গণহত্যায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে জাবিতে বিক্ষোভ

  • জাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

গণহত্যায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে জাবিতে বিক্ষোভ/ছবি: বার্তা২৪.কম

গণহত্যায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে জাবিতে বিক্ষোভ/ছবি: বার্তা২৪.কম

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত জুলাই মাসে গণহত্যার সাথে জড়িত খুনি ও দোসরদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ-সমাবেশ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বেলা সোয়া ৪টায় ‘জুলাই গণহত্যা বিচার নিশ্চিত পরিষদ’ এর ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন মহাসড়কে অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়। প্রায় আধা ঘন্টা মহাসড়কে অবস্থানের পর অবরোধের কর্মসূচি তুলে নেয় শিক্ষার্থীরা। এসময় অবরোধের ফলে মহাড়কের আরিচাগামী লেনে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।

বিজ্ঞাপন

এসময় শিক্ষার্থীদের আবু সাইদ-মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ; আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে; জাস্টিস জাস্টিস, উই ওয়ান্ট জাস্টিস; বিচার চাই বিচার চাই, ভাই হত্যার বিচার চাই ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়৷

এর আগে বিকাল সাড়ে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সম্মুখে শিক্ষার্থীরা জড়ো হয় ও একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ শেষে একটি মিছিল নিয়ে মহাসড়কের দিকে যাওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

সমাবেশে সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী নজরুল ইসলাম নাইমের সঞ্চালনায় বক্তারা ১৬ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ছাত্র-জনতার গণহত্যার বিচারে সরকার ও প্রশাসনের দীর্ঘসূত্রিতার তীব্র সমালোচনা করেন ও সন্দেহ প্রকাশ করেন৷ এছাড়া তারা আরও বলেন, ১৫, ১৬ ও ১৭ জুলাইয়ে হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের উপর ছাত্রলীগের অতর্কিত সশস্ত্র হামলার দেড় মাস পার হলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জড়িত শিক্ষক-ছাত্র-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে মামলা-গ্রেফতার ও বিচার নিশ্চিতে ব্যার্থ হয়৷ প্রশাসনের এই ব্যর্থতা ও দ্বিচারিতা তাদের প্রশাসনিক অদক্ষতা ও স্বার্থ সিদ্ধির বহিঃপ্রকাশ৷

এসময় নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের শিক্ষার্থী শোয়াইব হাসান বলেন, ‘জুলাই হত্যার খুনিরা বিভিন্নভাবে ক্যাম্পাসে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে। তাদের দেখে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মনে ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে। যারা বহিরাগত এনে ক্যাম্পাসে হামলা চালালো, তাদের একজনও এখনো গ্রেফতার হয়নি। যত দ্রুত সম্ভব তাদের গ্রেফতারের আওতায় আনতে হবে। তাদের নিরাপত্তার ও মানবাধিকারের কথা চিন্তা করে সরকারের উচিত তাদের আইনের আওতায় আনা। অন্যথায় গণপিটুনির মতো ঘটনাগুলো বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গণপিটুনিতে নিহত শামীম মোল্লা তার জবানবন্দিতে ১৫ জুলাই হামলার ঘটনায় জড়িত একজন শিক্ষকের নাম বলে গেছেন। অথচ তার বিরুদ্ধে এখনো কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।’

মহাসড়কে অবরোধ চলাকালে সাভার এলাকায় গুলিতে শহীদ আলিফ আহমেদ সিয়ামের পিতা বুলবুল কবির জানান, ‘পিতার ঘাড়ে সন্তানের লাশের থেকে কষ্টের আর কিছুই হতে পারে না। আন্দোলনে এক হাজারেরও বেশি মানুষ শহিদ হয়েছে। কিন্তু একমাস পেরিয়ে গেলেও তাদের বিচারের আওতায় আনা হয়নি। সাভারে অনেকে শহিদ হয়েছে। কিন্তু একজন আসামীও এখন পর্যন্ত ধরা হয় নাই।’

এদিকে, বিক্ষোভ কর্মসূচি ও মহাসড়ক অবরোধ শেষে শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে তারা তিন দফা দাবি জানায়। দাবিগুলো- অবিলম্বে খুনী-দোসরদের চিহ্নিত করে গঠনমূলক সরকারি মামলা নিশ্চিত করা; ৭ দিনের মধ্যে সারাদেশের খুনী-দোসরদের গ্রেফতার নিশ্চিত করা এবং ৩ মাসের মধ্যে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে অপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করা।