হলুদ চেরি টমেটোর জাত উদ্ভাবন, ফলন দ্বিগুণ

  • শেকৃবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

উদ্ভাবিত নতুন জাত হলুদ চেরি টমেটোর ফলন

উদ্ভাবিত নতুন জাত হলুদ চেরি টমেটোর ফলন

বাংলাদেশের কৃষিক্ষেত্রে প্রথমবারের মতো উদ্ভাবিত হল উচ্চ ফলনশীল অপি জাতের হলুদ চেরি টমেটো। যার ফলন মিলবে ছয় মাস পর্যন্ত এবং ফলন পাওয়া যাবে পূর্বের তুলনায় দিগুণ। এর ফলে দেশের ফসলে যুক্ত হয়েছে নতুন এক মাত্রা।

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. আ ফ ম জামাল উদ্দিনের নেতৃত্বে দীর্ঘ ১৩ বছর গবেষণার সফলতার ফলস্বরূপ উদ্ভাবিত হয়েছে হলুদ চেরি টমেটোর নতুন এই জাত। এছাড়া চেরি টমেটো অপি (ওপেন পলিনেটেড) জাতের হওয়ায় কৃষক নিজেই বীজ উৎপাদন করতে পারবেন।

বিজ্ঞাপন

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ফসলে নতুন এ জাতের টমেটোর নাম যোগ হওয়ায় একটা ভিন্নমাত্রা তৈরি হলো। দেশে প্রচলিত অন্যান্য জাতের চেয়ে নতুন উদ্ভাবিত হলুদ চেরি টমেটোর ফলনও বেশি আবার স্বাদে চমৎকার।

টমেটোর নতুন এ জাত অবমুক্ত হওয়ার প্রতিক্রিয়ায় অধ্যাপক ড. আ ফ ম জামাল উদ্দিন বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘আমি খুবই খুশি ও সন্তুষ্ট। এই সফলতা দীর্ঘ পরিশ্রমের ফল। শিক্ষার্থীরাও অনেক পরিশ্রম করেছে, আমার সঙ্গে কাজ করেছে। তারাও আজ সফল।’

বিজ্ঞাপন

২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে চেরি টমেটো নামে কৃষিমন্ত্রণালয়ের অধীনে জাতীয় বীজ বোর্ড থেকে অনুমোদন দেওয়া হয়। জাতটির উৎস দেশ হলো জাপান।

অধ্যাপক জামাল উদ্দিন আরও বলেন, ‘আমাদের দেশের আবহাওয়ায় উপযোগী হলুদ চেরি টমেটোকে আমরা বলছি গোল্ডেন পূর্ণা অর্থাৎ ফলটি একেবারে হলুদ নয় অনেকটা গোল্ডেন রঙের। যখন প্রাপ্ত বয়স্ক হয় তখন একেবারে পূর্ণ (চারপাশ সমান) হয়ে যায়।’

শেকৃবি উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. আ ফ ম জামাল উদ্দিন

তিনি আরও বলেন, ‘এই জাতটির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো ফল পাকবে গাছ বড় হবে, আবার ফল ধরবে। একসঙ্গে সব ফল পাকবে না। ফলে কৃষকের সব ফল একসঙ্গে সংগ্রহ করতে হবে না। এতে তারা ভালো লাভবান হবেন।’

অপি জাতের হলুদ চেরি টমেটোর উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য

১. গাছ প্রতি শাখা/আঁটি ৭-৮টা।
২. প্রতি শাখা/আঁটিতে ২৪০-২৬০টি ফল হয়।
৩. প্রতি গাছে ফলন ৭-৮ কেজি।
৪. প্রতিটি ফলের ওজন ৫-৬ গ্রাম।
৫. ধরণ: ইনডিটারমিনেট, ফলের রঙ: রাউন্ডেড ইয়েলো

অধ্যাপক জামাল উদ্দিন বলেন, ‘হলুদ চেরি টমেটোর সবথেকে লাভজনক দিক হলো দীর্ঘদিন ফল পাওয়া যাবে। দেশে প্রচলিত টমেটোর চেয়ে দ্বিগুণ ফলন হবে। সহজেই চাষিরা বীজ তৈরি করে পরবর্তীতে উৎপাদন করতে পারবেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘চারা রোপণের ৩০ দিন পর থেকে ফলন মিলবে এবং প্রতি সাতদিন পরপর ফুল আসবে ও ফল ধরবে। এভাবে ছয়মাস ফল পাওয়া যাবে। আর দেশে চাষকরা টমেটোর চেয়ে হেক্টর প্রতি দ্বিগুণ ফলন মিলবে। প্রতি হেক্টর জমিতে চাষ করে ১৬০ থেকে ১৭০ টন চেরি টমেটো পাওয়া যাবে।’

ভিটামিন এ সমৃদ্ধ চেরি টমেটোতে প্রচুর পুষ্টিগুণ রয়েছে বলেও জানান তিনি।

চেরি টমেটোর বীজ সংগ্রহের বিষয়ে অধ্যাপক জামাল উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের শেকৃবির উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করলে আমরা প্রাথমিকভাবে বীজ দিয়ে দিব।’