আসিফের ওপর হামলায় জড়িত আনসার সদস্যদের শাস্তি দাবি ডুজার
পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সদস্য ও দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি আসিফ হাওলাদারের (আসিফ হিমাদ্রি) ওপর রাজধানীর সচিবালয় এলাকায় চাকরি জাতীয়করণের দাবি আদায়ে আন্দোলনরত আনসার বাহিনীর সদস্য কর্তৃক নারকীয় হামলা ও মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (ডুজা)। একইসাথে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি উভয় ঘটনায় জড়িতদেরকে চিহ্নিত করে অতি দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের জোর দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
সোমবার (২৬ আগস্ট) ডুজার সভাপতি আল সাদী ভূঁইয়া ও সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন মুজাহিদ মাহি এক যৌথ বিবৃতিতে এ দাবি জানান।
বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় বলেন, বিভিন্ন মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি, চাকরি জাতীয়করণের দাবি আদায়ে গত ২১ আগস্ট থেকে আন্দোলনরত আনসার সদস্যরা গত ২৫ আগস্ট সচিবালয় ঘেরাও করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন সমন্বয়কসহ অনেককে আটকে রাখার প্রেক্ষিতে রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে সচিবালয় এলাকায় গেলে আনসার সদস্যরা তাদের ওপর হামলা করে এবং একপর্যায়ে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। এসময় পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে প্রথম আলোর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি আসিফ হাওলাদারের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় আনসার সদস্যরা। তারা আসিফের মাথা, পিঠ, ঘাড়, হাত ও পাসহ পুরো শরীরে লাঠিসোঁটা, লাথি ও কিলঘুষির মাধ্যমে নির্মমভাবে আঘাত করে। সাথে প্রেসকার্ড থাকা এবং বারবার সাংবাদিক পরিচয় দেওয়া সত্ত্বেও তারা হিংস্রতা থামায়নি। এমনকি মারধর করার পর তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনটিও ছিনিয়ে নেয়। তিনি বর্তমানে রাজধানীর একটি বেসরকারী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, ক্যাম্পাস সাংবাদিকরা সবসময় সত্য প্রকাশের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের কল্যাণে বস্তুনিষ্ঠতার সাথে তাদের পেশাগত কাজ করে থাকেন। আর মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্র-এর আর্টিকেল ১৯ ও রাষ্ট্রীয় বিধানানুযায়ী দেশের প্রতিটি সংবাদকর্মীই স্বাধীনভাবে তাদের পেশাগত কাজ করার অধিকার রাখে। বাংলাদেশ সংবিধানের ৩৯নং অনুচ্ছেদেও চিন্তা, বিবেক, বাক, ভাব প্রকাশ এবং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু আসিফ হাওলাদারের ওপর এ হামলার ঘটনার মাধ্যমে সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরোধ ও এর স্বাধীনতা খর্ব করার অপচেষ্টা করা হয়েছে। আমরা খেয়াল করছি, প্রতিনিয়ত দেশের বিভিন্ন জায়গায় সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেই চলেছে। এমনও হচ্ছে যে, সংবাদমাধ্যমের কার্যালয়ে ঢুকে সংশ্লিষ্টদের ওপর অতর্কিত আক্রমণ করা হচ্ছে। অধিকাংশ সময়ই এই দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দেখা যায় না। যার কারণে, হামলার মতো ঘৃণ্য কাজটি দেশে একটা নিয়মিত সংস্কৃতি হিসেবে রূপ নিয়েছে। যা অত্যন্ত দুঃখজনক, লজ্জাজনক এবং উদ্বেগের।
হামলায় জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন, যারাই আসিফ হাওলাদারের ওপর ঘৃণ্যতম এই হামলার সাথে জড়িত ছিল তাদের সকলকেই অতি দ্রুত চিহ্নিত ও গ্রেফতার করে আইনানুযায়ী দৃষ্টান্তমূলক শান্তি নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের ওপরও হামলার ঘটনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি অন্য সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস সাংবাদিকদের নিয়ে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হবে।