অস্থিরতা দূর করে একাডেমিক কার্যক্রম চালু করাই বড় চ্যালেঞ্জ: ঢাবি উপাচার্য

  • ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

অস্থিরতা দূর করে একাডেমিক কার্যক্রম চালু করাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। দাবির অনিয়ন্ত্রিত বহিঃপ্রকাশ হলে কাজ করা কঠিন হয়ে পড়বে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নবনিযুক্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান।

মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) বিকেলে দায়িত্ব গ্রহণ শেষে উপাচার্যের লাউঞ্জে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে শিক্ষার্থীদের ত্রাণ কার্যক্রম পরিদর্শন করেন তিনি। পরিদর্শন শেষে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমম্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহকে দেখতে যাওয়ার কথা রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

উপাচার্য সাংবাদিকদের বলেন, মানুষের মধ্যে দীর্ঘদিনের ক্ষোভ আছে। তবে দাবির অনিয়ন্ত্রিত বহিঃপ্রকাশ হলে কাজ করা যাবে না। একটা বড় সময় অস্থিরতার মধ্য দিয়ে যেতে হলে আমার কার্যকর সময় কমে যাবে। আমাদের শিক্ষাকার্যক্রম শুরু করা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। সবার সম্পর্ককে একটা মোটামুটি সহনশীল পর্যায়ে সম্পর্কগুলো এনে কাজ চালু করতে হবে।

শ্রেণি কার্যক্রম কবে নাগাদ চালু হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা একটু পরিস্থিতি দেখি। উঠে পড়ে চেষ্টা করতে থাকব।

বিজ্ঞাপন

তিনি জানান, দীর্ঘদিনের অপশাসনের কারণে আমাদের সমাজ-জাতি চূড়ান্তভাবে বিভাজিত হয়ে গেছে। এখান থেকে একত্রিত হওয়ার প্রক্রিয়াটা একটু কঠিন। যেসব ফৌজদারি অপরাধ সেগুলো আইনি প্রক্রিয়ায় বিচার হবে। তবে যতটুকু পারা যায়, আমরা সহনশীলতার মাধ্যমে কাজ এগিয়ে নিয়ে যাব।

‘বর্তমান শিক্ষার্থীরা একটি সম্পূর্ণ নতুন অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে আসছে। ট্রমা মোকাবেলা করে পড়াশোনায় থিতু হওয়া এখন কাজ। এই প্রক্রিয়ায় সবার সহযোগিতা দরকার।’

আবাসিক হলগুলোর বিষয়ে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের বিষয়ে তিনি বলেন, হলের ক্ষেত্রে ছাত্ররাই সবচেয়ে বড় পরামর্শদ্বাতা। কারণ কথায় আছে 'জুতার ঠিক কোন জায়গায় পেরেকটি আহত করছে সেটা যিনি জুতা পড়ে আছে সেই ভালো জানে, তাই ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে কথা বলতে হবে যে তারা কি মনে করছেন। পারফেকশন এর কোন শেষ নেই। প্রথমেই শতভাগ দিয়ে শুরু করতে না পারলে ৬০-৭০% দিয়ে হলেও শুরু করতে চাই।

গবেষণার বিষয়ে তিনি বলেন, গবেষণার উদ্যোগ বাড়ানো দরকার। এক্ষেত্রে আগের প্রশাসন কিছু ভালো কাজ করেছে। এই ধারাবাহিকতা আমরা যেন বাড়াতে পারি। ইন্ডাস্ট্রি এবং প্রেকটিসিং জগতের সাথে আমাদের সম্পর্ক তৈরি জরুরি। এটা বাড়াতে হবে।

নিজের রাজনৈতিক মতাদর্শ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কখনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নেইনি। দলকেন্দ্রিক রাজনীতিতে আমার কোনো আগ্রহ নেই। এটি আমার জায়গা না।

তিনি বলেন, আমি খামখেয়ালী বা অনুরাগের বশবর্তী হয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেব না। এ ধরনের পরিসরের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সবাইকে খুশি রাখা সম্ভব না। কিন্তু যুক্তির ভিত্তিতে আমি সিদ্ধান্ত নেওয়ার চেষ্টা করব।

‘আমি কোনো লুকোচুরি করব না। চেষ্টা করতে থাকব। যখন মনে হবে চেষ্টার ফলেও আমি তেমন কিছু করতে পারছি না, তখন আমি বিদায় নেব। আমি (চেয়ারে থাকার) কোনো লম্বা-চওড়া পরিকল্পনা নিয়ে আসিনি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর আমাদের সমাজের এবং রাষ্ট্রের বৃহত্তর সিদ্ধান্তের একটি প্রভাব থাকবে। তবে মূল যে আদর্শ, ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন’ মধ্যেই তা রয়েছে; মানবিক দুর্বলতা বাদ দিয়ে ন্যয্যতার ভিত্তিতে কাজ করা। বড় মাপের সিদ্ধান্ত নেওয়া ক্ষেত্রে আমাদের সময় লাগবে। তাছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের সমাজের একটি প্রতিষ্ঠান। সমাজ কী চাচ্ছে, তাও বড় বিষয়।