‘বুয়েটের অচলাবস্থায় উস্কানি দিচ্ছেন বিএনপির এক আইনজীবী’
শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন, 'আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্য আছে যে বুয়েটের অচলাবস্থায় বিএনপির জাতীয়তাবাদী আইনজীবী পরিষদের এক আইনজীবী উস্কানি দিচ্ছেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘সেই আইনজীবী তার সন্তানকে বুয়েটের এ আন্দোলন চালিয়ে নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। বুয়েটের এ অচলাবস্থার জন্য কারা ইন্ধন দিচ্ছেন, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় আমরা তা জানতে পেরেছি। তবে তদন্তের স্বার্থে আমি নাম উল্লেখ করতে চাই না।’
সোমবার (১৮ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে বুয়েটের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে গণমাধ্যমকে ব্রিফ করার সময় এসব কথা বলেন উপমন্ত্রী।
তিনি আরো বলেন, ‘আরো তথ্য পেয়েছি, একজন অভিভাবক এ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার জন্য তার সন্তানকে উদ্বুদ্ধ করছেন এবং উস্কানি দিচ্ছেন। তাছাড়া একটি রাজনৈতিক জোটের সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রথিতযশা এক আইনজীবী আন্দোলনকারীদের আইনি সহায়তা দিতে চেয়েছেন।’
‘বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা একটি ন্যাক্কারজনক ঘটনা। যা আমাদের সবাইকে ব্যথিত করেছে। সরকার এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এ ঘটনার পর থেকে দ্রুততম সময়ে অপরাধীদের গ্রেফতার করা হয়েছে এবং মামলার চার্জশিট দেওয়া হয়েছে আদালতে। কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মী হিসেবে কাউকে ছাড় দেওয়া হয়নি। তাহলে বুয়েটে কেন এখনও অচলাবস্থা বিরাজ করছে বা কারা এর পেছনে ইন্ধন দিচ্ছেন, তার সবই আমরা জানতে পেরেছি,’ যোগ করেন তিনি।
আন্দোলনে যারা ইন্ধন দিচ্ছেন, তাদের উদ্দেশে উপমন্ত্রী নওফেল বলেন, ‘মাঠের রাজনীতিতে পরাজিত হয়ে যারা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উস্কানি দিয়ে নিজেদের সন্তানকে ব্যবহার করে শিক্ষা ক্ষেত্রে অচলাবস্থা সৃষ্টি করছেন, সরকারবিরোধী একটি রাজনীতি দেশে চালু রাখতে চেষ্টা করছেন, সে অপরাজনীতিকারীদের আমি বলব, খোলা মাঠের রাজনীতিতে আসুন। গোপনে উস্কানিদাতাদের তথ্য আমাদের কাছে এসেছে। প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।’
অভিভাবকদের উদ্দেশে উপমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের সন্তানদের শিক্ষা জীবন নষ্ট করার জন্য কিছু ব্যক্তি উস্কানি দিয়ে যাচ্ছেন। সন্তানদের বোঝাতে হবে, তারা মেধাবী, এ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেয়েছে। তারা কারো অপরাজনীতির সুযোগ যেন না হয়, এ অচলাবস্থার মাধ্যমে সাধারণ শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন নষ্ট করা হচ্ছে। জনগণের অর্থের অপচয় করা হচ্ছে।’
দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান আন্দোলন নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে নওফেল বলেন, ‘এসব আন্দোলনের ফলে শিক্ষা ক্ষেত্রে কোনো সংকট তৈরি হয়নি। তবে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনের উস্কানির খবর পেয়েছি। বাম সংগঠনের কিছু নেতা দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উস্কানি দিচ্ছেন।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দুই পক্ষের অভিযোগ আমরা হাতে পেয়েছি। দুই পক্ষের অভিযোগ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে দেখে ব্যবস্থা নেব।’
উল্লেখ্য, আবরার ফাহাদকে গত ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী বুয়েটের শের-ই বাংলা হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে ডেকে নিয়ে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা করেন। এ ঘটনায় ২৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ। আবরার বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) তড়িৎ প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।