চাকরিচ্যুতির হুমকিপ্রাপ্ত রাবি স্কুল শিক্ষকের সংবাদ সম্মেলন
অধ্যক্ষের মেয়েকে বিয়ে না করায় চাকরিচ্যুতির হুমকিতে থানায় জিডি করা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্কুলের সেই প্রভাষক এবার সংবাদ সম্মেলন করেছেন। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজশাহী নগরীর একটি রেঁস্তোরায় এ সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।
এর আগে সোমবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) নগরীর মতিহার থানায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুলের অধ্যক্ষ শফিউল আলম ও তার স্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক লায়লা আরজুমান বানুর বিরুদ্ধে হয়রানি ও চাকরিচ্যুত করার হুমকির অভিযোগ এনে সাধারণ ডায়েরি করেন তিনি।
বার্তা২৪.কম-এ ‘অধ্যক্ষের মেয়েকে বিয়ে না করায় শিক্ষককে চাকরিচ্যুতির হুমকি!’ শিরোনামে ১৭ ফেব্রুয়ারি এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ করা হয়। বিষয়টি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
এদিকে, বুধবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে শিক্ষক দুরুল হুদা উল্লেখ করেন, তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগ থেকে সিজিপিএ-৪ এর মধ্যে ৪-ই পেয়ে মাস্টার্স শেষ করেন। পরে ২০১৭ সালে ৫ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাষক পদে যোগদান করেন। কিছুদিন পর প্রভাষক দুরুলকে স্কুলের অধ্যক্ষ শফিউল আলম তার বড় মেয়েকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেন। তবে তাতে রাজি না হয়ে অন্য মেয়েকে বিয়ে করেন দুরুল।
তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে অধ্যক্ষ ও তার স্ত্রী রাবির বর্তমান ছাত্র উপদেষ্টা দু’জনে আমার ওপর নাখোশ হন। কর্মস্থলে নানা কারণে আমাকে চাপে রাখতেন। গত বছর থেকে তার ষষ্ঠ শ্রেণি পড়ুয়া মেয়েকে প্রাইভেট পড়াতে বাধ্য করেন। প্রথম দিকে আমি স্যারের চেম্বারে উনার মেয়েকে পড়াতাম। পরে তিনি বাড়িতে গিয়ে পড়াতে বলেন। তারা যখন সকলে বাড়িতে থাকতেন এবং আমাকে ফোন করতেন তখনই আমি গিয়ে প্রাইভেট পড়িয়ে আসতাম।’
প্রভাষক দুরুল হুদা আরও বলেন, ‘গত বছরের ১৪ অক্টোবর আমি তাদেরকে জানিয়ে দেই, আর প্রাইভেট পড়াতে পারবো না। এর দু’দিন পর অধ্যক্ষ কল করে আমাকে আবার ডাকেন। ১৬ অক্টোবর অধ্যক্ষের চাপে আবার প্রাইভেট পড়াতে যাই। পড়িয়ে বাসায় ফেরার কিছুক্ষণ পরই অধ্যক্ষ আমাকে কল করে ডাকেন। গেলে তিনি বলেন- আমি নাকি তার মেয়ের সাথে অশালীন আচরণ করেছি। তাই স্কুলের চাকরি ছেড়ে বাড়িতে গিয়ে হালচাষ করার নির্দেশ দেন।’
দুরুল বলেন, ঘটনার ৪ দিন পর মতিহার থানায় আমার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১০ ধারায় মামলা করেন। পরে সেই মামলায় আমাকে গ্রেফতার করিয়ে জেলহাজতে পাঠানো হয়। আমি আদালতের মাধ্যমে জামিন নিয়ে বেরিয়ে এলেও তারা আমাকে নানাভাবে হুমকি-ধমকি অব্যাহত রেখেছে। চাকরি ছেড়ে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন মাধ্যমে চাপও দিচ্ছেন।’
এমন পরিস্থিতিতে প্রভাষক দুরুল হুদা নিজের ও পরিবারের জীবন নিয়ে শঙ্কায় দিন পার করছেন উল্লেখ করে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের শাস্তির দাবি জানান।
তবে অভিযোগের বিষয়ে রাবি স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ শফিউল আলমের সঙ্গে মোবাইলে কয়েক দফা যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।