প্রতিষ্ঠার দেড় যুগেও হয়নি অবকাঠামোগত উন্নয়ন

নির্দলীয়, নিজস্ব উপাচার্য চায় জবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

  • জবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

নির্দলীয়, নিজস্ব উপাচার্য চায় জবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ছবি- বার্তা২৪.কম

নির্দলীয়, নিজস্ব উপাচার্য চায় জবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ছবি- বার্তা২৪.কম

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) প্রতিষ্ঠার পর থেকে উনিশ বছরে উপাচার্যের (ভিসি) দায়িত্ব পেয়েছেন ছয়জন অধ্যাপক। তবে কোনো উপাচার্যের আমলেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যাশিত অগ্রগতি হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও শিক্ষার্থীদের মৌলিক সমস্যা সমাধানে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও রয়েছে নানা প্রশ্ন। এমনকি অনেকে বিরুদ্ধে রয়েছে নিয়োগ ও টেন্ডার বাণিজ্যের অভিযোগ। এদিকে সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিমের পদত্যাগের পর নতুন উপাচার্য নিয়োগের বিষয়টি আবার আলোচনায় এসেছে।

শিক্ষক- শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রতিষ্ঠার দেড় যুগেও বিশ্ববিদ্যালয়টি মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারার কারণ হলো নিজস্ব অধ্যাপকদের মধ্য থেকে উপাচার্য নিয়োগ না দেওয়া। ঢাবি থেকে ভিসি নিয়োগ হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বুঝতে তার তিন থেকে ছয় মাস সময় লাগে। এরপর চেয়ার একটু শক্ত হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ঢেলে সাজানোর কাজে নামেন ভিসি। নিজের বলয় ধরে রাখতে আস্থাভাজন লোকদের দায়িত্ব দেন বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক উন্নয়নের বিষয়টি তাদের (উপাচার্য) কাছে খুব একটা গুরুত্ব পায় না।

বিজ্ঞাপন

জানা গেছে, বিগত দিনে জবিতে দায়িত্ব পালন করা ছয়জন উপাচার্যের সবাই ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিয়োগপ্রাপ্ত। তারা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন উপাচার্য এ. কে. এম. সিরাজুল ইসলাম খান, আবু হোসেন সিদ্দিক, মেসবাহউদ্দিন আহমেদ, মীজানুর রহমান, মো. ইমদাদুল হক।

সর্বশেষ ২০২৩ সালের ৩০ নভেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম জবির ষষ্ঠ উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান। তবে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে ১১ আগস্ট পদত্যাগ করতে বাধ্য হন তিনি। ফলে উপাচার্যের রুটিন দায়িত্ব পালন করছেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. হুমায়ুন কবির চৌধুরী।

বিজ্ঞাপন

এমতবস্থায় জবির নিজস্ব অধ্যাপকদের মধ্যে নির্দলীয় কাউকে উপাচার্য নিয়োগের দাবি তুলছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, অন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হলে তাকে ক্যাম্পাসে ঢুকতে দেওয়া হবে না।

এ বিষেয়ে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাকদের মধ্য থেকে যদি বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি নিয়োগ না দেওয়া হয় তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘গেইট লক’ করে দেওয়া হবে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কে আর কখনো কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের কলোনি বানাতে দিবো না। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক নিরপেক্ষ যোগ্য অধ্যাপক আছেন, যারা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ যেকোন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হওয়ার সক্ষমতা রাখে।’

আইন বিভাগের শিক্ষার্থী রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ‘জবিতে অনেক যোগ্য অধ্যাপক রয়েছেন, কিন্তু বারবার আমাদের শিক্ষকদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। এখন থেকে উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, রেজিস্ট্রারসহ প্রশাসনিক পদে নিজস্ব শিক্ষকদের নিয়োগ দিতে হবে। শিক্ষার্থীদের অধিকারের পক্ষে কথা বলতে সক্ষম, এরকম যোগ্যতা সম্পন্ন নির্দলীয় ভিসি (উপাচার্য) চাই।’

এদিকে মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষক- শিক্ষার্থীদের ব্যানারে নির্দলীয় ও নিজস্ব উপাচার্যের দাবিতে মানববন্ধন করা হয়।

এসময় শিক্ষক- শিক্ষার্থীরা বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একজন নির্দলীয় উপাচার্য দিতে হবে। সকল প্রকার ছাত্র ও শিক্ষক রাজনীতি বন্ধ করতে যিনি মেরুদণ্ড সোজা করে শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াতে সক্ষম হবেন, এ রকম উপাচার্য দিতে হবে। জবির বাহির থেকে উপাচার্য আসলে প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়ার হঁশিয়ারিও দেন তারা।