিরে যাবো। আমরা ক্লাস-পরীক্ষার জন্যই বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছি। সরকারের কাছে আমাদের অনুরোধ সরকার যেন দ্রুত দাবি মেনে নিয়ে আমাদের পড়ার টেবিলে ফেরত পাঠায়।
উল্লেখ্য, গতকাল কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশি হামলায় তিনজন সাংবাদিক সহ প্রায় ৩০ জন শিক্ষার্থী আহত হন। এছাড়াও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করে পুলিশ বাহিনী। তারই প্রতিবাদ হিসেবে আজকে দেশব্যাপী বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।