স্ত্রীকে হত্যার হুমকি দেয়া ইবি শিক্ষক কারাগারে
নারী ও শিশু নির্যাতন মামলায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও সভাপতি ড. সঞ্জয় কুমার সরকারকে জেলে পাঠিয়েছে আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) নাটোর জর্জ কোর্টে বিচারক মোহাম্মদ আব্দুর রহিম তার জামিন নামঞ্জুর করে তাকে জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।
‘২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে’র ১১ (গ) ও ৩০ ধারায় তার স্ত্রীর করা মামলার শুনানিতে জামিন নামঞ্জুর করে এই আদেশ দেয় আদালত।
মামলার এজাহারে বলা হয়, আট বছর আগে সঞ্জয় ও জয়ার বিয়ে হয়। এসময় বাদীর (জয়া) কল্যাণের কথা চিন্তা করে তার বাবা নগদ ২৫ লাখ টাকা, ২০ ভরি স্বর্ণালংকার, টিভি, ফ্রিজসহ প্রয়োজনীয় যাবতীয় ফার্নিচার দেয় সঞ্জয়কে।
তবে বিয়ের পর থেকেই তাদের উভয়ের মধ্যে মনোমালিন্যের জেরে জয়া সাহা বিভিন্ন সময় তার স্বামী সঞ্জয় সরকার দ্বারা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হন। একইসঙ্গে জয়াকে যৌতুকের টাকার জন্য মারধর শুরু করে সঞ্জয়।
২০২৩ সালে জুনে আবারও ১০ লক্ষ টাকা যৌতুকের দাবিতে তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে। পরে জয়া টাকা আনতে অপারগতা জানালে তাকে ও তার সাড়ে চার বছরের শিশু সন্তানকে জোরপূর্ব শ্বশুরবাড়ি রেখে আসে সঞ্জয়। তারপর থেকে উভয়েই একবছরের বেশি সময় আলাদা থাকছেন।
রাষ্ট্রপক্ষের পক্ষের আইনজীবী এ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান বলেন, সঞ্জয় সাহার স্ত্রী তার নামে যৌতুক ও নারী নির্যাতন আইনে মামলা করেছিলেন। মামলাটি পরে জুডিশিয়াল তদন্ত হয়। তদন্তে ম্যাজিস্ট্রেট সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে যৌতুক নেয়া, তাকে মারধর, নির্যাতনের সত্যতা পায়। পরে বিজ্ঞ বিচারক সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি করেন। তখন সে এসে আপোষের কথা বলে অস্থায়ী জামিন নিয়ে যায়। আজকে মামলার পরবর্তী ডেট ছিল, কিন্তু আজ পর্যন্ত আপোষ না করায় আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেয়।
এ বিষয়ে ড. সঞ্জয় কুমারের আইনজীবী এ কে এম শাহজাহান কবীর বলেন, আমার জানা মতে তিনি তার স্ত্রীকে গ্রহণ করতে চান। কিন্তু তার স্ত্রী তার সঙ্গে সংসার করতে রাজি হন না। এটা দ্রুত জামিন যোগ্য মামলা না হলেও আপোষযোগ্য মামলা। তবে আমরা আগামী রবিবার আবারো জামিনের চেষ্টা করবো ।
ড. সঞ্জয় কুমার সরকারের স্ত্রী জয়া সাহা বলেন, এ বিষয়ে আমার নতুন করে কিছু বলার নাই। আমার ও আমার সন্তানের সঙ্গে ঘটে যাওয়া অমানবিক নির্যাতনের ফলেই তার জেল হয়েছে। আমি তার উপযুক্ত শাস্তি চাই।