সর্বাত্মক কর্মবিরতি অব্যাহত রাখার ঘোষণা শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের
সর্বজনীন পেনশন স্কিম বাতিলের দাবিতে শিক্ষকদের সর্বাত্মক কর্মবিরতি অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন। কিন্তু তিন দফা দাবি পূরণে এখনো সুস্পষ্ট কোনো ঘোষণা না আসায় আন্দোলনরত শিক্ষকেরা তাদের চলমান কর্মসূচি অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
রোববার (১৪ জুলাই) রাতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আকতারুজ্জামান ও মহাসচিব অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত এক বিববৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
শিক্ষকদের আন্দোলনের ব্যাপারে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জনাব ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে শনিবার (১৩ জুলাই) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির প্রতিনিধিদের বৈঠকের পর চলমান আন্দোলনের পরবর্তী পদক্ষেপে এ কর্মসূচির ঘোষণা এলো।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের নেতৃত্বে গত মার্চ মাস থেকে সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ তিনটি যৌক্তিক দাবিতে আন্দোলন করে যাচ্ছেন। এর ধারাবাহিকতায় ১লা জুলাই থেকে শিক্ষকরা সর্বাত্মক কর্মবিরতি শুরু করেন। সরকারের পক্ষ থেকে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, এমপি আলোচনার আমন্ত্রণ জানান।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১৩ জনের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে শনিবার (১৩ জুলাই) একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এসময় বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, এমপি, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, এমপি, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বেগম শামসুন নাহার, এমপি, প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী এবং বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া।
শিক্ষক প্রতিনিধিরা তাদের একটি লিখিত বক্তব্য মন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন। এ সভায় আন্তরিক পরিবেশে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের বিভিন্ন দাবিগুলো নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হয়।
শনিবার এ আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে রোববার (১৪ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টায় অনলাইন প্লাটফর্মে ফেডারেশনের সঙ্গে সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির প্রতিনিধিদের একটি জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় শিক্ষক নেতৃবৃন্দ শনিবারের আলোচনার বিষয়বস্তু উপস্থাপন করেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এ ধরনের আলোচনার উদ্যোগ গ্রহণ করায় সভার পক্ষ থেকে সেতুমন্ত্রীসহ সবাইকে ধন্যবাদ জানানো হয়। কিন্তু তিনদফা দাবি পূরণে এখনো সুস্পষ্ট কোনো ঘোষণা না আসায় চলমান কর্মসূচি অব্যাহত রাখার পক্ষে মতামত প্রদান করেন। পাশাপাশি সরকারের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রাখার ব্যাপারে ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দকে সুপারিশ করেন।
প্রত্যয় স্কিম থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি প্রত্যাহার করে অতিদ্রুত প্রজ্ঞাপন জারি, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য উচ্চতর স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো প্রদানের লক্ষ্যে কমিশন গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি ও ২০১৫ সালে প্রতিশ্রুত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সুপার গ্রেডে অন্তর্ভুক্তিকরণের প্রক্রিয়া দ্রুত বাস্তবায়ন; বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সুস্পষ্ট এই তিনটি দাবি জোরালোভাবে পুনর্ব্যক্ত করা হলো।
দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত সর্বাত্মক কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি চলমান থাকবে। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন দ্রুততম সময়ের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে উল্লিখিত দাবিগুলো বাস্তবায়নের জন্য সরকারকে অনুরোধ জানাচ্ছে।