ইবিতে একুশের শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনে বিশৃঙ্খলা

  • ইবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

শহীদ মিনারের বেদিতে হট্টগোল করেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের কর্মকর্তারা/ছবি: বার্তা২৪.কম

শহীদ মিনারের বেদিতে হট্টগোল করেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের কর্মকর্তারা/ছবি: বার্তা২৪.কম

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনকে কেন্দ্র করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২১ ফেব্রুয়ারি) প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনকে কেন্দ্র করে বেদিতে হট্টোগোল সৃষ্টি হয়। এর ফলে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন কিছু সময়ের জন্য বন্ধ থাকে।

ইবি বঙ্গবন্ধু পরিষদের একাংশের নেতাকর্মীরা এ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন বলে প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এরপর একে একে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ, আবাসিক হল, ইবি শাখা ছাত্রলীগসহ অন্যান্য সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।

বিজ্ঞাপন

জানা যায়, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১২টায় প্রশাসন ভবনের সামনে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন উর রশিদ আসকারীর নেতৃত্বে শোক র‌্যালি বের হয়। র‌্যালি শেষে প্রশাসনের তিন কর্তাব্যক্তির শ্রদ্ধা জানানোর পর একে একে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, কর্মকর্তা সমিতি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ইবি শাখা, বিভিন্ন আবাসিক হল, বিভাগ, বিভিন্ন সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করে।

শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের জন্য বঙ্গবন্ধু পরিষদ নির্বাচন কমিশন ও অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের নাম ঘোষণা করায় তাৎক্ষণিক বেদিতে হট্টগোল শুরু করেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের অপর অংশের সভাপতি অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আরফিন, কর্মকর্তা সমিতির একাংশের সভাপতি শামছুল ইসলাম জোহা ও সাধারণ সম্পাদক মীর মোর্শেদুর রহমান।

বিজ্ঞাপন

এ সময় সেখানে চরম বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয় এবং শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন কিছু সময় বন্ধ থাকে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শাহিনুর রহমান ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেন। এসময় তারা উপ-উপাচার্যের সঙ্গে উচ্চবাচ্য করেন। এরপর তিনি বিষয়টি নিয়ে পরবর্তীতে সমাধানের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু পরিষদের একাংশের সভাপতি অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘বর্তমান প্রশাসন প্রতিটা প্রগতিশীল সংগঠনের মধ্যে একটা বিভাজন তৈরি করে ফেলছে। বঙ্গবন্ধু পরিষদের পরিবর্তে ‘বঙ্গবন্ধু পরিষদ নির্বাচন কমিশন’ এর নাম ডাকবে কেন? এটা ছিল আমাদের প্রশ্ন। এর বাইরে কিছু না।’

এ বিষয়ে কর্মকর্তা সমিতির একাংশের সভাপতি মীর মোর্শেদুর রহমান বলেন, ‘আমরা কর্মকর্তা সমিতি মনে করি, ভিসি স্যার তার জায়গা থেকে নিরপেক্ষতা হারিয়ে ফেলছেন। এজন্য তিনি জামাত এবং বিএনপির সহায়তা নিচ্ছেন। আশা করি তিনি তার জায়গা থেকে ফিরে আসবেন।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাপলা ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান বলেন, ‘অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ থাকতেই পারে। তবে বেদিতে শহীদদের শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনে এরকম পরিস্থিতি না হওয়াই সমীচীন ছিল। আমার প্রত্যাশা বাস্তবতা, সহনশীলতা ও প্রগতিশীলতাই সবকিছুর সমাধানের পথ দেখাবে।’

এদিকে বঙ্গবন্ধু পরিষদের একাংশ সম্প্রতি শাপলা ফোরাম ও শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে পরাজিত হয়। নির্বাচনে প্রগতিশীল প্যানেলকে হারাতে জামাতকে ভোট দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। এছাড়া ক্যাম্পাসের সার্বিক উন্নয়নে বর্তমান প্রশাসন প্রশংসিত হলেও কিছু শিক্ষক-কর্মকর্তা ক্যাম্পাস অস্থির করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে করে সাধারণ শিক্ষার্থীরাও অনেকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।