বন্যার্তদের পুর্নবাসনে কৃষি-প্রাণিসম্পদ সহযোগিতা শেকৃবি’র
আকস্মিক বন্যায় দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পুর্নবাসনে ১০ একর জমিতে চাষযোগ্য ধানের চারা, চাষাবাদে প্রয়োজনীয় সার-কীটনাশক সরবারহ করেছে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্তদের অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বী করার উদ্দেশ্যে মুরগির বাচ্চাও সরবারহ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টি।
তৃতীয় ধাপে শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) চারশো কেজি ধানের বীজ থেকে উৎপাদিত ১০ একর জমিতে চাষযোগ্য ধানের চারা, প্রয়োজনীয় সার, কীটনাশক এবং পাঁচ হাজার মুরগির বাচ্চা কুমিল্লার ব্রাহ্মনপাড়া উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্থদের পৌঁছে দেয় বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা।
দেশের ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা অঞ্চলে বন্যার সময় শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক-শিক্ষার্থী কর্মকর্তা কর্মচারী ৮ লক্ষাধিক টাকার ত্রাণ সামগ্রী পৌছে দিয়েছে বন্যার্তদের মাঝে। বন্যা পরবর্তীতে কৃষি পুনর্বাসনের লক্ষ্যে তখনই ধানের বীজ বপন, সবজীর বীজ বপন ও কাজী ফার্মস এর সাথে যোগাযোগ করে খামারীদের জন্য মুরগির বাচ্চার ব্যবস্থা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা
কৃষি পুনর্বাসনের লক্ষ্যে ফেনীর ফুলগাজী উপজেলা ও কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় তিন ধাপে প্রায় ৮ হাজার সবজির চারা, ১০ একর জায়গায় চাষ উপযোগী ধানের চারা, চাষের জন্য প্রয়োজনীয় সার কীটনাশক ও ১০ হাজার মুরগির বাচ্চা বিতরণ করা হয়।
এই কার্যক্রমকে সফল করার উদ্দেশ্য গত ২২ আগস্ট বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (BRRI) এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (DAE) সহায়তায় বীজ সংগ্রহ ও বিশ্ববিদ্যালের গবেষনা মাঠে ধানের চারা উৎপাদন শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তাছাড়াও বর্তমানে সবজি ও ফসলের চারা উৎপাদনের কাজ চলমান রয়েছে যা অতিদ্রুত পৌঁছে দেওয়া হবে ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে।
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনের শেকৃবি সমন্বয়ক তৌহিদ আহমেদ বলেন, ৫ আগস্টের পরে আমাদের সামনে দেশ সংস্কারের পাশাপাশি বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হই। ফেনী, নোয়াখালীর বন্যার ত্রাণ ও পুনর্বাসনের কাজ শুরু হয়। আমরা পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে কৃষি, প্রাণিসম্পদ ও মৎস চাষ পুনর্বাসনে কাজ করছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের হর্টিকালচার বিভাগের অধ্যাপক জামাল উদ্দিন বলেন, শিক্ষার্থীদের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানায়। আশা করি তাদের এই উদ্যোগ খাদ্য সংকট মোকাবিলায় অনেকাংশে ভূমিকা রাখবে।
এগ্রোনমি বিভাগের অধ্যাপক রুহুল আমিন বলেন, শিক্ষার্থীদের মহৎ এই উদ্দ্যোগ খাদ্যসঙ্কট মোকাবিলায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মনে করি। তা বাস্তবায়নে শিক্ষকরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছে।আমাদের শিক্ষার্থীরা বন্যা কবলিত এলাকায় ধান রোপনের বিষয়ে পরামর্শ করতে আসলে আমরা শিক্ষকরা মিলে BRRI এবং BADC তে ধান বীজের জন্য যোগাযোগ করি এবং বিএডিসি থেকে আমরা ৩০০ কেজির মতো ধান বীজ পায়। পরবর্তীতে আরও কিছু ধান বীজ সংগ্রহ করা হয় যা প্রায় চার বিঘা জমিতে বপন করে চারা উৎপাদন করা হয়।আমরা ও আমাদের শিক্ষার্থীরা সাধ্য অনুযায়ী বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের পুর্নবাসনে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার প্রচেষ্টা অব্যহত রেখেছি।