বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধসহ ৪ দফা দাবিতে জাবিতে মানববন্ধন
সারাদেশে ‘বিচারবহির্ভূত হত্যা’ এবং মব জাস্টিস বন্ধসহ চার দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রগতিশীল শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুরাদ চত্ত্বর থেকে শিক্ষর্থীদের একটি মিছিল বের করে শহিদ মিনারের সম্মুখে এসে মানববন্ধন করে। এসময় মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা ৪ দফা দাবি জানান।
৪ দফা দাবি গুলো হলো-
১৷ সারা দেশে ‘বিচারবহির্ভূত হত্যা’ এবং মব জাস্টিস বন্ধ করতে হবে।
২৷ শামীম মোল্লার হত্যার ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে জড়িতদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
৩৷ নিরাপত্তা শাখায় কলাপসিবল গেইটের তালা ভেঙে শামীম মোল্লাকে মারধরের সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত নিরাপত্তা শাখা ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের ভূমিকা তদন্ত করতে হবে।
৪৷ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৫ ও ১৭ জুলাইয়ে হামলাকারীদের নামে মামলা করতে হবে।
মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের ৪৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী হাসিব জামানের সঞ্চালনায় বক্তারা বক্তব্য রাখেন।
এসময় সঞ্চালনায় থাকা হাসিব বলেন, শামীম মোল্লার হত্যাকাণ্ডের জন্য বিচার চাওয়া দুইজন শিক্ষককে আবার তদন্ত কমিটিতে নিয়োগ দেওয়াতে সন্দেহ পোষণ করি। অতিদ্রুত সুষ্ঠু বিচার করার জন্য এই কমিটিকে বিলুপ্ত করে নতুন কমিটি দিতে হবে এবং প্রশাসনের কাছ থেকে সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
আমরা অনিরাপদ বাংলাদেশ চাই না মন্তব্য করে মানববন্ধনে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী সোহাগী সামিয়া বলেন, গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বাধীন হওয়ার পরও আজ আমরা অনিরাপদ, এ অনিরাপদ বাংলাদেশ চাই না। বিশ^বিদ্যালয়ে কেউ যদি মব জাস্টিস করতে চায়, অস্থিতিশীল করতে চায় তাদেরকে এই ক্যাম্পাসে চাই না। ১৮ তারিখ প্রক্টর অফিসে নিরাপত্তা কর্মীদের সামনে একজন লোককে পিটিয়ে মেরে ফেলল। তার ব্যবস্থা এখনো করতে পারেন নাই প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখনো যারা ১৫ জুলাইয়ে হামলার সাথে জড়িত ছিলো তাদের তালিকা এখনো প্রকাশ করতে পারে নাই, অতি দ্রুত সেই তালিকা প্রকাশ করে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।
বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী রায়হান কবির রাসেল বলেন, গত ৫ তারিখে স্বৈরাচারী শাসকের মৃত্যুর পর একের পর একের মৃত্যু কেনো। মব জাস্টিসের মধ্যমে নিরাপত্তা অফিসের তালা ভেঙে কারা হত্যার করলো এবং সে সময় নিরাপত্তা কর্মীরা কোথায় ছিলো? এছাড়া অন্য একটি হত্যা মামলায় প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদিপ্ত শাহীন উপস্থিত থাকার পরও হত্যা কিভাবে শামীম মোল্লাকে মারা হয়। প্রক্টর অফিসের সিসিটিভি ফুটেজ নেই কারণ সেটি নাকি নষ্ট।
প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার সংশ্লিষ্টতায় গত ১৮ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের সাবেক নেতা শামীম মোল্লা কয়েক দফায় গণপিটুনির শিকার হন। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাকে পুলিশের হাতে তুলে দিলে পুলিশ হেফাজতে গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা করেছে আশুলিয়া থানা পুলিশ।