ছাত্র-জনতার সংহতি সমাবেশে ঢাবি প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহসভাপতি (ভিপি) নুর ও তার অনুসারীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ছাত্র-জনতার সংহতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে অংশগ্রহণ করেন ছাত্র, শিক্ষক, আইনজীবী, সাংবাদিক ও বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ। এসময় বক্তারা নুরসহ তার অনুসারীদের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়। একই সঙ্গে হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান। এসময় সমাবেশ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করেন বক্তারা।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেল তিনটার দিকে সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যে ছাত্র-জনতার সংহতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এতে সংহতি প্রকাশ করেন ডাকসুর সাবেক ভিপি আ স ম আব্দুর রব, মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, মাহমুদুর রহমান মান্না, আমান উল্লাহ আমান, ফটো সাংবাদিক শহীদুল আলম, বিশ্ববিদ্যালয় আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, আন্তর্জাতিক বিভাগের অধ্যাপক তানজিম উদ্দীন খান, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস। এছাড়া সংহতি প্রকাশ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
সংহতি সমাবেশে আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে তিন দফা দাবি উত্থাপন করা হয়। সেগুলো হলো- দায়ভার নিয়ে প্রক্টরকে পদত্যাগ করতে হবে, সমস্ত সিসি টিভি ফুটেজ উদ্ধার করতে হবে এবং প্রকাশ করতে হবে; হামলাকারী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দামসহ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতাদের গ্রেফতার এবং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করার আহ্বান জানান।
সংহতি প্রকাশ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক বিভাগের অধ্যাপক তানজিম উদ্দীন বলেন, আমি নিজেও সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছি। শহীদ মিনার থেকে সেই হামলা এখন ডাকসু ভবনে। কয়েকবার মৃত্যুর হুমকি আমিও পেয়েছি। আমার স্ত্রীকে ফোন করে একজন তথাকথিত শিক্ষক মৃত্যুর হুমকি দিয়েছে। তারা এখন বুঝতে পেরেছে জামায়াত-স্বাধীনতাবিরোধী শব্দ মানুষের মধ্যে চাহিদা নাই। তাই চালু করেছে বহিরাগত। এসময় তিনি প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করেন।
আইনবিভাগের শিক্ষক আসিফ নজরুল বলেন, দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ এটাকে সাধুবাদ জানাই। তবে এটা যেন আইওয়াশ না হয়। এটা যেন ক্ষোভকে প্রশমিত করতে অপচেষ্টা না হয়। তিনি বলেন, দেশের স্বার্থে যেকোনো ব্যক্তি প্রশ্ন তোলার অধিকার রাখে। তাই বলে তাদের দমন করার অধিকার কেউ রাখে না।
গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, এই আন্দোলন মর্যাদার, বেঁচে থাকার লড়াই। এই আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। আপনারা সেই দায়িত্ব নিয়েছেন আপনাদের সাধুবাদ জানাচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করার আহ্বান করে তিনি বলেন, ব্যর্থ হলে পদত্যাগ করেন।
ফটোসাংবাদিক শহীদুল আলম বলেন, আপনাদের এই সংগ্রাম চলমান রাখুন। একদিন আপনাদের দেখাদেখি মানুষের ঢল নামবে। সেদিন কেউ ঠেকাতে পারবে না।
ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আখতারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য রাখেন ভুক্তভোগী রাশেদ খান, মশিউর রহমান, আব্দুল্লা হিল বাকী প্রমুখ।