শিক্ষার সব স্তরে নতুন ধারা প্রবর্তন করেছিলেন স্যার আবেদ
ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদ শিক্ষার সব স্তরে নতুন ধারার প্রবর্তন করেছেন। বাংলাদেশের আর্থসামাজিক অবস্থা, গণস্বাস্থ্য সব ক্ষেত্রে তার অবদান ছিল অসামান্য।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোজাফফর আহমেদ মিলনায়তনে জ্ঞানতাপস আব্দুর রাজ্জাক ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘শিক্ষায় স্যার আবেদ: তার চিন্তা, আদর্শ ও কৃতি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
বিশিষ্ট সাংবাদিক ড. রেহমান সোবহানের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ব্র্যাক গভর্নিং বডির চেয়ারপার্সন হোসেন জিল্লুর রহমান, গণস্বাক্ষরতা অভিযানের পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব এডুকেশন এন্ড ডেভেলপমেন্ট এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ড. মঞ্জুর আহমেদ প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য দেন আব্দুর রাজ্জাক ফাউন্ডেশনের পরিচালক ড. আহরার আহমেদ।
সভায় জামিলুর রেজা চৌধুরী বলেন, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালে ধারাবাহিক যোগাযোগের কারণে ফজলে হাসান আবেদের শিক্ষার সঙ্গে পরিচিত হতে পেরেছিলাম। যে কোনো বিষয়ে তিনি বিশ্বের সবচেয়ে বিজ্ঞ ও পণ্ডিত মানুষদের পরামর্শ নিতেন। যার ফলে আমরা দেখি, প্রতিষ্ঠার চার বছরের মধ্যে ব্র্যাকের ‘স্কুল অব পাবলিক হেলথ’ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক গণস্বাস্থ্যে বিশ্বের অন্যতম সেরা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়।
সভাপতির বক্তব্যে ড. রেহমান সোবহান বলেন, আবেদ একজন কাজের মানুষ ছিলেন। তিনি যা করতে চেয়েছিলেন, তা করেছেন। আবেদ মানুষের চিন্তাকে পাঠ্যবই দিয়ে পরিবর্তন করে দেননি, বরং মান রক্ষার সঙ্গে সঙ্গে তাদের কল্পনার মধ্যে নিয়ে গেছেন। শুধু শিক্ষায় নয়, বরং ক্ষুদ্রঋণ, নারীর ক্ষমতায়ন, গণস্বাস্থ্য ইত্যাদি ক্ষেত্রে তিনি অসামান্য অবদান রেখেছেন।
ব্র্যাক গভর্নিং বডির চেয়ারপার্সন হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, উন্নয়ন আমাদের কাছে বহুল পরিচিত একটি শব্দ। কিন্তু উন্নয়ন চিন্তার কেন্দ্রবিন্দুতে মানুষকে রেখে যে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সাজাতে হবে, এটাই ছিল স্যার ফজলে হাসান আবেদের চিন্তার মূলসূত্র।
শিক্ষাক্ষেত্রে স্যার ফজলে হাসান আবেদের চিন্তা তুলে ধরে রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, ১৯৯৩ সালে তিনি গ্রামে গিয়ে কিশোরীদের কথা শুনে ফিরে এসে ব্র্যাকের কিশোর-কিশোরী প্রোগ্রাম চালু করেছিলেন। এমনকি মৃত্যুশয্যাতেই তিনি শিক্ষার কথা বলেছিলেন। নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা যদি তার জীবনাদর্শ ধারণ করে লক্ষ লক্ষ আবেদ তৈরি হয়, তবেই আমাদের সফলতা।
ড. আহরার আহমেদ বলেন, আবেদ ভাইয়ের সাথে আমাদের সম্পর্ক, আত্মার সম্পর্ক। ব্র্যাক প্রতিষ্ঠায় যেমন জ্ঞানতাপস আব্দুর রাজ্জাক ভূমিকা রেখেছিলেন, তেমনি রাজ্জাক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠাতেও স্যার আবেদ ভূমিকা রেখেছিলেন। আমাদের সমাজে যেখানে অন্যকে হেয় করে নিজের ক্ষমতা জাহির করা হয়, সেখানে আবেদ ভাই মানুষের কথা শুনতেন, তাদের মনোযোগ দিতেন।